Sunday, May 5
Shadow

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এ তথ্যগুলো জানতেন?

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
১৮৬১ সালের ৭ মে কোলকাতায় জন্ম নেওয়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লোকমুখে পরিচিত ছিলেন গুরুদেব নামে। বাংলা সাহিত্যে তার অবদান অতুলনীয় এবং তিনিই বাংলা সাহিত্য ও গানের নবজাগরণের নেতৃত্ব দিয়েছেন। সনাতনি সংস্কৃতের গণ্ডি থেকে মুক্ত করে তিনি বাংলা কবিতা ও পদ্যে আধুনিকতার ছোঁয়া দিয়েছেন। প্রথম ভারতীয় হিসেবে তিনি ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরষ্কার অর্জন করেন। চলুন এই কিংবদন্তির জীবনের গভীরে তাকানো যাক।

১. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একমাত্র ব্যক্তি যিনি দুটি ভিন্ন ভিন্ন স্বাধীন দেশের জাতীয় সংগীত রচনা করেছেন। ভারতের জাতীয় সংগীত জানা গানা মানা ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত আমার সোনার বাংলা দুটোই তাঁর লেখা।
২. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে দু’বার নোবেল পুরষ্কার দেওয়া হয়। ২০০৪ সালে শান্তিনিকেতনের যাদুঘর থেকে রবীন্দ্রনাথের নোবেল পুরষ্কারের মূল স্মারক মেডেল ও আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্মারক চুরি হয়ে গেলে নোবেল ফাউন্ডেশন তার দেড়শতম জন্মবার্ষিকীতে পুনরায় স্বারক মেডেল প্রদান করে।
৩. রবীন্দ্রনাথ বুঝতে পারেন হিমালয় তাঁকে ডাকছে। তাই যক্ষ্মা আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও কন্যা রেণুকাকে সঙ্গে নিয়ে ১৯০৩ সালে তিনি রামগড় ভ্রমণ করেন। প্রতিকূল পরিস্থিতি ও কন্যার ক্রমাবনয়মান অবস্থা সত্ত্বেও রবীন্দ্রনাথ হিমালয়ের সৌন্দর্যে এতটাই মুগ্ধ হয়েছেন যে সেখানে বসেই কাব্যগ্রন্থ ‘শিশু’ রচনা করেন। ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে রেণুকা মারা যায়। ১৯১৪ সালে রবীন্দ্রনাথ আবার রামগড়ে ফিরে আসেন। সেখানকার একটি চূড়া যেটি বর্তমানে ‘ঠাকুর চূড়া’ নামে পরিচিত, সেখানে বসে তিনি তাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ গীতাঞ্জলীর কিছু অংশ লেখেন, যেটির জন্য তিনি পরে নোবেল পুরষ্কার পান।
৪. রবীন্দ্রনাথ কবিতা লেখা শুরু করেন যখন তাঁর বয়স মাত্র ৮ বছর। ১৬ বছর বয়সে তিনি রাধা-কৃষ্ণ বিষয়ক পদাবলীর অনুকরণে প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করেন ভানুসিংহ ছদ্মনামে। ওই বয়সেই ১৮৭৭ সাল থেকে তিনি ছদ্মনাম পরিহার করে স্ব-নামে গল্প ও নাটক লিখতে শুরু করেন।
৫. ১৩ ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট রবীন্দ্রনাথ শ্রেণিকক্ষের লেখাপড়াকে একদমই পছন্দ করতেন না। আদতে তিনি কলেজে গিয়েছিলেন মাত্র এক দিন। তাঁর বড় ভাই হেমেন্দ্রনাথই তাঁকে লেখাপড়া শিখিয়েছেন। হেমেন্দ্রনাথ ব্যক্তিগতভাবে রবীন্দ্রনাথককে ট্রেকিং ছাড়াও জিমন্যাস্টিকস, জুডো ও মল্লযুদ্ধে পারদর্শী করে তোলেন।
৬. রবীন্দ্রনাথ জতীয়তাবাদ ধারণায় বিশ্বাস করতেন না, বস্তুত তিনি ছিলেন জাতীয়তাবাদ বিদ্বেষী। ১৯১৬-১৭’র দিকে তিনি জাতীয়তাবাদ বিষয়ে অনেকগুলো বক্তৃতা দেন। এর মধ্যে আমেরিকায় একটি বক্তৃতায় তিনি সবার সম্মুখে জাতীয়তাবাদকে কড়া সমালোচনা করেন। জাতীয়তাবাদকে তিনি আখ্যা দেন ‘নির্বোধের হিংস্র জাতি পূজা’ নামে।

৭. ৬০ বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ অঙ্কন ও চিত্রশিল্পের দিকে ঝুঁকে পড়েন। সে সময় তিনি ইউরোপ জুড়ে নিজ চিত্রশিল্পের অনেকগুলো সফল প্রদর্শনী করেন। তাঁর চিত্রশিল্প অনেকাংশে প্রভাবিত ছিলো নর্দান নিউ আয়ারল্যান্ডের হস্তশিল্প, ব্রিটিশ কলম্বিয়ার খোদাইশিল্প ‘হাইদা’ এবং ম্যাক্স পেকস্টাইনের কাঠখোদাই শিল্পের দ্বারা। তার আঁকা ছবিতে অদ্ভুত রঙের রেখাচিত্র এবং খাপছাড়া ভাবের কারণে ধারণা করা হয় তিনি লাল-সবুজ বর্ণান্ধ ছিলেন।
৮. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৪তম জন্মদিনে অর্থাৎ ২০১৫ সালে কেন্দ্রীয় ইউরোপের ছোট্ট দেশ স্লোাভানিয়ায় মে মাসের ৭ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত জমকালো উদযাপনের আয়োজন করা হয়েছিল। দেশটিতে মাত্র ২০ লাখ মানুষের বাস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!

error: Content is protected !!