
তরুণ সমাজের চিন্তা চেতনা সৃজনশীলতাকে কেন্দ্র করে আয়োজিত হয় বাংলাদেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইডেন মহিলা কলেজে তার তারুণ্যের উৎসব।
নবসম্ভাবনাময় তরুণ সমাজকে তাদের সৃজনশীলতা, উদ্যম ও জীবনের সফলতা সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে এটি একটি অন্যতম আয়োজন, যা তরুণ সমাজকে উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য এবং নিজের সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার জন্য একটি যথোপযুক্ত মাধ্যম। যেখানে প্রতিটি শিক্ষার্থী নিজেকে নতুন ভাবে আবিষ্কার করার লক্ষ্যে তরুণ্যের উৎসবে মেতে উঠেছে। মেতে উঠেছে স্বপ্নপূরণের মাধ্যমে নিজেকে বিকশিত করার লক্ষ্যে।
প্রতিভা ও সৃজনশীলতার এই মেলায় কলেজ অধ্যক্ষ, শিক্ষকবৃন্দ এবং বিশেষ অতিথিদের আগমনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটির শুভ সূচনা হয়। অনুষ্ঠানটির মধ্যমণি হয়ে উপস্থিত হোন প্রধান অতিথি জনাব শবনম মোস্তারী।
এ ছাড়াও বিশেষ অতিথি ফারজানা খান, অধ্যাপক ড.মমতাজ সাহানারা এবং অধ্যাপক মাহফিল আরা বেগম সহ আরো অনেকে গুণী ব্যাক্তি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। তারুণ্যের এই উৎসবটি দুটি পর্বে সঞ্চালিত হয়।
প্রথম পর্বটি আলোচনা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশে শুরু হলেও দ্বিতীয় পর্বটি শুরু হয় সৃজনশীলতার আবহে। উৎসবটির আলোচনা পর্বে তরুণদের উদ্যোক্তা হয়ে উঠার গল্প, সৃজনশীলতা বিকাশিত করার ধারা, প্রতিটি ঘরে কর্মঠ হওয়ার মাধ্যমে দেশের বেকারত্ব দূর করা এবং জ্ঞানসমৃদ্ধের মাধ্যমে নিজেকে উন্নত করার বিষয়ে অনুপ্রেরণা দেওয়া হয়।
তারুণ্যের উৎসবের মূল উদ্দেশ্য একজন শিক্ষার্থী তার শিক্ষা জীবনের পাশাপাশি বা শিক্ষা জীবন শেষ করার পরবর্তী সময়ে নিজেকে কর্মের মাধ্যমে সক্রিয় করে গড়ে তোলার পথ নির্দেশনা দেয়া। শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হওয়ার উদ্দেশ্যে বিশেষ অতিথি বিশ্ব বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ এবং নোবেল বিজয়ীর ‘তিন শুন্যের পৃথিবী’ এ ধারণাটি বিশ্লেষণ করেন। যেখানে শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য কার্বন নিঃসরণের কথা উঠে আসে, যা দারুনের উৎসবের যথার্থতা বজায় রাখে।

তারুণ্যের উৎসব মূলত শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখায়। যেখান থেকে সমাজে বেকারত্ব এবং আত্মকর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে, যা দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ঘটাবে। এক পর্যায়ে অনুষ্ঠানের সাংস্কৃত ও আলোচনা পর্বে সমাপ্তি ঘটিয়ে শুরু হয় সৃজনশীলতার মেলা। যেখানে শিক্ষার্থীরা ফ্রিল্যান্সিং :ভুবন ভ্রমিয়া, দেশীয়ভূষণ, ঐতিহ্যের বাহক গৃহনন্দন ও রান্নার নতুন স্বাদের জীবন নামক বিভিন্ন স্টল স্থাপন করেন।
স্টলগুলোতে ইডেনের শিক্ষার্থীরা তাদের হস্তশিল্প, চিত্রকলা, বুটিক্সের কাজ, দেশীয় সংস্কৃতির নানা পিঠা তৈরির মাধ্যমে সৃজনশীল কাজ প্রদর্শন ও বিক্রি করেন। এ ছাড়াও ফ্রিল্যান্সিং :ভুবন ভ্রমিয়া স্টলটিতে ফ্রিল্যান্সাররা তাদের কাজ, ডিজাইন, অনলাইন সার্ভিস, পেজের বড় পর্দা অ্যাডভার্টাইজিং এবং ব্র্যান্ডিং করার সুযোগ পান।
তাছাড়া প্রতিটি স্টলের প্রতিভাবান অংশগ্রহণকারীরা স্ব-উদ্বেগে অনলাইন ক্লাস নেয়ার সুযোগ পান। একপর্যায়ে মেলাটি পরিদর্শনে জন্য আসেন অতিরিক্ত সচিব এবং এস এম ই ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাগণ। তাদের উপস্থিতি মেলাটি কি আরো বেশি চমকপ্রদ করে তোলে। ফলে ইডেন কলেজে তারুণ্যের উৎসব আর জমজমাট ও মুখরিত হয়ে উঠে। প্রতিটি কোণায় কোণায় সৃজনশীলতার এ ছোঁয়া নতুনত্ব এনে দেয় ইডেনের প্রাঙ্গনে। তারুণ্যের এই উৎসবে প্রদর্শনের মাধ্যমে ইডেন কন্যাদের নতুন উদ্যমে ছুটে চলার গল্প শুরু হয়, যা তাদের ভবিষ্যৎ স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তোলে।
জান্নাতুল মাওয়া (রিফাত)
শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ
বিভাগ:-ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং
সদস্য, বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম।