জরায়ু হল জীবনদান, পুষ্টি, সুরক্ষা এবং টিকিয়ে রাখার জন্য নারীদের শক্তিকেন্দ্র। জরায়ু এমন একটি অঙ্গ যাকে ঘিরে ঋতুস্রাব থেকে মেনোপজ, গর্ভাবস্থা থেকে প্রসব পর্যন্ত অনেক কিছুই ঘটে থাকে। তাই জরায়ুর রোগের লক্ষণ বুঝে নেওয়া খুব জরুরি।
বর্তমানে অধিকাংশ নারীরাই কোনো না কোনো জরায়ুর সমস্যায় ভুগে থাকেন। তবে তারা জরায়ুর রোগের লক্ষণ বুঝতে পারেন না। নারীদের রোগগুলোর মধ্যে জরায়ুতে সমস্যা বেশ কমন একটি রোগ। কিছু সাধারণ জরায়ুর সমস্যার মধ্যে রয়েছে জরায়ু ফাইব্রয়েড, এন্ডোমেট্রিওসিস, জরায়ু প্রোল্যাপস এবং জরায়ু যক্ষ্মা।
জরায়ুতে সমস্যা দেখা দিলে যতদ্রুত সম্ভব চিকিৎসা নেয়া উচিৎ। জরায়ুতে কোনো সমস্যা হলে আমাদের শরীর কিছু ইঙ্গিত দিয়ে থাকে। এগুলো দেখেই ধরে নেয়া যায় যে আমাদের জরায়ু ভালো নেই। এরকম কিছু জরায়ুর রোগের লক্ষণ নিয়েই এখানে আলোচনা করা হলো।
জরায়ুর রোগের লক্ষণ
- জরায়ুর অঞ্চলে ব্যথা
- মাসিকের সময় অস্বাভাবিক বা ভারী রক্তপাত
- অনিয়মিত মাসিক চক্র
- অস্বাভাবিক যোনি স্রাব
- পেলভিস, তলপেট বা মলদ্বারে ব্যথা
- মাসিকের সময় অতিরিক্ত ব্যাথা
- প্রস্রাব বৃদ্ধি পাওয়া
- সহবাসের সময় ব্যথা
- সহবাসের পর রক্তপাত
- দীর্ঘায়িত মাসিক
- পেট ফুলে যাওয়া
- ঘন ঘন কোষ্ঠকাঠিন্য এবং মলত্যাগের সময় অস্বস্তি
- বারবার মূত্রাশয়ে সংক্রমণ দেখা দেয়া
- অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করা
- জ্বর
জরায়ুর রোগের এসব লক্ষণ প্রকাশ পেলে দেরি না করে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে সঠিক চিকিৎসা নেওয়ার চেষ্টা করবেন। এবার চলুন কিছু সাধারণ কারণ জেনে নেয়া যাক যার ফলে জরায়ুতে সমস্যাগুলো হয়ে থাকে।
- এন্ডোমেট্রিওসিস : জরায়ু তিন স্তর বিশিষ্ট হয়। এর মধ্যে একটি স্তর হচ্ছে এন্ডোমেট্রিয়াম। এন্ডোমেট্রিওসিসে এই আস্তরণটি বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং ডিম্বাশয়, ফ্যালোপিয়ান টিউব, অন্ত্র এবং এমনকি মূত্রাশয় পর্যন্ত ও বৃদ্ধি পেতে পারে । এটি গুরুতর ব্যথার কারণ হতে পারে, বিশেষ করে সহবাস এবং মাসিকের সময়। এই সমস্যাটি বন্ধ্যাত্বের কারণও হতে পারে।
- অ্যাডেনোমায়োসিস : এই অবস্থায় এন্ডোমেট্রিয়াল টিস্যু জরায়ুর দেয়ালের মধ্য দিয়ে বৃদ্ধি পেতে থাকে। এটি জরায়ুর একটি নির্দিষ্ট এলাকায় হতে পারে বা এমনকি পুরো জরায়ু জুড়েই হতে পারে। সাধারণত পিরিয়ডের সময় তীব্র ক্র্যাম্প, পিরিয়ডের সময় প্রবল রক্ত প্রবাহ, পেলভিক এরিয়ায় ফোলাভাব এই সমস্যার কারণে হয়ে থাকে।
- জরায়ু ফাইব্রয়েড – এটি একটি বা একাধিক টিউমার যা জরায়ুতে বৃদ্ধিলাভ করে। সাধারণত উচ্চ ইস্ট্রোজেন ফাইব্রয়েড বৃদ্ধির একটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে।
জরায়ুর রোগের লক্ষণ নিয়ে ডাক্তারদের পরামর্শক্রমে লিখেছেন সায়মা তাসনিম।