বেশি দিন আগের কথা নয়। আমাজানে গিয়েছিলাম জাদু দেখাতে। কী আর বলব, যে কয়েক দিন ছিলাম, ঘুরেফিরে কথা আর দেখার সুবাদে বন্ধুত্ব হয়ে গেল পাঁচ ভূতের সঙ্গে। তাও যেনতেন ভূত নয়, নেনো ভূত। শুনেছি, ভূতদের মধ্যে নেনো প্রজাতির ভূতরাই সবচেয়ে পুরনো, কিছুটা সভ্য আর বনেদি প্রজাতির। দায়ে না পড়লে মানুষের খুব একটা তিটতি করে না।
চুপি চুপি বলে, তাদের কাছ থেকেই কিছু ম্যাজিক শিখে এসেছি। সেখান থেকেই একটা ম্যাজিক আজ তোমাদের শিখিয়ে দিচ্ছি। তোমরা তো আর সহজে ভূতের দেখা পাচ্ছ না, তাই বন্ধু কিংবা অন্যদেরও চাইলে এই ম্যাজিকটা দেখাতে পারো।
ম্যাজিকের ধরন
জাদুকর এক প্যাকেট তাস তুলে নিলেন টেবিলের ওপর থেকে। বেশ করে সাফল দিলেন তাসগুলোয়। বিড়বিড় করে কী যেন আওড়াতে আওড়াতে কিছু তাসের একটি ভাগ টেবিলের একপাশে এবং কিছু তাস টেবিলের অন্য পাশে রাখলেন। বাদবাকি তাস ঢুকিয়ে রাখলেন প্যাকেটেই। দর্শকদের দিকে সহাস্যে তাকিয়ে বললেন, ‘আমি তাসগুলো থেকে কিছু কিছু করে তাস নিয়ে দুটি ভাগ আপনাদের জন্য রেখেছি। এর মধ্যে যেকোনো একটি ভাগ আপনারা পছন্দ করবেন এবং আমি জিজ্ঞেস করলেই কেবল পছন্দের তাসের ভাগটি আমাকে দেখাবেন।’
এই বলে জাদুকর তাঁর নিজের প্যাকেট থেকে বের করে আনলেন অদ্ভুত রঙের সুগন্ধযুক্ত একটি খাম। খামটি এগিয়ে দিলেন একজন দর্শকের দিকে। বললেন, ‘শম্পা নামের নেনো গোত্রের একজন ভূতিনীর সঙ্গে আমার বেশ ভালো বন্ধুত্ব। ভূতেরা তো অনেক কিছুই বেশ আগে থেকে জেনে যায়, বন্ধুত্বের সুবাদে সেই আমাকে আগেই বলে দিয়েছেÑকোন ভাগটি আপনারা পছন্দ করেছেন। সেই মতো আমি লিখেও এনেছি তা। দেখুনই না খামটি খুলে, কী লেখা রয়েছে তাতে?
দর্শকরাও খুললেন খামটি এবং তাতে লেখাÑ‘আপনি পাঁচের ভাগটি পছন্দ করেছেন।’ দর্শকদের কাছ থেকে জেনে নিয়ে জাদুকরও দর্শকদের ভাগটি টেবিলে রেখে অন্য তাসের ভাগটি প্যাকেটে ঢুকিয়ে দিলেন। এরপর দর্শকদের ভাগটি গুনে কিংবা দেখিয়ে, আবারও বলছি গুনে কিংবা দেখিয়ে প্রমাণ করে দিলেন যে দর্শকরা সত্যিই পাঁচের ভাগটিই পছন্দ করেছেন।
মাজেজা
নেনো গোত্রে সত্যিই কোনো ভূত আছে কি না, তা আমি কেন, ভূতেরাও জানে কি না সন্দেহ! আমি তো কেবল গল্প ফেঁদেছি। সত্যি বলতে কি পাশের ছবিটা দেওয়া হয়েছে কৌশলটি তোমরা সহজে বুঝে নেওয়ার সুবিধার্থে।
এ েেত্র এক ভাগে রাখবে যেকোনো পাঁচটি তাস, আর অন্য ভাগে ৫ লেখা চার রঙের চারটি তাস, তবে দুটি ভাগের সব তাসকেই তুমি কিন্তু মুখ উল্টে উপুড় করে তবেই রাখবে। দর্শকরা এবার যে ভাগটিই পছন্দ করুক না কেন, মাজেজাটির ফাঁক যাতে প্রকাশ পেয়ে না যায়, সেজন্য অন্য ভাগের তাসগুলো প্যাকেটে ঢুকিয়ে তবেই পছন্দ করা ভাগের তাস দর্শকদের দেখাতে যাবে।
কেন না পাঁচটি তাসের ভাগ পছন্দ করলেও তার উত্তর হবে পাঁচ, অন্যদিকে পাঁচ লেখা বা আঁকাযুক্ত তাসগুলোও পছন্দ করলে তার উত্তরও হবে পাঁচ। আজ একটু তাড়া আছে চলি। আসলে বীথি নামের এক নেনো ভূতের আজ জš§দিন কি না, সেখানে জাদু দেখাতে যেতে হবে।