Monday, December 30
Shadow

শিক্ষিত মায়ে’রাই পারে সুন্দর সমাজ গঠনের হাতিয়ার হতে  

তৌফিক সুলতান

মায়েরা হলো পৃথিবীর মতো (ধরিত্রী) পৃথিবীর মধ্যে কোথাও কেউ রাগ করলে কেবল ঐ স্থানের’ই ক্ষয়-ক্ষতি সাধন হয়। যা হয়তো একটা সময় পর আবার সংস্কার ও করে ফেলা যায় কিন্তু ধরিত্রী রাগ করলে ধ্বংস হয়ে যাবে পৃথিবীর মধ্যে অবস্থানরত সব কিছু যার প্রভাব হয়তো ছড়িয়ে পরবে তার আশপাশের গ্রহ গুলোতেও—

তাই মায়েদের রাগ করতে নেই মায়েরা রাগ করলে পরিবার, সমাজ, সংসার সবকিছুতে ধসনামে।

নারীর সফলতা ভালো মা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যমে তবে, কিছু কিছু নারী আছে যারা হয়তো টাকা উপার্জন করে, তাদের অহমিকা এমন পর্যায়ের ফলশ্রুতিতে তারা পুরুষের ঊর্ধ্বে মনে করে। তারই ফলস্বরূপ একসাথে চারজন স্বামী রাখার ইচ্ছে করে প্রকাশ। সন্তান হলে কি হবে তার পিতৃ পরিচয়? উপস্থাপিকার এমন প্রশ্নে নারী তখন হতাশ। নিজের অযাচিত বিষয় কে প্রতিষ্ঠিত করতে অযুক্তি ভাবে বলতে থাকে কথা। উপস্থাপিকা যদিও নারী তবে উশৃংখল নয়,অহংকারে ঘটে ক্ষয়;শিক্ষিত মা দিয়ে শিক্ষিত জাতি হয়!ভালোবাসলে ভালোবাসা পাবে যে প্রথা।

টাকা উপার্জিত অহমিকানারী সন্তান লাভের পরও মাতৃত্ব হারায়,পুষ্ট গাছও যত্নের অভাবে অযত্নে মারা যায়।

আপনি যদি কোনো অফিসের বস হয়ে থাকেন মানে ধরেন এম.ডি যার কাজ অফিসের ইনডোরে এসিতে বসে কর্মচারীরা ঠিক মতো কাজ করছে কি না তা দেখা। কর্মচারীর সুবিধা অসুবিধার খেয়াল রাখা। আপনার কোম্পানির ভালো মন্দ সম্পর্কে পরিকল্পনা করা সমস্যা সমাধান করা। ব্যবসার কর্মক্ষমতা তত্ত্বাবধান করা,সকল বিষয়ে নির্দেশ প্রদান ও ভালমন্দের দিকগুলো বিবেচনা বা দেখাশোনা করা,সুশৃঙ্খলভাবে দলের বা গোষ্ঠীর ব্যবসা পরিচালনা করা, ইত্যাদি সব গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এখন আপনি যদি আপনার দ্বায়িত্ব পালন না করে কঠোর পরিশ্রমী হয়ে মাটি কাটতে শুরু করেন। আপনার সব কাজ ফেলে আপনি যদি মাটি কাঁটার মতো কঠিন কাজ করে টাকা উপার্জন করে থাকেন আর নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করেন আপনার কাছে কি মনে হয় আপনি অনেক বুদ্ধিমান পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পরিশ্রমী মানুষ!! মোটেও না৷ আপনি যাদের পিছনে টাকা খরচ করছেন যাদের সাথে মাটি কাটছেন তারা হয়তো আপনাকে বাহ্-বা দিচ্ছে। কিন্তু আপনার অবস্থা হলো সেই বাঘিনীর মতো যে কি?না! বাঘের জন্মদেয় অথচ ছাগলের পালের সাথে থেকে নিজেকে ছাগলদের একজন ভাবতে শুরু করে। আর আল্লাহ্ কাছে দোয়া করে হে আল্লাহ্ আমাকে শিং দাও কিন্তু জেনে রাখেন আপনার এমন দোয়া আল্লাহ্ কাছে কবুল যোগ্য নহে।নিশ্চয়ই তা আপনিও বুঝতে পারছেন!! কিন্তু মেনে নিবেন না কারণ আপনাদের ইগো বেশি আর নিজেদেরকে সবার ঊর্ধ্বে মনে করেন নিজেকে একছত্রঅধিপতি মনে করতেও দ্বিধান্বিত হন না। নিজেরা সমস্যা সৃষ্টি করেন আর এর দায়ভার অন্যের উপর চাপিয়ে দেন আর গল্প এমন ভাবে তৈরি করেন। যেন মনে হয় আপনি নির্দোষী এক পবিত্র রমনী যাকে ফেরেশতা বললেও ফেরেশতাদের পাপ হবে।

একদিন নিশ্চয়ই এই অবসাদের সমাপ্তি ঘটবে সেইদিন কি কোনো জবাব থাকবে আপনার কাছে—?

আপনি কি মুরগি আর মোরগ এর মধ্যে পার্থক্য লক্ষ্য করেন নি?

মোরগ আর মুরগির মধ্যে পার্থক্য কি জানেন? খেয়াল করলে দেখবেন মুরগি তার বাচ্চাদের যত্ননেয় খেয়াল রাখে আর মোরগ স্বাধীন ভাবে ঘুরাঘুরি করে। কিন্তু নিজের অবস্থান ত্যাগ করে আপনিও যদি মোরগ এর মতো আচরণ করেন তবে জেনে রাখেন ব্যাহত হবে আপনাদের বংশ ধারা।

শিক্ষিত জাতি গঠনে মায়েদের ভুমিকা অনস্বীকার্য; মায়েরা যদি নিজের সন্তান কে মানুষ করা শিক্ষিত করে গড়ে তুলার বিষয়ে মনোযোগী হয়। তবে জাতির পরিবর্তন আসবে। তবে এই সমাজ ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে নারীদের বেহায়াপনার জন্য। পরকীয়ার মতো অশ্লীল কাজে যুক্ত হচ্ছে নারী সমাজ এমন সব নারীরাও নিজেকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে যাদের দুই,তিন টা সন্তান আছে চিন্তাও করছে না কি হবে সেই সব সন্তানদের। চমৎকার যুক্তি দ্বারা আবার তার বৈধতাও নিশ্চিত করছে।পরকীয়া করে এই অবৈধ সম্পর্ককে বৈধতা দিচ্ছে বিয়ের মাধ্যমে কেউ কেউ করছে লিভ-টুগেদার নিচ্ছেনা সন্তানের দায়ভার চাপিয়ে দিচ্ছে বাবার উপর। কিন্তু সব বাবারা রাখছে না সন্তানের খোঁজ এইভাবে ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে সমাজের উল্লেখযোগ্য একাংশ। 

২০২২ সালের মানবজমিনের এক রিপোর্ট বলছে ঢাকায় লিভ টুগেদার গ্রুপ, সদস্য হাজার ছাড়িয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক তৌহিদুল হক বলেছিলেন, দুনিয়ার সব দেশেই কমবেশি এমন ঘটনা আছে। তবে একেক দেশের ধরন ও চর্চা একেক রকম। কারণ, ধর্মীয় ও সংস্কৃতির মূল্যবোধ প্রতিটি দেশে ভিন্ন ভিন্নভাবে পরিচালিত হয়। অনেকেই পরিবার গঠন করে তার শারীরিক চাহিদা মেটাতে চায় না। এর মূল কারণ হলো- পরিবার মানে দায়িত্ব, আত্মত্যাগ, শেয়ার করা। এখানে একে অন্যের দায়িত্ব নিতে হয়। পছন্দ না হলেও অনেক কিছু মেনে নিতে হয়। সেক্রিফাইস করতে হয়। একটা সময় মানুষ পতিতালয় বা সেক্সহাউজে গিয়ে তার শারীরিক চাহিদা মেটাতো। কিন্তু এখন এই বিষয়গুলোকে আরও আধুনিক ও সহজ করে লিভ টুগেদার পন্থা বলা হয়। এক্ষেত্রে দেখা যায়, মানুষ তার পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে শারীরিক চাহিদা পূরণের পাশাপাশি একাকিত্ব সময়টাও ভালোভাবে কাটাচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের সমাজে বেশি উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে বিয়ে করার প্রবণতা কমে গেছে। সবাই যে লিভ টুগেদার করছে- এমনটাও না। বিয়ে না করে থাকা বা লিভ টুগেদার কোনোটাকেই আমরা ইতিবাচক ভাবি না।

ইমাম গাজ্জালি (রহ.)- লিখেছিলেন, 

শিশু মা-বাবার কাছে আমানত ও তার অন্তর মূল্যবান মণিমুক্তাতুল্য। তা শূন্য ক্যানভাসের মতো পবিত্র ও নির্মল। তা যেকোনো চিত্রের জন্যই উপযোগী এবং তাকে যেদিকে ইচ্ছা ফেরানো যায়। তাকে যদি ভালো কাজের শিক্ষা দেওয়া হয়, তবে সে দুনিয়া ও আখিরাতের সৌভাগ্যবান হবে। আর যদি তাকে মন্দ কাজে অভ্যস্ত করা হয় বা পশুর মতো অবজ্ঞা ও উপেক্ষা করা হয়, তবে সে হতভাগ্য ও ধ্বংস হবে। শিশুর রক্ষণাবেক্ষণ হলো তাকে আদবকায়দা ও শিষ্টাচার এবং উন্নত চারিত্রিক গুণাবলি শিক্ষা দেওয়া। (ইউসুফ আল হাসান, আল ওয়াজিজ ফিত-তারবিয়্যাহ)

সন্তান জীবনের শোভন ও সৌন্দর্য। সুসন্তান পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ। সন্তানের চোখে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেন মা-বাবা। আদর্শ সন্তানের মাধ্যমে দুনিয়া ও আখিরাতে সম্মান বৃদ্ধি হয় তাঁদের।

মৃত্যুর পরও তার সুফল পেতে থাকেন অনন্তকাল। পবিত্র কোরআনে সন্তানকে আল্লাহ তাআলা জীবনের সৌন্দর্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘সম্পদ ও সন্তান পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য।’ (সুরা : কাহাফ, আয়াত : ৪৬)

শিশুদের কে কখনো তুচ্ছ -তাচ্ছিল্য করবেন না!

কোন খারাপ উদাহরণ দেবেন না তার বাবা,মা অথবা দাদা যদি খারাপ ব্যাক্তি হয়ে থাকে।

তাহলে তাকে এই সব বলে কষ্ট দিবেন না যে তুই তর বাবার মতোই হইছোস,মা যেমন মেয়ে তো এমনই হবে। দাদা যেমন বজ্জাত ছিলো সে ঐ রকম বজ্জাত হইছে ইত্যাদি। শুধু এই সবই না কারোর মন খারাপ হয় এমন কথা বলা থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখবো। কাউকে কষ্ট দিবো না এমন অঙ্গিকার করলে সমাজের সৌন্দর্য ফিরে আসবে বলে আশা করছি। মানুষ বিপথে যাওয়ার অন্যতম একটা কারণ হলো মানুষের দ্বারা কষ্ট পাওয়া। মায়েরা যদি সন্তান নিয়ে ভবিষ্যৎ দেখতে শুরু করে তবে আশাকরি সামনে এমন একটা প্রজন্ম আসবে যারা সুন্দর বিশ্ব নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে। 

দৃষ্টি আকর্ষণ করছি রাষ্ট্র পরিচালকদের সমাজ সংস্কারে এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন।

সমাজে ছড়িয়ে দিন শিক্ষার আলো অসমাজিকতা বন্ধ হউক এর কেন্দ্র থেকে এই প্রত্যাশা করছি।

তৌফিক সুলতান- সভাপতি, বাংলাদেশ শিক্ষা পরিষদ। 

শিক্ষক – ঘাগটিয়া চালা মডেল হাইস্কুল। এবং সাবেক দপ্তর সম্পাদক – বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম।

towfiqsultan.help@gmail.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!