class="post-template-default single single-post postid-22877 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

ধ্রুব নীলের বাংলা সায়েন্স ফিকশন থ্রিলার উপন্যাস রক্তদ্বীপ পর্ব-৩

রক্তদ্বীপ সায়েন্স ফিকশন

সায়েন্স ফিকশন রক্তদ্বীপ : পর্ব ১-২

রক্তদ্বীপ। পর্ব-৩।
অদ্ভুত চোরাবালি

 

 

মুখে সমুদ্রের নোনা তাজা বাতাসের ঝাপটা লাগতেই টের পেল ছুটির আমেজ। সমুদ্র মানে ছুটি!
তবে আজকের সমুদ্রটা আলাদা। কোথাও কৃত্রিম শব্দ নেই। মানুষ চোখে পড়ছে না। তুষারের মনে পড়ল গতরাতের কথা।
নাস্তা দিয়ে গেছে চিরু। মিলন বেঘোরে ঘুমুচ্ছে। ঘুমাক। নাস্তা সেরেই বের হয়েছে। সোজা গিয়ে হাজির গতরাতের ঘটনাস্থলে।
কী ঘটেছিল স্পষ্ট মনে নেই। মাঝে একবার আধো ঘুমে নিজেকে আবিষ্কার করেছিল মিলনের কাঁধে। চিৎকার, ভাঙা ঝোপঝাড় আর কাঁটাগাছের ওপর লেগে থাকা কাপড়ের টুকরোর স্মৃতিগুলো হুটহাট করে ধাক্কা দিয়ে যাচ্ছে।
‘লতিফ মিয়া গেল তাইলে।’ আঞ্চলিক ভাষায় হড়বড় করে লোকজন কথা বলছে। তবে দক্ষিণাঞ্চলের কোনো ভাষাই বুঝতে অসুবিধা হয় না তুষারের। সবার কথাবার্তা শুনে যা বুঝল, লতিফ নামের এক জেলে নিখোঁজ হয়েছে। অবশ্য কেউ নিখোঁজ বলছে না। কারণ সে নাকি আর ফিরে আসবে না। কেউই আসেনি এখন পর্যন্ত।
ঝোপের কাঁটায় বেঁধে থাকা লুঙ্গিটা লতিফের। লাশের খোঁজ নেই। দিনের বেলায় আলো খুব কমই ঢোকে এদিকটায়। আশপাশটা ভাল করে দেখল তুষার। অস্বাভাবিক কিছু নেই। কিছু লতানো গাছ। ওগুলো চিনতে পারছে না তুষার।
‘নতুন? ভাগেন ভাগেন।’
কথাটা বলল এক বৃদ্ধ। হাসল তুষার।
‘নিশিকান্তর বাড়িতে আছি। জায়গাটা সুন্দর। কটা দিন বেড়িয়ে যাই।’
‘আহা বুইড়াটা। ভয়ডর নাই। সবাই মরতাসে, সে কুসুমচর ছাইড়া যাইব না।’
বৃদ্ধের মতো বাকিরাও যার যার কাজে চলে গেল। যেন গতরাতের একজনের গায়েব হয়ে যাওয়াটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা।
লাল টিশার্ট, জিন্স আর সাদা কেডস পরা তুষার ঝোপ ধরে হাঁটতে লাগল দক্ষিণ-পুবের দিকে। গতরাতে রেখে যাওয়া নিজেদের জুতোর ছাপ পেতে সমস্যা হলো না। আচমকা নেমে আসা ঘুমরহস্যেরও কিনারা পাচ্ছে না।
পায়ের সঙ্গে একটা কিছু বিঁধতেই চমকে উঠল। একটা লতানো গাছ। হাঁফ ছাড়ল তুষার। বাস্তবে তো দূরের কথা, মানুষখেকো গাছ আজকাল গল্পেও থাকে না। ঠিক করেছে ঢাকায় ফেরার সময় দুয়েকটা স্যাম্পল নিয়ে যাবে। অনেকগুলো কারনিভোরাস আছে। দ্বীপটাকে কীটপতঙ্গরা সম্ভবত এ কারণেই এড়িয়ে চলে।
একটা অদ্ভুত ব্যাপার খেয়াল করেছে। এখন পর্যন্ত দ্বীপে একটা পাখি চোখে পড়েনি। এ কারণেই কি দ্বীপের নীরবতাটা মাঝে মাঝে ভীতিকর ঠেকে!
সকাল এগারোটা পেরিয়ে গেছে। এই দ্বীপে সময়ের হিসাব রেখেও লাভ নেই। সকাল সন্ধ্যা একই নিস্তব্ধতা।
আরো খানিকটা হাঁটবে ঠিক করল তুষার। পুবের কোণা ছাড়িয়ে আরো উত্তরে। যতদূর চোখ যায় কয়েকটা জেলে নৌকা ছাড়া কেউ নেই। সমুদ্র এদিকে শান্ত।
ঘটনাটা ঘটল ধীরেসুস্থে। সতর্ক হওয়ার সুযোগ পেল না তুষার। বুঝতে পারল দেরি হয়ে গেছে। প্রথমে দেবে দেবে গেলেও পরে আটকেই গেল। চোরাবালি!
