class="post-template-default single single-post postid-139 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

ভারতে কেনাকাটা

ভারতে কেনাকাটা
ভারতে কেনাকাটা করতে আছে চোখ ধাঁধানো সব বাজার। জমকালো গহনা ও আরো অনেক কিছুর জন্য দিল্লির স্ট্রিট মার্কেটগুলো বিচিত্র সব জিনিসপত্র কেনার জন্য চমৎকার এক স্থান।
হাজার বছরের ইতিহাস সমৃদ্ধ ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লি বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন স্থাপনা ও আশ্চর্যে ঠাসা। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সুউচ্চ কুতব মিনার, দ্বিতীয় মুঘল সম্রাট হুমায়ুনের সমাধি ও বিশাল লাল কেল্লা। পর্যটকরা এই শহরের মহামূল্যবান এসব প্রাচীন স্থান ও সম্পদগুলো মন্ত্রমুগ্ধের মতো দেখে।
কিন্তু ভারতের এই রাজধানীতে শুধুমাত্র প্রাচীন নিদর্শন ছাড়াও উপভোগ করার মতো রয়েছে অনেক কিছু। যদি আপনি এই শহরের সত্যিকারের সংষ্কৃতি ও ঐতিহ্য জানতে চান তাহলে সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে শহরের বিভিন্ন বাজারগুলোতে ঘুরে বেড়ানো। ভারতে কেনাকাটা করতে আসলে দেখবেন বাজারগুলোর প্রত্যেকটিতেই ভিন্ন ভিন্ন আমেজের চমৎকার সব বস্তু রয়েছে। এগুলোর পরিবেশ ও ধরনেও রয়েছে ভিন্নতা। পর্যটকরা দিল্লির অসংখ্য বাজার, শপিং মল ও রাস্তার পাশের হকারদের কাছ থেকে কেনাকাটা করতে গেলে বহু চমকপ্রদ বস্তুর মধ্য থেকে পছন্দ করতে আক্ষরিক অর্থেই হিমসিম খান। নিম্নে দিল্লির কিছু বাজারের কথা উল্লেখ করা হলো যেগুলোতে আপনি আপনার মন ভরে কেনাকাটা করার পরেও মনে হবে আরো কতো বাকি:

ভারতে কেনাকাটা : দিল্লি হাট

যদি আপনি আদি ও অকৃত্রিম জিনিসপত্র কিনতে চান তাহলে সোজা চলে যান শহরের দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থিত দিল্লি হাটে। বিশাল এই পর্যটকদের বাজারে রাখা হয়েছে গ্রামীণ আবহ। সে কারণে নামটিতেও রাখা হয়েছে গ্রামের ছাপ, ‘হাট’। এই বাজারের ছোট্ট কুঁড়েঘরের মতো দোকানগুলো আপনাকে গ্রামীণ আবহে কেনাকাটার সুযোগ দেবে। মনে করিয়ে দেবে গ্রামের কথা। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের ঐতিহ্যবাহী সব কুটির শিল্পের সঙ্গে এখানে আপনি পাবেন অসাধারণ সব ভারতীয় খাবার, সেই সঙ্গে থাকবে জমকালো সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠানও। নাগাল্যান্ড স্টলের মোমো ও শুকরের মাংশের রেসিপিগুলো একবার চেখে দেখতে ভুলবেন না যেন।
পরামর্শ: এখানে জিনিসপত্রের দাম বেশ উঁচুতে হাঁকা হয়। তবে কিছুটা দরকষাকষি করে ভালো দামে কিনতে পারবেন। এখানকার দোকানগুলো পালাক্রমে বসে (এক স্থানে একেক দিন একেক দোকান) তাই নিজের পছন্দের জিনিস পরেরবার কেনার জন্য তুলে রাখবেন না।

ভারতে কেনাকাটা : চাঁদনি চক

আপনি যদি খ্যাতনামা ডিজাইনারদের পোশাক কিনতে চান তাহলে মেট্রোতে চেপে চলে যান চাঁদনি চকে। এই জায়গাটিতে প্রচ- ভিড় হতে পারে তবে এখানে জামাকাপড় কেনাকাটা আপনার সেরা অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে। এখানকার দোকানদাররা আপনাকে হাল ফ্যাশনের নতুন পোশাক সম্পর্কে ধারণা দেবে। এখানে এমন কিছু দোকান পাবেন যারা ভারতের সেরা সেরা ডিজাইনারদের নকশাকে নকল করে পোশাক তৈরি ও বিক্রয় করে। কিছু কিছু দোকান বলিউডি পোশাকও বিক্রি করে।

