ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রেক্ষাগৃহ ও মাল্টিপ্লেক্সগুলোয় বলিউড আর দক্ষিণের ছবি প্রদর্শন ক্রমেই বাড়ছে। এ কারণে হুমকির মুখে পড়েছে বাংলা ছবি। তাই বাংলা ছবিকে রক্ষা করার জন্য নতুন উদ্যোগ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ঘোষণা অনুযায়ী, দিনের গুরুত্বপূর্ণ সময়, অর্থাৎ দুপুর ১২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মাল্টিপ্লেক্সের অন্তত একটি স্ক্রিনে অবশ্যই বাংলা ছবি দেখাতে হবে।
এই নিয়ম শুধু মাল্টিপ্লেক্সের ক্ষেত্রেই নয়, রাজ্যের সিঙ্গেল স্ক্রিনগুলোর জন্যও। এই প্রেক্ষাগৃহগুলোকে দুপুর ১২টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে অন্তত একবার অবশ্যই বাংলা ছবির প্রদর্শনী করতে হবে।
এরই মধ্যে রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর এই নোটিশ জারি করেছে। যেসব প্রতিষ্ঠান এই আদেশ মানবে না, সেগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এই ঘোষণার বাইরে থাকছে পাহাড় এলাকা, অর্থাৎ জিটিএর (গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাগুলো।
কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গে হাতে গোনা কিছু সিনেমা হলে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বাংলা ছবি প্রদর্শন করা হয়। এর কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট প্রেক্ষাগৃহগুলোর মালিকেরা জানিয়েছেন, বাংলা ছবির দর্শক নেই, তাই বাধ্য হয়ে তাঁদের বলিউড ও দক্ষিণের ছবির প্রদর্শনী করতে হচ্ছে। সিনেমা হলের ব্যবসা টিকিয়ে রাখার জন্যই তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু বাংলা ছবির ভবিষ্যতের কথা ভেবে পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকার এবার কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
বাংলা চলচ্চিত্রের হাল ফেরানোর জন্য পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে খুশি সংশ্লিষ্টরা। অনেকেই এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাঁদের সবার মতে, এর ফলে ভারতের বাংলা চলচ্চিত্রের সুদিন ফিরবে।
জানা গেছে, বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিবাচক ভবিষ্যৎ তৈরির জন্য পশ্চিমবঙ্গে এবার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, এর আগে একই ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয় চেন্নাইতে। সেখানে চলচ্চিত্র প্রদর্শন আইন কঠোর করার ফলে দক্ষিণের চলচ্চিত্র এখন তার সুফল ভোগ করছে। একসময় ভারতের দক্ষিণের প্রেক্ষাগৃহগুলো হিন্দি ছবির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল। কিন্তু এখন দক্ষিণের সিনেমা শুধু ভারতে নয়, এর সাফল্য ছড়িয়ে পড়েছে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও।