class="post-template-default single single-post postid-14651 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

আহারে মা …আমাদের মা ..

আহারে মা ...আমাদের মা ..মায়েদের মুখে মুরগির রান কিংবা ব্রেস্ট পিস কখনোই মজার না, তাঁদের মুখে মজা লাগে মুরগির গলা, পা, পাখনা। মাছের মাঝামাঝি পিস কিংবা মাথা খাইলে নাকি তাঁদের মাতাল মাতাল লাগে, কাঁটাওয়ালা লেজ পিসটাই মায়ের জন্য পারফেক্ট। গরুর মাংসের তরকারির ঝোল আর এক টুকরা আলু দিয়েই পেট ভরে খেতে পারে আমাদের মায়েরা, কিন্তু এক টুকরো মাংস পাতে নিলেই তাঁদের খাবার বেশি হয়ে যায়। আলুর চপ, বেগুনি, পিঁয়াজু এসব ভাজতে গিয়ে যেই দু’এক পিস একটু বেশি ভাজা হয়ে যায় সেই পিসগুলো খাওয়ার জন্য মায়েরা বদ্ধ পরিকর, পারফেক্ট ভাজা পিসগুলো তাদের রুচিতে ঠিক যায় না। বাটি ভর্তি তরকারি তুলে রাখে নিজ হাতেই, কিন্তু সেখান থেকে এক চামচ ঝোল নিতে তাঁদের মন চায়না। তাঁরা, পাতিলের পোড়া অংশটুকুতে ভাত নিয়ে খেয়ে ফেলে।

খাবারে এমন সব অদ্ভুত রুচি নিয়েই আমাদের মায়েরা পার করে দিচ্ছে বছরের পর বছর। আমি আগে বুঝতাম না, মায়েরা এমন করে কেন? আমি বুঝতাম না, মায়েরা দিব্যি খাবার দাবার নিয়ে মিথ্যে রুচির প্রকাশ ঘটাচ্ছে আমাদের কাছে। আমি বুঝতাম না, স্বামী সন্তানকে সেরা খাবার খাওয়াতে গিয়ে আমাদের মায়েরা ওই পোড়া সবজি, মুরগির পা, মাছের লেজ গোগ্রাসে গিলছে দিনের পর দিন, তাও তাদের অভিযোগ নেই, লোভ নেই, আক্ষেপ নেই। ভালোবাসার মানুষগুলোকে তৃপ্তি নিয়ে খাওয়াচ্ছে এই যেনো তাঁদের নিকট স্বর্গীয় সুখ। কিন্তু যখন মায়েদের এই ছলাকলা বুঝতে পারলাম তখন সন্তান হিসেবে বুকের ভেতরটা হাহাকার করে উঠলো।

একদিন আমার প্লেটে তুলে দেয়া মুরগির রানটা তুলে মায়ের প্লেটে দিলা। তাঁর প্লেট থেকে তুলে নিলাম পাখনা, আর গলা। মা কোনভাবেই এগুলো খেতে দিবেন না, আমার জোরজুলুমের চাপে বলেই বসলেন, “এগুলা কি খাবি, মাংস আছে এতে?” আমি বললাম, তাইলে তুমি খাও ক্যান? তাঁর বয়স হইছে, মাংস না খেলেও নাকি সমস্যা নাই। আমিও জেদ ধরে বললাম, “হয় মুরগির রান খাবা, না হলে তরকারি সব পাতিল ধরে ফেলে দিব”। মা খেলেন। সেদিনের পর থেকে মুরগির রানটা মায়ের জন্যই রেখে দেই।

আমাদের মায়েদের কিছুই লাগেনা। তাদের ভালো শাড়ি লাগেনা, খাবার লাগেনা, ঘুম লাগেনা, বিশ্রাম লাগেনা। কিন্তু এই লাগেনা লাগেনা ভাবটা যদি আমাদের সন্তানদের মাঝে দেখে তাহলেই হইছে কাম। খুন্তি, ঝাঁড়ু, চিরুনি, বেলুন যেইটা পায় হাতের কাছে সেইটা দিয়াই ইচ্ছামত মাইর দিতে ভুলে না। আর চলে স্বীকারোক্তি, “খাবি?? ঘুমাবি?? পরবি?? আমার মুখের উপরে আর না করবি?” আর সন্তান বড় হলে তখন মারতে মন চায় না, কিন্তু চিন্তার রাজ্যে বুদ হয়ে যায়, “কি যে হইল ওর, খায় না…ঘুমায় না…ভালো একটা কাপড় পরেনা…”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!