Monday, December 23
Shadow

দেশের সেরা নারী মডেল হয়েছেন শিরিন শিলা

শিরিন শিলা

দেশের সেরা নারী মডেল হয়েছেন শিরিন শিলা

দেশের সেরা নারী মডেল হয়েছেন শিরিন শিলা । গতকাল শেষ হওয়া স্যান্ডালিনা প্রেজেন্টস ২০১৯ এশিয়া মডেল ফেস্টিভ্যাল ফেস অব বাংলাদেশ প্রতিযোগিতায় নারীদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তিনি। আগামী ১৩ মে ২০১৯ এশিয়া মডেল ফেস্টিভ্যালে যোগ দিতে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে যাচ্ছেন তিনি ও ফেস অব বাংলাদেশে বিজয়ী বাকি চার মডেল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী শিলার গ্রামের বাড়ি ঠাকুরাগাঁও। প্রথম আলোকে তিনি জানালেন তাঁর পথচলা ও ভবিষ্যৎ ভাবনা নিয়ে।

 

প্রতিযোগিতায় সেরা হলেন। বাড়ির মানুষদের প্রতিক্রিয়া কী?
আমার পরিবার বা আশপাশের কেউ মিডিয়ায় কাজ করে না। একজন মেয়ে হয়েও আমি যে এই অঙ্গনে কাজ করে যাচ্ছি, হঠাৎ করে বড় একটি সাফল্যও পেয়ে গেলাম, এতে মা-বাবা হতবাক। তাঁরা ভেবেই পান না যে আমি একা কীভাবে এ কাজগুলো করলাম। যদিও তাঁরা আমাকে খুব সাপোর্ট দেন। কিন্তু তাঁরা কখনো ভাবতেই পারেনি যে আমি এত দূর পৌঁছাতে পারব।

ফেস অব বাংলাদেশ গালা রাউন্ডের র‍্যাম্পে শিরিন শিলা ।
মা তো গতকালকের অনুষ্ঠানে যেতে পারেননি। পত্রিকায় ছবি দেখে তিনি খুব আফসোস করলেন। বাবার তো যাওয়ার সুযোগই ছিল না। তিনি ডিফেন্সে কাজ করেন, ময়মনসিংহে পোস্টিং। বাবা দেশাত্মবোধসম্পন্ন মানুষ। তাঁর মেয়ে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে দক্ষিণ কোরিয়া যাবে, এটা তাঁর জন্য অনেক গর্বের।

দেশের সেরা নারী মডেল হয়েছেন শিরিন শিলা

আর বন্ধুরা?
ভার্সিটিতে নাকি ভালো বন্ধু পাওয়া যায় না। কিন্তু আমার বন্ধুভাগ্য খুব ভালো। অনেক ভালো ভালো বন্ধু পেয়েছি আমি। এ প্রতিযোগিতার প্রতিটি পর্বে তারা আমাকে খুব সাপোর্ট করেছে। আমার এই অর্জনে আমার চেয়ে তাঁরা বেশি রোমাঞ্চিত। গতকালের অনুষ্ঠানে আমার পরিবারের সদস্য হিসেবে তাদের অনেকেই উপস্থিত ছিল।

মডেলিংকে পেশা হিসেবে নিতে চেয়েছিলেন কবে, কেন?
ছোটবেলায় মনে হতো মানুষ এত সুন্দর করে সেজে পুতুলের মতো দাঁড়িয়ে থাকে! ইচ্ছে ছিল ঠিক ওইভাবে মানুষ আমাকেও দেখুক। তারা বলুক, মেয়েটা এত সুন্দর কেন! তখন তো মডেলিংয়ের বিষয়গুলো বুঝতাম না। একটু বড় হয়ে যাওয়ার পর পড়ালেখা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর মা-বাবা পড়ালেখার বিষয়ে চাপ দেওয়া বন্ধ করে দিলেন। আমি ভাবলাম এখন তাহলে ছোটবেলার স্বপ্নটা পূরণের চেষ্টা করে দেখি। পড়ালেখার পাশাপাশি এখন আমি অনেক কিছুই করতে পারি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকেই মডেলিং করতে শুরু করি।

আপনি ব্রেক পেলেন কোন কাজের মাধ্যমে?
অনেক প্রতিষ্ঠানের পণ্যের মডেল হয়েছি। কিন্তু ‘বাংলাদেশ ফ্যাশন উইক’-এর মধ্য দিয়েই আমার যাত্রা শুরু। পরিচিতি ও আত্মবিশ্বাস দুটোই বেড়ে যায় ওই অনুষ্ঠানটির মাধ্যমে।

ফেস অব বাংলাদেশে নারী চ্যাম্পিয়ন শিরিন শিলা। ছবি: আবদুস সালাম
‘ফেস অব বাংলাদেশ’-এ যুক্ত হলেন কীভাবে?
অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেখেছিলাম। দেখলাম বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এমন আয়োজন করা হয়েছে। মনে হলো এখানে আমার যাওয়া উচিত। অনলাইনে নিবন্ধন করে ফেললাম। আমার আত্মবিশ্বাস ছিল, এখানে আমি কিছু একটা করতে পারব।

ফেস অব বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী ছিল?
ওজন কমানো। এটাই ছিল আমার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আমি সেটা করতে পারিনি। আমাকে এখনো প্রায় ৮ কেজি ওজন কমাতে হবে।

এত কিছু করতে পারলেন, ওজন কমাতে পারলেন না কেন?
কারণ সব বাঙালির মতো আমিও ভাত খেতে খুব পছন্দ করি। রাতে বাসায় ফেরার পর মায়ের রান্না তরকারি দিয়ে ভাত না খেয়ে থাকতে পারি না। আমার মায়ের রান্না ভীষণ মজার।

আপনার উচ্চতা (৫ ফুট ১১ ইঞ্চি) নিয়ে বান্ধবীরা ঈর্ষা করত?
বান্ধবীরা ঈর্ষা করত না, মজা নিত। উচ্চতার কারণে আমাকে তালগাছ বলে খ্যাপাত।

এখন স্বপ্ন কী?
নতুন করে স্বপ্ন বোনার চেষ্টা করছি।

শিরিন শিলাসহ ফেস অব বাংলাদেশ বিজয়ী বাকি চার মডেল সিউলে যাবেন। ছবি: আবদুস সালাম
অভিনয়ের ইচ্ছে আছে?
না। আমি একজন মডেল। মডেলিং আর অভিনয় দুটো ভিন্ন জায়গা। একজন মানুষের পক্ষে দুটো জায়গায় কাজ করা সম্ভব নয়।

আপনার রোল মডেল কে?
বাংলাদেশে আজরা মাহমুদ আপু, দেশের বাইরে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া।

মডেলিংয়ের পাশাপাশি আর কি কিছু করতে চান?
মডেলিংয়ের পাশাপাশি আমি শিক্ষকতা করতে চাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই ভেবেছি শিক্ষকতা করব।

যারা মডেল হতে চায়, তাদের জন্য কী পরামর্শ দেবেন?
সব সময় সৎ থাকতে হবে, নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে। আর যে যে ধর্মের, তাকে সেই ধর্মের সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে। মডেল এমন একজন মানুষ, যাকে সবাই অনুসরণ করবে। সুতরাং তাকে সব দিক থেকে নিখুঁত হওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!