class="post-template-default single single-post postid-50769 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

রোমান্টিক বিরহের গল্প : চরণে ধরিয়া তব

রোমান্টিক বিরহের গল্প : চরণে ধরিয়া তব। গল্পটি লিখেছেন এ কালের অন্যতম সেরা তরুণ লেখক  ধ্রুব নীল। লেখকের অনুমতিক্রমে রোমান্টিক বিরহের গল্প : চরণে ধরিয়া তব পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
রোমান্টিক বিরহের গল্প
শুধু আমিই আমাকে বুঝতে পারি। আমার মা-ও আমাকে বুঝতে পারে না। সেখানে তমাল কোন ছার। তাকে বুঝতে দিলেও সে বুঝবে না। তমাল হলো খোলা বই। তরতর করে রিডিং পড়া যায়। সমস্যা হলো বইটায় তেমন থ্রিল নেই। ম্যাড়ম্যাড়ে কয়েকটা ছোটগল্প আছে বড়জোর।
তমালের ফোনে ব্রাউজার হিস্ট্রি ডিলিট করার অ্যাপ দেখেছি। কথা বলার সময় মিনিটে চোখ কতবার কোন দিকে যায়, আর সেটার পেছনে যে মনস্তত্ত্ব লুকিয়ে থাকে, সেটা একটা সফটওয়্যারও ধরে ফেলবে। আমার চোখের কঠিন ফেস রিকগনিশন সে ফাঁকি দেবে কী করে!
লুকিয়ে এটা সেটা দেখলে দেখুক। প্রেম করার জন্য লুতুপুতু মার্কা সেজে বসে থাকাটা যে কাজের জিনিস নয়, এই ভুল তার ভাঙতে হবে। বিশ্বাস করুন, ভালো মানুষিগিরির চেয়ে বিরক্তিকর আর কিছু নেই আমার অভিধানে। আমি আমার মতো। ভালো মানুষ ভালো হোক, খারাপ মানুষ খারাপগিরি করুক। আমি থাকি আমার মতো। তমাল তমালের মতো। তার খারাপগিরি ধরতে আমার বয়ে গেল।
সমস্যা হলো, সব পড়ে ফেলা সত্ত্বেও তমালের মনের বইটা আমার বোরিং লাগে। জোর করেও মনোযোগ দিতে পারিনি। তার হাসি, মন খারাপ সবই প্রেডিকটেবল। কী বলবে না বলবে দুদিন আগেই লিখে দিতে পারি। তাকে সরাসরি বলে দিয়েছি, বাপু তোমার যখন যা ইচ্ছে বলবে। চুমু খাওয়ার জন্য রিকশায় ওঠা, হুড তোলা, অমুক চত্বরে গিয়ে বসি চলো, এসব ক্লিশের দরকার নেই। চাইলে একেবারে ভরা ক্লাসরুমে পটাশ করে একটা কিস দিয়ে দিতে পারো, আমি হাসিমুখে তাহা গ্রহণ করিব। তবে আমার সেই হাসির মানে তোমার বোঝার দরকার নেই।
তমাল অবশ্য একবারও চুমু খায়নি। কারণটা পরিষ্কার। সে ভেবেছে আমাকে জয় করে ফেলেছে। অগণিত চুমুর চেক পকেটে নিয়ে ঘুরছে। ইচ্ছে হলে উইথড্র করে নেবে।
‘তোমার কি আরও কিছু চাই? বিশেষ কিছু?’ সিরিয়াস মুডের অভিনয় করে একদিন বলে ফেললাম কথাটা।
‘না তো! কীসের কথা বলছো?’
আমার ইচ্ছে হলো বলি, ফোনে গভীর রাতে যেসব ভিডিও দেখো, সেসব আমাকে নিয়ে..। নাহ। ছেলেটা ভালোমানুষি দেখাতে চাচ্ছে। দেখাক। বাধা হতে যাব না। শত হলেও প্রেম চলছে। বিশ্বাস হচ্ছে না? না হলে নাই। আমার অন্তত তাতে কিছু যায় আসে না। আমার আমি যে একেবারে ডাহা সত্যবাদি, সেটা ভাববেন কেন?
প্রেমিকাদের কাছে প্রেমিকরা কী এমন তুলসি পাতারে বাবা। প্রেম করার জন্য সাধু খুঁজিনি। সাধু সন্নাসীরা তো প্রেমিক না। তারা উল্টোপাল্টা ভিডিও দেখে না। চুমুর জন্য হাহাকার নেই। এটা চাই ওটা চাই করে না। এমন বোরিং অ-ফ্রয়েডীয় লোকজনকে দিয়ে তো বিবর্তন তো দূরে থাক, মানবজাতির ডিএনএ-ই টিকবে না।
‘তমাল, তোমার নাম বদলানো দরকার। তোমার চেহারায় তমাল তমাল ভাব নেই। তোমার নাম হওয়া উচিত এস্কান্দর মিয়া।’
‘আমার নাম আবুল বাশার হলে প্রপোজ করতে?’
তমাল কি কৌশলে মনে করিয়ে দিল যে তাকে প্রেমের প্রস্তাবটা আমিই দিয়েছিলাম আগে? কথা সত্য। আমি জানতাম তমাল আমাকে মনে মনে টার্গেট করেছে। ছিপ ফেলার আগেই যে মাছ এসে ধরা দেবে সেটা ভাবেনি। থতমত খেয়ে বলে ফেলেছিল, ‘আমি তো তোমাকে ভালোবাসি না।’

রোমান্টিক বিরহের গল্প

আমি বলেছিলাম, ‘ওকে। পরে যদি বলতে আসো তাহলে থাপ্পড় খাবে। শেষবারের মতো ভেবেচিন্তে দেখো।’
তমাল সময় নেয়নি। পাছে মাছ হাতছাড়া হয়, হড়বড় করে বলে দিল, আমাকে তার অনেক ভালো লাগে এবং সে লুকিয়ে লুকিয়ে আমাকে অনেক দেখতো।
আমি আসলে কী গল্প ফাঁদতে চলেছি? আমার গল্পের টুইস্টটা হলো, আজ তমালকে ছ্যাঁকা দেব। গুনে গুনে ছয় মাস হলো আমাদের সম্প.. দুর… এ ছাইপাশ আবার সম্পর্ক হয় নাকি। ছয় মাস হলো আমার লিমিট। মদের যেমন পেগের লিমিট থাকে। প্রেমের ক্ষেত্রে তিন মাস, ছয় মাস এমনকি দুই বছরের লিমিটও থাকে। এরপর আবার মনের একটা অংশ খুঁজে বেড়াবে প্রথম প্রেমের উন্মাদনা, প্রথম একটুখানি ছোঁয়াছুঁয়ি।
আজ মারাত্মক সাজুগুজ করে এসেছি। প্রথমে ভেবেছি করবো না। পরে ঠিকই…। তমালের পছন্দের কালো শাড়ির সঙ্গে লাল টিপ ব্লা ব্লা ব্লা।
না জানি কোন হিন্দি কিংবা তামিল নায়িকার সঙ্গে আমার মিল খুঁজে বেড়াবে, তবে আমি নিশ্চিত আজ আমাকে দেখা মাত্রই তমাল তার জমানো সব চেক একসঙ্গে উইথড্র করতে চাইবে। আর আমি বলে দেব, বাছা ছ’মাস পর চেকের মেয়াদ থাকে না।
‘মাই গড। তুমি তো আফ্রোদিতি… না না ক্লিওপেট্রা, অবশ্য এরা কেউ শাড়ি টাড়ি পরতো না। তবে মাথা নষ্ট সুন্দর লাগছে।’
‘আফ্রোদিতির সঙ্গে তো এক বিকলাঙ্গর বিয়ে হয়েছিল। তুমিও তাই চাও? তোমাকে বিয়ে করি?’
‘ইতিহাস জানি না। নাম মাথায় আসছে, বলে দিলাম। যাই হোক, তোমার সঙ্গে ইম্পর্টেন্ট কথা আছে।’
তমাল গুছিয়ে কিছু বলতে পারে না। এটাকে সম্ভবত সে এক ধরনের যোগ্যতা ধরে নিয়েছে। তবে এবার মনে হলো সে তার যোগ্যতাটার কথা ভুলে গেছে।
‘আমার আসলে ভুল হয়েছে। আমি আসলে তোমাকে সেভাবে পছন্দ করি না।’
‘এটা বুঝতে ছয় মাস লাগলো?’
‘সত্য বুঝতে সময় লাগতে পারে। ছয় মাস যে হয়ে গেছে সেটা অবশ্য বুঝি নাই। আমার মনে হয় আমাদের মধ্যে আর দেখা না হওয়া ভালো।’
‘বেশ তো। আর ক্লাসেই আসবো না।’
আরেকটু নমনীয়ভাবে কথাগুলো তো আমিই বলতে এসেছিলাম।
‘আমাদের মাঝে সবই তো ঠিক ছিল!’ আর্তনাদ করে উঠলো আমার মনের একটা অংশ। সেটা গলা দিয়েও বের হয়ে এলো। সঙ্গে সঙ্গে মনের আরেক পক্ষ কড়া করে ধমক দিল আমাকেই।
আমার দুর্বলতার প্রকাশে তমাল এবার সাহস পেলো। ‘ঘোড়ার ডিম ছিল। তুমি মহা চালাক। আমি ছিলাম তোমার চালাকি চর্চা কেন্দ্র। যখন মন চেয়েছে আমার সঙ্গে চালাকি ঝালিয়ে গেছো। তোমার সঙ্গে থেকে এখন আমিও চালাক হয়েছি। এ জন্য বুঝতে পেরেছি বিষয়টা।’
হড়বড় করে বলে কয়ে তমাল সত্যি সত্যি চলে গেল। ভাবছেন, হয়েই তো গেল। সুন্দর পরিসমাপ্তি। যেমনটা আমিও চেয়েছিলাম।
– সত্যিই? নাহ। না তো। এটা কেন হবে?
– হতেও পারে। খারাপ লাগছে নাকি?
– লাগবে না?
– নিজের অহংয়ে লেগেছে বলে?
– তমালের জন্য আমার আত্মসম্মানে লাগবে কেন, ও তো তমাল। সস্তা একটা বই।
– তো কার জন্য অহংয়ে লাগা উচিত ছিল শুনি?
– কারও জন্যই না।
মনের এক পক্ষের সঙ্গে আরেক পক্ষের তুমুল তর্কাতর্কি জুড়ে আরেক আমি আলগোছে কেটে পড়ছি। রিকশা খুঁজতে লাগলাম হন্যে হয়ে। রিকশায় ওঠার পর মনে হলো তমালকে আর কোনো দিন দেখবো না। কারণ আমি আর ভার্সিটিতে আসবো না। তমাল আমাকে আর খুঁজেই পাবে না। সে কি খুঁজবে? সে কি বুঝবে আমি নেই? কেন নেই? বুঝলেই বা কী। কদিনই বা মনে রাখবে। আমি সুইসাইডাল নই যদিও তবে মানুষ তো অল্প অল্প করেও মরতে পারে?
– এসব কী ভাবছিস! ছি শিরিন! তুমি আজ ওর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি করতে এসেছিলে না?
– হ্যাঁ! তাতে কী! খারাপ তো লাগছে।
– তুই একটা দুমুখো সাপ! তমাল ঠিক কাজ করেছে তোকে ছ্যাঁকা দিয়ে। উচিত কাজ করেছে।
– চুপ! একদম চুপ! তুই বুঝবি না আমাকে কোনোদিন। তুই বড্ড বাড়াবাড়ি…।
– তোকে বোঝার কী আছে! আমি আর তুই এক। দুজনই এক মগজে থাকি।
– না! আমরা এক না। তুই আমার মস্তিষ্কের একটা অংশ। আমি আর তুই এক না। তুই তমালকে চাস না। আমি চাই।
এরপর আমার মনের একটা পাশ যা বলছে, অন্য পাশ (যে পাশ তমালকে ছেড়ে দেওয়ার পক্ষ নিয়েছে) সব কথার ভেংচি কাটা শুরু করলো। আমি পড়েছি বিপদে। মাথার দ্ইু পাশের এ ঝগড়া সহজে থামবে না। অন্য কেউ হলে এক পাশকে এতক্ষণে জয়ী ঘোষণা করে দিত। আমি সেটা পারি না। কারণ আমি, মানে যে পক্ষ আপনাদের সঙ্গে বকবক করে চলেছে, সেটা হচ্ছি তৃতীয় পক্ষ। এ পক্ষের কোনো আবেগ অনুভূতি নেই। এ পক্ষ নিরপেক্ষ চোখে সব বিচার করার জন্য বরাদ্দ। আমার ধারণা সবার মনেই এমন একটা তৃতীয় পক্ষ থাকে। আর এক পক্ষ আরেক পক্ষ কে যে দেখতে পারে না এটাও সত্য।
– খুব দার্শনিক বনেছিস। যা বই লিখ বসে।
– বাড়াবাড়ি হচ্ছে খুব। আমি বাসায় গিয়েই তমালকে ফোন দেব।
– তমাল তোর কেউ না। তমাল ছিল তোর মনের একটা ডিফেন্স।
– তমাল তমালই। তাকে যে নামেই ডাকিস না কেন…।
– সে ইতিমধ্যে দুর্গন্ধ ছড়ানো শুরু করেছে শিরিন। সে গোলাপ ফুল নয়।
– তুই কাউকেই ভালোবাসতে পারবি না কোনোদিন। বুঝলি!
– এমন ভালোবাসতে আমার বয়েই গেছে।
– তা হলে বেঁচে থাকবি কেন।
– আমার বেঁচে থাকা আমি থাকব। তোর কী! কার কী!
– আমি তো কষ্ট পাচ্ছি।
মনের তমাল-বিরোধী পক্ষ এবার চুপ। সে কি বিষণ্ন হয়ে গেল? নরম-সরম পক্ষটাও চুপ মেরে গেল। আমি, মানে তৃতীয় পক্ষ এবার বেকায়দায়। মনের দুই পক্ষে রেশারেশি দীর্ঘস্থায়ী হোক, তা চাইনি। অবশ্য আমার চাওয়াতেও যে সব ঘটবে, এমন না বিষয়টা। মানুষ তার মনে অনেকগুলো পক্ষ নিয়ে ঘাপটি মেরে বসে থাকতে পারে। সে একই সঙ্গে বিশ্বাস করে, আবার করে না। একইসঙ্গে ভালোবাসে আবার বাসে না। আপনাদের কাছে অদ্ভুত শোনালেও শোনাতে পারে। বিশেষ করে যাদের মনে পক্ষ নেই, একজনই বকবক করে, সেই মানুষগুলো খারাপ হোক ভালো হোক, অন্তত সুখে থাকে।
একটা পক্ষ তমালের জন্য কাতর হয়ে এখন দুঃখ দুঃখ ভাব নিয়ে মূলত সুখেই আছে বেশ। ভালোবাসতে পারার সুখ। পাওয়া না পাওয়ায় তার কিছুই যায় আসে না। আরেক পক্ষ নিজের অহংয়ের কাছে বাঘবন্দি হয়ে মুখ গোমড়া করে আছে।
ভালোবাসার পক্ষ : কথা বলবি না?
বিরোধী পক্ষ : না।
– তমালের সঙ্গে আর কথা হবে না। কোনোদিন না।
– আমার কারণে?
– হতে পারে। তোর কারণে হলে সমস্যা কী?
– হুহ!
– হুহ হাহ করবি না। ঝেড়ে কেশে বল।
– কাশাকাশির কিছু নাই। যা মন চায় কর।
– তুই রাগ করলে তো হবে না।
– জোর করে তো সায় দিতে পারি না।
– তা হলে তোর কথাই সই। আমি একা রই।
– একা থাকা দোষের কিছু না। মজা আছে।
– না।
– হ্যাঁ।
– না।
– দুই বার হ্যাঁ।
– এবার আমি চুপ।
– হুঁ।
ভালোবাসার পক্ষ থেকে কোনো শব্দ নেই।

রোমান্টিক বিরহের গল্প

আমি, মানে তৃতীয় পক্ষ সম্বিৎ ফিরে পেলার রিকশাওয়ালার কথায়। রিকশা থেকে নেমে সোজা চলে গেলাম নিজের রুমে। যেখানে ঢুকলে সব পক্ষেরই মন ভালো থাকে। খোশগল্প চলে তখন। আজ টুঁ শব্দ নেই কারও মুখে।
– অ্যাই!
– আমি বলেছি না এবার আমি চুপ!
– অ্যাই অ্যাই!
– ডোন্ট টক।
– আমি চুপ থাকতে পারি না। তুই না আমার সখি। সিগারেট খাবি একটা?
– আমি সিগারেট খাই না।
– আমি তো খাই।
– তুই খা।
– চিলেকোঠায় চল তাহলে।
– পারবো না। টায়ার্ড।
– চল, টায়ার্ডনেস কেটে যাবে। চাইলে আরও কিছু বুদ্ধি দিতে পারি। নোংরা বুদ্ধি।
– খবরদার! এখন না!
– ঠিক আছে বাবা। মদ টদ খাবি? প্রীতিকে বললে এনে দেবে।
– টাকা নেই।
– মা’র কাছে চা।
– তুই চা।
– তমাল তোকে ছ্যাঁকা দিয়েছে, তাই না রে! ইশশ।
– সে দেয়নি। আমি দিয়েছি। ও বেচারা সেটা বুঝতে পারেনি। আজ বোধদয় হয়েছে। সব দোষ তোর। আমি তাকে চাই।
– সত্যি? তমালকেই? নাকি সেই..। আচ্ছা থাক। কী বলতে আবার কী বলে ফেলি।
– বল। বলে যা। খেলারাম খেলে যা।
– তুই দেখি আমার মতো ভাবা শুরু করেছিস! শেইম অন ইউ শিরিন।
– তোর সঙ্গে তোর মতো করেই কথা বলতে হবে! শেম অন ইউ শিরিন!
– তুই এখনো তাকে ভুলতে পারিসনি। এটা জোরে জোরে বললেই হয়।
– না।
– আমি মানে, এই তমালবিরোধী পক্ষটা তৈরি হলো কী করে সেটা তো জানিস।
– জানি।
– তমাল বেচারার দোষ নেই। সে তার মতো। তুই বিভ্রান্ত।
– তাতে কী। মানুষ বিভ্রান্ত হবে না?
– আমি সেটা হতে দেব না। আমাকে তুই তৈরি করেছিস এ জন্যই।
– তুই ভাগ।
‘মা, চা দাও।’
‘ভাত খাবি না?’
‘খাব। আগে চা। পরে ভাত। তারপর কাত।’
‘তোর একটা পার্সেল এসেছে। বিদেশ থেকে।’
এবার আমি একছুটে বের হয়ে গেলাম রুম থেকে। আগে পার্সেল দেখে নিই। বিদেশ থেকে মানে তো…। নাহ ওটা পাঠিয়েছে দিলরুবা, আমেরিকা থেকে।
– তমাল তাহলে ক্লোজড চ্যাপ্টার?
– ওই চ্যাপ্টার আমার কখনো পড়াই হয়নি। তবে আমি যেমন খুশি তেমন সাজো খেলতে পারব না।
– সবাই সাজে তো।
– সাজুক। কথায় কথায় সবাইকে টানবি না। সবাই একরকম না।
– হয়েই তো গেল সমাধান। তো তমাল কেইস পুরোপুরি গন?
– হুঁ।
– একটু আগে বললি, ওকে মিস করছিস, ওকে ভালোবাসিস, কত কী।
– মিথ্যে বলেছি।
– তাহলে ব্যাক টু দ্য প্যাভিলিয়ন।
– হতে পারে।
– আসল ঘটনা তো জানি।
– জানলে জানিস।
– কচু জানিস। আসল কথা হলো তুই রতন ভাইকে ভুলতে পারিসনি। আমাকে নিয়ে এসেছিস ঠেক দেওয়ার জন্য। আমি আর পারছি না রে। আমাকে মুক্তি দে।
– পারবো না। তুই নিজে মুক্ত হ পারলে।
মনের তমাল-বিরোধী পক্ষ মানে যে পক্ষ রতন ভাইকে জিইয়ে রেখেছে, সেটা এবার দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। আমি জানি, ওই পক্ষকে পুরোপুরি ভ্যানিশ করার ক্ষমতা আর কোনো পক্ষের নেই। বড়জোর যেমন খুশি তেমন সাজো খেলতে পারি। তৈরি করতে পারি আরও দুতিনটা পক্ষ।
এখন আমার, মানে নিরপেক্ষ তিন নম্বর আমিটারও মন খারাপ লাগছে। দ্বিতীয় পক্ষ সহসা আর কিছু বলবে না। তমাল নেই তো তার কাজও নেই। আপাতত দক্ষিণা জানালা খুলে আমার একেলা পক্ষের দীর্ঘশ্বাস শোনা যাক কিছুক্ষণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!