পরামর্শ: এই বাজারটি অনেক জনাকীর্ণ, তাই এখানে ট্যাক্সিযোগে যাবেন না। এই বাজারে অনেক মজাদার কিছু খাবার দোকান আছে। এখানে আছে করিম’স, যারা খাশির মাংসের মজাদার সব রেজিপির জন্য বিখ্যাত।

ভারতে কেনাকাটা : সারোজিনি নগর

এই বাজারটি একেবারে সস্তা দামে ডিজাইনার পোশাকের জন্য বিখ্যাত। এখানে খ্যাতনামা ব্র্যান্ডের পোশাকও পাওয়া যায় কম দামে। অতি সামান্য ত্রুটির কারণে বা অতিরিক্ত পরিমাণে বানানোর কারণে যেসব পোশাকের রফতানির বাতিল হয়ে যায় সেগুলোই এই বাজারে বিক্রি হয়। এসব কারণে সরোজিনি নগর দিল্লির সবচেয়ে জনপ্রিয় বাজার। ভারতে কেনাকাটা করতে এলে আপনি এখানে এমনও দোকান পাবেন যারা সব ধরনের ফ্যাশন পণ্য বিক্রয় করে। সারোজিনির গা ঘেঁষে একটি মিষ্টি বাজার রয়েছে যেটি বাবু বাজার নামে পরিচিত এবং একটি সবজি বাজার আছে যেটি সবজি মুন্ডি নামে পরিচিত।
পরামর্শ: জনাকীর্ণ এই এলাকায় শপিংয়ের ক্লান্তি দূর করতে ‘জি লেন’এ অবস্থিত হলদিরামে যেয়ে ‘দিল্লি চাট’ খেয়ে নেবেন, এটি জিবে জল এনে দেওয়ার মতো মজা অথবা জুসের দোকানগুলো থেকে এক গ্লাস জুস খেয়ে আসবেন। বাজার খোলার পর পর কেনাকাটা সেরে নেওয়া ভালো, কারণ তখন ভীড় অনেক কম থাকে।

ভারতে কেনাকাটা : জনপথ

ভারতে কেনাকাটা ও ব্যবসা-বানিজ্যের জন্য বিখ্যাত এলাকা ‘কন্নাওয়াট প্লেস’এর ঠিক উল্টোদিকে অবস্থিত জনপথ মার্কেটে আছে ছোট ছোট দোকান। ফ্যাশন পণ্যের সর্বশেষ সংযোজনগুলো এখানে পাবেন। এখানকার রাস্তার পাশের কারিগরদের কাছে পাবেন নানান ডিজাইনের সব নজরকাড়া জুতা ও হ্যান্ডব্যাগ। আপনি যদি দিল্লি ছেড়ে যাওয়ার সময় কোনো উপহার নিয়ে যেতে চান তাহলে এই মার্কেটই আপনার জন্য সঠিক জায়গা। এখানে আপনি দীর্ঘ দরকষাকষি করতে পারেন।

পরামর্শ: এখানকার পণ্যগুলোর গায়ে অনেক বেশি দাম লেখা থাকে, বেশিরভাগ সময় ট্যাগের দামের আর্ধেক দামে জিনিসপত্র বিক্রয় হয়। এখানকার কিছু দোকানে আপনি মানসম্পন্ন কাশ্মিরের পশমিনা শাল কিনতে পারবেন।

গাফফার মার্কেট

৫০০ দোকান নিয়ে ১৯৫২ সালে এই মার্কেটটি যাত্রা শুরু করে। কাড়ল বাগের এই গফফার মার্কেট ভারতে কেনাকাটা এর জন্য একটি আনঅফিশিয়াল গ্রে মার্কেট (অনুমোদন নেই তবে অবৈধও নয় এমন আমদানি বাজার)। ভারতে কেনাকাটা করতে গেলে মোবাইল ফোন, ক্যামেরা ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্য কেনার জন্য এটি নয়া দিল্লির সেরা স্থান। কথিত আছে যেসব মোবাইল ফোন এখনও ভারতের বাজারের জন্য অনুমোদন পায়নি সেসব সেটও এখানে পাওয়া যায়।
পরামর্শ: আপনি এখান থেকে স্বল্প মূল্যে বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস পণ্য কিনতে পারবেন কিন্তু এখানে আপনাকে পণ্য কেনার জন্য কোনো বিল দেওয়া হবে না। আপনি কোনো গ্যারান্টিও পাবেন না, তাই প্রতারক হতে সাবধান এবং এই মার্কেটে পকেটমারের আনাগোনা আছে, অগত্যা পকেটও সাবধান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!