চুল পড়া কমাবো কী করে , এ নিয়ে ভাবতে ভাবতেই দেখা গেল সব চুড়ে পড়ে শেষ। কিন্তু এত ভাবার আগে যদি সাবধান হয়ে যান তবে আর আপনাকে গুগলে চুল পড়া কমাবো কী করে লিখে সার্চ করতে হতো না। এখানে যে টিপসগুলো দিচ্ছি সেগুলো কোনও টোটকা কথাবার্তা বা কবিরাজি চিকিৎসা নয়। চুল পড়া কমাতে চাইলে কোন পথে আগাবেন সেটাই বলছি এখন।
চুল পড়া কমাবো কী করে
প্রথমেই চুলে কী কী মাখতে হবে সেটার লিস্ট করতে যাবেন না। পেঁয়াজের রস, ডাল বাটা, রসুন বাটা, পান্তা ভাত, এসব হিজিবিজি মাথায় ঘষার আগে কারণ জেনে নিন। কেন চুল পড়ে? কেন চুল ঝরে যাচ্ছে প্রতিদিন? আপনার মা-বাবা বা চাচা বা ভাই বোনরাও কি একই সমস্যা আক্রান্ত? সমস্যা যদি বংশগত হয়, তবে সত্যি বলতে কি আপনার আর করার কিছু নেই। চুল পড়াটাকে জীবনের স্বাভাবিক অংশ বলে মেনে নিন। অহেতুক এটা সেটা মেখে সময় নষ্ট ও হতাশ হতে যাবেন না।
যদি বংশগত না হয় তবে পরীক্ষা করুন মাথার খুলি তথা স্কাল্প। স্কাল্পে যদি ছোপ ছোপ দাগ, বা ফাংগাল ইনফেকশন থাকে তবে জটলা ধরে চুল পড়বে। সেটার জন্য কবিরাজি বাদ দিয়ে ডাক্তারের কাছে চলে যান। কারণ পেঁয়াজ বাটা বা মেহেদি বাটা যেটাই লাগান না কেন, সেটা দীর্ঘমেয়াদি ও একবার ছত্রাক সংক্রমণ জেঁকে বসলে পরে আর করার কিছু থাকে না। তবে ডাক্তাররা কিছু ছত্রাকনাশক (যেমন বায়োডারমা) শ্যাম্পু, সাবান বা ওষুধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন, যেটা কাজ শুরু করবে দ্রুত। ঘরে বসে সময় যত নষ্ট করবেন, তত বেশি চুল পড়বে। আর মনে রাখবেন চুল হলো সময়ের মতো, একবার ঝরলে আর ফিরে পাওয়া যায় না।
মাথা পরিষ্কার রাখুন। সপ্তাহে ভালামানের শ্যাম্পু দিয়ে দুদিন মাথা পরিষ্কার করুন। ভেজালের এই জগতে আগে সময় নিয়ে বের করুন কে বা কারা উন্নতমানের খাঁটি শ্যাম্পু বাইরে থেকে আমদানি করছে। কারণ দেশভর্তি এখন ভেজাল। ভেজাল শ্যাম্পু দিয়ে চুলের আঠা ভাব দূর হলেও সেটা চুলের স্বাস্থ্যের তেরটা বাজাতে পারে।
চুল একটা দুটো পড়া স্বাভাবিক। তাই চুল পড়া কমাবো কী করে এটা ভেবে বেশি টেনশন করবেন না। টেনশন করলে এক ধরনের হরমোন বের হয় শরীরে। যা চুল পড়া থেকে শুরু করে আরও অনেক ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
ছেলেদের বেলায় অনেক সময় চুল বড় হলেই পড়তে থাকে বেশি। তারা ঝটপট সেলুনে গিয়ে চুল কেটে আসুন। কারণ চুল কেটে ফেললে অনেক সময় চুলের ওপর বাড়তি প্রেশার (ভিটামিনের) কমে। তখনও চুল পড়া কমে।
মেয়েদের ক্ষেত্রেও চুলের আগা কেটে খানিকটা ছোট রাখলে চুল পড়া কমে আসে। কারণ যত লম্বা চুল, তত বেশি পুষ্টির যোগান দিতে হয়। তাতে ঘাটতি পড়লেই চুল পড়ে।
ঘুমানোর সময় মেয়েরা চুল বেঁধে ঘুমালেও চুল পড়া কমবে।
নিয়মিত খাঁটি নারিকেল তেল ব্যবহার করুন। এটা হলো চুলের খাবার। খাবার দিলে যে কারওরই গোড়া হবে মজবুত।
মাঝে মাঝে হালকা ভাবে চুল আঁচড়ান। এতে মাথার রক্ত চলাচল বাড়বে। তবে আঁচড়ানোর সময় টানা হেঁচড়া করবেন না।
বিশেষ কোনও অ্যান্টিবায়োটিক বা ক্যানসারের চিকিৎসাতেও চুল পড়ে। তখন সেটা মেনে নিন। চুল মানেই আপনার জীবন না।
মাঝে মাঝে চুলে টক দই, পেঁয়াজের রস এসব লাগাতে পারেন। মেহেদিও এক্ষেত্রে ভালো। এগুলো চুলে পুষ্টি যোগাবে। তবে এগুলোকে যাদুমন্ত্র ভাববেন না। তাই আবারও বলছি, চুল পড়া কমাবো কী করে এমন প্রশ্ন মাথায় এলে আগে একজন ডারমাটোলজিস্ট বা চুল বিশেষজ্ঞের পরামর্শই নিন।