পাল্টা হানাদারি নয়। শরীরের কোনও ক্ষতিও নয়। বরং নানান রোগ থেকে বাঁচাতে পারে প্রোবায়োটিক। দেহে ভাল ব্যাক্টিরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি করে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা গড়ে তুলতে পারে প্রোবায়োটিক। এমনই দাবি চিকিৎসক-বিশেষজ্ঞদের। কিন্তু অনেকে যখন-তখন মুড়িমুড়কির মতো অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহারে যত স্বচ্ছন্দ, প্রোবায়োটিকের গুণাগুণ সম্পর্কে তত সচেতন নন।
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, মানুষের দেহে ভাল ও মন্দ, দু’ধরনের ব্যাক্টিরিয়াই রয়েছে। মন্দ ব্যাক্টিরিয়া দমনে অ্যান্টিবায়োটিকের কথা জানা থাকলেও অনেকেই প্রোবায়োটিকের কার্যকারিতা জানেন না। এই বিষয়ে সচেতন করতে নিউ টাউনে অনুষ্ঠিত হল দু’দিনের আলোচনাসভা। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল নির্মলকুমার গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অ্যান্টিবায়োটিক তখনই দেওয়া উচিত, যখন অ্যান্টিবায়োটিক জরুরি। কিন্তু একটা সময়ের পরে শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না।’’
এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, সুস্বাস্থ্যের আশ্চর্য প্রদীপ হাতে ধরিয়ে দিতে পারে প্রোবায়োটিক। কী ভাবে? বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, প্রোবায়োটিক হল এমন কিছু জৈব পদার্থ, যা শরীরে উপকারী ব্যাক্টিরিয়ার সংখ্যা বাড়ায়। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এন্টেরিক ডিজিজেস বা নাইসেড-এর অধিকর্তা শান্তা দত্ত জানান, শরীরে খারাপ ব্যাক্টিরিয়ার সংখ্যা বাড়লে আন্ত্রিক রোগ হতে পারে। পাঁচ বছরের নীচে আন্ত্রিকে আক্রান্ত শিশুর ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, প্রোবায়োটিকের ব্যবহার ১৮ শতাংশ আন্ত্রিক কমানোর ক্ষমতা রাখে। আন্ত্রিকের মতো সংক্রমণ তো বটেই, স্ত্রীরোগ বা স্নায়ুরোগের ক্ষেত্রেও প্রোবায়োটিক কার্যকর বলে রিপোর্টে জানা গিয়েছে।
শান্তাদেবী বলেন, ‘‘রোগ প্রতিরোধের জন্য খাদ্যাভাসে বদল আনতে হবে। ‘‘ভাজাভুজি কমিয়ে বাড়িতে পাতা টক দই, ইডলি, দোসা, সয়াবিন খাওয়া দরকার।’’
শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে প্রোবায়েটিকের গুরুত্বের কথা বলেন নির্মলবাবু। তিনি জানান, স্বাভাবিক প্রসব হলে জন্মানোর সময়েই মায়ের শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে প্রোবায়োটিক নবজাতকের দেহে আসে। কিন্তু অস্ত্রোপচার হলে নবজাতক সেই সম্পদ থেকে বঞ্চিত হয়। এই ধরনের শিশুর অ্যালার্জি, সংক্রমণ বেশি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ ক্ষেত্রে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চাই প্রোবায়োটিকের উপযুক্ত ব্যবহার।