৫০-এর পর বিবাহবিচ্ছেদ: জীবন, সম্পর্ক ও মানসিক স্বাস্থ্যের নতুন অধ্যায় - Mati News
Friday, December 5

৫০-এর পর বিবাহবিচ্ছেদ: জীবন, সম্পর্ক ও মানসিক স্বাস্থ্যের নতুন অধ্যায়

grey divorce

বিল এবং মেলিন্ডা গেটস, হিউ এবং ডেবোরাহ জ্যাকম্যান, আর সম্প্রতি এ. আর. রহমান এবং সাইরা বানু। কেন ৫০-এর পরের “গ্রে ডিভোর্স” আকস্মিকভাবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে?

গ্রে ডিভোর্স কী?
৫০ বছর বা তার বেশি বয়সে হওয়া বিবাহবিচ্ছেদকে “গ্রে ডিভোর্স” বলা হয়। এটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেড়েছে, যার কারণ দীর্ঘায়ু, বিবাহের প্রতি বদলে যাওয়া প্রত্যাশা এবং আর্থিক স্বাধীনতার বৃদ্ধি। এসব বিবাহবিচ্ছেদ অনেক সময় পরিবার ও মানসিক স্বাস্থ্যে বড় পরিবর্তন আনে।

বৃদ্ধির কারণ ও প্রবণতা

অনেক দম্পতির জন্য সন্তানরা সম্পর্কের কেন্দ্রে থাকে। তবে, সন্তানরা যখন ঘর ছেড়ে যায়, তখন “এম্পটি নেস্ট সিনড্রোম” দেখা দেয়। তারা উপলব্ধি করে যে তাদের সম্পর্কের মধ্যে আর কোনো যোগসূত্র নেই।

বিশেষ করে নারীদের মধ্যে আর্থিক স্বাধীনতা এবং জীবনের নতুন লক্ষ্য খুঁজে নেওয়ার প্রবণতা এই প্রবৃদ্ধির একটি বড় কারণ। তারা প্রায়শই প্রশ্ন করে, “একটি খারাপ সম্পর্কে থেকে লাভ কী, যখন আমার সামনে নতুন জীবন পড়ে আছে?”

পরকীয়া, গোপনে অর্থ ব্যয়, অথবা অবসরকালীন পরিকল্পনায় দ্বন্দ্বও সম্পর্ক নষ্ট করে। এছাড়া, দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোও সম্পর্ক ভাঙার কারণ হতে পারে।

এক গবেষণায় দেখা গেছে, স্ত্রীরা দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতায় ভুগলে বিবাহবিচ্ছেদের ঝুঁকি বেড়ে যায়, যা লিঙ্গ বৈষম্যের দিকটি তুলে ধরে।

অবাক করার মতো বিষয় হলো, তরুণদের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদের হার কমেছে, কিন্তু বেবি বুমারদের (৫০-এর বেশি বয়সী) মধ্যে এই হার ১৯৯০-এর দশক থেকে দ্বিগুণ হয়েছে।

মানসিক ও সামাজিক প্রভাব

গ্রে ডিভোর্স পারিবারিক সম্পর্কেও বড় প্রভাব ফেলে। গবেষণায় দেখা গেছে, বিবাহবিচ্ছেদের পরে পিতারা প্রায়শই সন্তানদের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলেন, যখন মায়েরা সম্পর্ক আরও জোরদার করেন।

সন্তানদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্নতা পিতামাতার মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। পিতারা সাধারণত একাকীত্ব, জীবনের প্রতি অসন্তুষ্টি এবং হতাশার ঝুঁকিতে বেশি ভোগেন।

মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে করণীয়

বিবাহবিচ্ছেদ উভয় পক্ষের জন্যই মানসিক চাপ সৃষ্টি করে, তবে নারীরা প্রায়শই বেশি মানসিক কষ্টের মুখোমুখি হন। নতুন সম্পর্ক কিছুটা স্বস্তি দিলেও তা সাময়িক হতে পারে।

সন্তানদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখা, সামাজিক যোগাযোগ বজায় রাখা, এবং নতুন শখ বা কাজ শুরু করা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। নিজেকে সময় দেওয়া এবং মানসিক সমর্থনের জন্য বন্ধু বা পরিবারের ওপর নির্ভর করাও গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *