Monday, December 23
Shadow

নগ্নতায় হিন্দির থেকে এগিয়ে কলকাতার বাংলা সিনেমা

নগ্নতায়

নগ্নতায় হিন্দির থেকে এগিয়ে কলকাতার বাংলা সিনেমা । রাজ কাপুরের সময়টা যদি বাদ দেওয়া যায়, হিন্দি সিনেমায় সে অর্থে কোনোদিনই সাহসী শুট করতে দেখা যায়নি। একমাত্র রাজ কাপুরেরই বুকের পাটা ছিল। ১৯৭০ সালে শিক্ষিকার সিক্ত দেহের দিকে তাকিয়ে ছাত্রের মোহিত হওয়ার দৃশ্য শুট করেছিলেন তিনি। তাও আবার নিজের ছেলে ঋষি কাপুরকে দিয়ে। এর পরে প্রায় প্রতিটি ছবিতেই তিনি নায়িকাদের দু’একটি দৃশ্যে খোলামেলা দেখিয়েছেন।

আরো পড়ুন :স্কাইপে একসঙ্গে ৫০ জনের সঙ্গে ভিডিও কল

ওই যুগটা ছাড়া, আর কদাচিৎ এক-আধটা ছবি ছাড়া, বলিউডে নগ্নতা সেভাবে দেখা যায়নি। বিশেষত, সম্পূর্ণ নগ্নতার তো প্রশ্নই নেই। উলটোদিকে বাংলা সিনেমা কিন্তু তুলনামূলক অনেক স্বাধীন। অনেক সাহসী। মনে পড়ে ঋ-য়ের গান্ডু বা কসমিক সেক্স? অথবা পাওলি দামের ছত্রাক? এসব খবর প্রকাশ করেছে কলকাতার একটি গণমাধ্যম।

তর্ক উঠতেই পারে। কেউ দাবি করতেই পারেন, রাজ কাপুর তো সেই কোন যুগে মেরা নাম জোকারে পদ্মিনী বা রাম তেরি গঙ্গা ময়লিতে মন্দাকিনীর স্তন ফুটিয়ে তুলেছিলেন রুপালি পর্দায়। কিন্তু সেখানে ছিল সূক্ষ্ণ আবরণ। আর যা আছে, তা হলো ব্যাকলেস। না ঢাকা পিঠ। হেট স্টোরি থেকে কুরবান। নায়িকাদের ব্যাকলেস হতে আপত্তি নেই এখনকার দিনে। কিন্তু নগ্ন হতে আপত্তি আছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই আছে। কোথাও তো সীমারেখা টানা উচিত। তবে অনেকেই অবশ্য এই লক্ষ্ণণরেখা মানতে রাজি নন। মীরা নায়ারের কামাসূত্রতে অনেক জায়গায় নগ্ন নারীদেহ দেখানো হয়েছে। তবে ওটুকুই। খুঁজলে এর বেশি উদাহরণ পাওয়া ভার। রং রসিয়াতেও অবশ্য নন্দনা সেন নগ্ন হয়েছিলেন। কিন্তু খেয়াল করে দেখুন, এখানেও সাহস দেখিয়েছেন সেই বাঙালি। তাও আবার যে সে ব্যক্তি নন। খোদ অমর্ত্য সেন আর নবনীতা দেবসেনের মেয়ে নন্দনা।

পাওলি দামের ছত্রাক যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা তো জানেন, কী ছিল সেই ছবিতে। অনুব্রত আর পাওলি পর্দায় শুধু নগ্নতায় মাতেননি। একেবারে সঙ্গমে লিপ্ত হয়েছিলেন। আর এই বঙ্গতনয় তনয়ার যৌন দৃশ্যের শুট হয়েছিল ক্যামেরায়। দেখেছিল সারা বিশ্ব। সারা বিশ্ব এই কারণেই, কারণ বিশ্বের অন্যতম স্বনামধন্য কান ফেস্টিভালে দেখানো হয়েছিল ছবিটি। প্রশংসাও পেয়েছিল প্রচুর। অনেকে বলবেন, এ যে লজ্জার বিষয়। গড়পাড়ের মেয়ে কিনা বিশ্ব বাজারে উলঙ্গ হলো? কলকাতার বাঙালির মাথা কাটা গেল। কিন্তু যাঁরা শিল্পী, তাঁরা জানেন, এক নারীদেহকে কতটা সোহাগ ঢেলে বানিয়েছে প্রকৃতি। সেই দেহ নিঃসন্দেহে আবেদনময়ী। কিন্তু সেই সঙ্গে শিল্পও ভরে আছে রন্ধ্রে রন্ধ্রে। বাংলা ছবি তাইই দেখিয়েছে। তা হোক না গুটিকয়েক। হোক না ব্যান হয়ে যাওয়া চলচ্চিত্র।

গান্ডু ছবিতে ঋ যখন উর্ধ্বাঙ্গ উন্মোচন করেছিলেন, অনেকেই তা মেনে নিতে পারেনি। আবার অনেকে সাময়িক আহ্লাদের জন্য তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করেছে সেই নগ্নতা। ঋ তখন এমন একজন নায়িকা, পর্দার সামনে জামাকাপড় খুলতে যাঁর আপত্তি নেই। কসমিক সেক্সের বেলাতেও তাই। ওখানে তো আবার ঢাক পিটিয়ে মেনস্ট্রুয়েশন দেখানো হয়েছে।

অবশ্য ঋ বলেছেন, ছবির প্রয়োজনে, স্ক্রিপ্টের প্রয়োজনে, তিনি সবই করতে পারেন। শোনা যায়, একই কথা নাকি বলেছেন পাওলি দামও। তাই ছত্রাক নিয়ে যখন সমালোচনার বন্যা বইছে, তখন পাওলি কান ফেস্টিভালে প্রশংসার আস্বাদ গ্রহণ করছেন।

তবে এঁরা ছাড়াও আরও একজন আছেন যিনি পর্দার সামনে নগ্ন হয়েছিলেন বাংলা ছবিতে। তাঁর নাম কমলিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবির না গান্ডু। সমালোচনা উদ্দেশ্য নয়। সিনেমায় বাস্তবতা ফুটিয়ে তোলার জন্য যতটা সাহসী হতে হবে… হবে। এই যে বলিউড ছবি আজ সাহসী হয়েছে বলে বড়াই করা হয়, তা কিন্তু আদতে সত্যি নয়। সাহসিকতার পথ দেখিয়েছে বাঙালি। তবে এ বললেও ভুল হবে যে শুধু বাংলা ছবিতেই নারীদেহ উন্মোচন করা হয়েছে। তামিল মেইনস্ট্রিম ছবি কুট্টু স্রাঙ্কে সম্পূর্ণ নগ্নতা দেখানো হয়েছিল। জানেন, ছবিতে কে অভিনয় করেছিলেন? তিনিও এক বাঙালি অভিনেত্রী। নাম কমলিনী মুখোপাধ্যায়।

মোদ্দা কথা, কলকাতার বাঙালি মেয়েদের বুকের পাটা আছে। অন্তত এই জায়গায় বলিউডকে হার মানতেই হবে। নিন্দুকরা অবশ্য বলবে অন্য কথা। বলবে, বাঙালি মেয়েদের জাতই নেই আর। বুদ্ধিজীবীরা বলবেন অন্য কথা। বলবেন, ওরা বড় হয়েছে। স্বাধীন হয়েছে। নগ্নতায় নগ্নতায়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!