মাধ্যমিকের সীমা পেরোনো ক’জন স্বপ্নবাজ তরুণের হাত ধরে চলতি বছরের মে মাসে পথচলা শুরু করে রোয়ার ফর স্ট্রিট চাইল্ড (Roar for Street Child – RSC)। পথশিশুদের স্বপ্নরাশি হাতের মুঠোয় ধরিয়ে দেওয়া, দেশের অলিতে-গলিতে ঘুরে বেড়ানো প্রতিভাবান পথশিশুদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ তৈরি করে দেওয়া আর শিক্ষা, বাসস্থান তথা তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে নিরলসভাবে অদম্য তরুণরা ছুটে বেড়াচ্ছে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে।
করোনার এই ক্রান্তিকালে স্বল্প সময়ে তারা নিয়েছে অনেক প্রসংশনীয় উদ্যোগ। সফলতার সঙ্গে প্রতিটি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে হাসির রেখা ফুটিয়েছে একদল পথশিশুর চোখে-মুখে। এরমধ্যে রয়েছে ‘একবেলা আহার কর্মসূচি’, ‘ঝরা বকুলের গল্প শোনো’, ‘আই হেভ এ ড্রিম’, ‘প্রজেক্ট সুনামগঞ্জ’, ‘আলোকিত পাহাড়’, ‘প্রজেক্ট খাগড়াছড়ি’। সৃজনশীলতা আর নান্দনিকতায় পরিপূর্ণ প্রতিটি কর্মসূচিতে তারা সাড়া ফেলেছে দেশব্যাপী। পথশিশুদের নিয়ে ছড়া-কবিতা ও গল্প রচনা প্রতিযোগীতায় বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন মনোয়ারুল ইসলাম, কিঙ্কর আহসান, নাজিম উদ দৌলা, আনিস মাহমুদ, পৌষালী সেনগুপ্ত সহ দেশবরেণ্য একাধিক ব্যক্তি। তরুণদের ব্যতিক্রমী আয়োজনে তারা রীতিমত অবাকই হননি, একাত্মতা পোষণ করেছেন, যুগিয়েছেন অনুপ্রেরণা। স্বকীয় কর্মসূচিগুলোর মাধ্যমে পথশিশুদের একবেলা আহার, এতিমখানা ও পাহাড়ি স্কুলে ক্যাম্পেইন, ট্যালেন্ট ও গিফট বক্স বিতরণসহ তারা করে যাচ্ছে একের পর এক আয়োজন। পাহাড়ি এলাকা ঘুরে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের দীর্ঘদিনের অব্যক্ত স্বপ্নের কথাগুলো লিপিবদ্ধ করে রূপায়িত করেছে বাস্তবতায়। পূরণ হয়েছে কারো স্কুল ব্যাগ, ডায়েরি, ঘড়ি, জুতা, টি-শার্ট, খেলনা, ছড়ার বই, ক্রিকেট ব্যাট অথবা ফুটবল কেনার স্বপ্ন।
এখন পর্যন্ত স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের প্রায় ১৫০ জন সদস্য এই প্লাটফর্মে কাজ করছে। স্বপ্নবাজ এই টিম কঠোর পরিশ্রম দিয়ে পাল্টাতে চায় দেশের চেহারা। প্রথমদিকে স্পন্সরশীপ না পেলেও তারা থেমে যায়নি। নিজ খরচে চালিয়ে গেছে কার্যক্রম। আরএসসি’র সদস্যদের লক্ষ্য আলোকিত ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়া। তারা চায় পথশিশুদের আর্তনাদের বার্তা পৌঁছে যাক দেশজুড়ে। পথশিশুদের ভরসার প্রতীক হোক ‘ টিম আরএসসি’ আর পথশিশুকে ভালোবাসুক সবাই।