ঝাড়া কয়েক সেকেন্ড চোখ বুঁজে মনে করার চেষ্টা করল কী করতে হবে। নড়াচড়া করা যাবে না একদমই। নির্জন সৈকতে গলা ফাটিয়ে চিৎকার দিয়েও লাভ নেই। তবে কি গতরাতের লোকটা চোরাবালিতেই…।
ভয়টা একটা অতিকায় ড্রাগনের মতো গিলে নিতে শুরু করেছে তুষারকে। ক্রমশ অন্ধকার একটা ছায়ার মতো চেপে ধরেছে। যেন চোরাবালি নয়, কোনো দানব তাকে টেনে হিঁচড়ে নিচে নামাচ্ছে। এক পায়ে ভর দিয়ে আরেক পা তোলার চেষ্টা করল। কাজ হবে না জানে। তারপরও কিছু করার তাগাদা দিচ্ছে মন। মৃত্যু চোখের সামনে তাথৈ নাচছে। চিৎকার করল তুষার। ‘বাঁচাও!’
নাহ যথেষ্ট নয়। এত দূর থেকে জেলেরা তাকে দেখবেও না।
কোমর পর্যন্ত ডুবে গেছে। দেবে যাওয়ার গতিটা কি বেড়ে গেল! ঝপ করে মনে হলো গোটা দ্বীপে নেমে আসছে অন্ধকার। আবারো সমস্ত শক্তি দিয়ে চিৎকার ছুড়ল।
‘আস্তে! কানের পর্দাটা ফাটিয়ে দিবি তো! বাংলা সিনেমার মতো বাঁচাও বাঁচাও করছিস কেন? এ ধরনের বিপদে টারজানের মতো চিৎকার করবি। আ আ আ করে। সেটাই বেশিদূর পৌঁছাবে। বাঁচাও বলাটা একটু কঠিন।’
ঝপ করে আবার একরাশ আলো। ভয়ের যে দানবটা আঁকড়ে ধরেছিল, পাখা ঝাপটে উড়ে গেল ওটা।
‘একা একা বের হয়েছিস, আমাকে ডাক দিবি না?’
পশ্চিম সমুদ্রে তাকিয়ে হাই তুলল মিলন। হাতে একটা বাঁশ। ওটার একটা মাথা বাড়িয়ে ধরে আছে তুষারের দিকে। মুখটাকে যতটা সম্ভব নির্বিকার রাখার চেষ্টা করছে। দেখেও দেখছে না ভাব।
কোমরটাকে মোচড় দিয়ে দুহাতে বাঁশ আঁকড়ে নিশ্চিত মৃত্যুফাঁদ থেকে উঠে আসছে তুষার।
‘প্যান্টটা গেল।’
‘ওটা খুলেই হাঁট। এদিকে কেউ নেই।’
‘সেটা নিয়ে পরে গবেষণা করা যাবে। আগে সমুদ্রে নামি।’
‘হুম। কাঁকড়া ধরবো। রাতে ফ্রাই করে খাব। আগামী চৌদ্দ দিন আর ভূতের ভয় নেই। কেউ মরবে না।’
‘বলিস কি! মনে হয় এ কারণে বেঁচে গেছি! থ্যাংকু ভূত মামা!’
সমুদ্রে প্যান্টের বালি আর কাদা পরিষ্কার করছিল তুষার। এমন সময় উত্তর দিক থেকে চিৎকার। দৌড় লাগাল দুজন।
রাস্তা কম নয়। পাম, ঝাউ আর নারকেল গাছের সারির ফাঁক দিয়ে পায়ে হাঁটা রাস্তা গেছে এঁকেবেঁকে। ওটার সামনেই তিন-চার জনের জটলা। একজন পড়ে আছে মাটিতে। মাথা ফেটে রক্ত পড়ছে দরদর করে। রক্ত গড়ানোর আগেই শুষে নিচ্ছে বালিমাটি। পাশেই পড়ে আছে একটা ডাব। ওটাই পড়েছে কপাল বরাবর। ফেটে মগজ বেরিয়ে এসেছে খানিকটা।
‘রবুর কপাল পুরাই খারাপ।’ পাশে দাঁড়ানো এক প্রৌড়া বললেন। এমন সময় চিৎকার করতে করতে ছুটে এলো আরেক নারী। কান্নার দমক বলে দিচ্ছে ও রবুর স্ত্রী। মিলন আরো কয়েকজনকে নিয়ে ধরাধরি করে নিথর দেহটাকে সরিয়ে আনল। তুষার এক ফাঁকে পালস চেক করল। মারা গেছে। বাকিদের সরে আসতে বলল গাছের গোড়া থেকে।
রবুর মাথায় পড়া ডাবটা হাতে নিল তুষার। দেখলো ভাল করে। ডাব মাথায় পড়ে খানিকটা ফেটে গেছে। কাঁচা ডাব এভাবে ছিঁড়ে পড়ে যাওয়ার কথা নয়। ডাবের মুখ যেখানে ছিল, সেখানে একটা থিকথিকে জলীয় পদার্থ। অবচেতনে আঙুল দিয়ে খানিকটা জিভে ছোঁয়াল। ‘থু!’ তিতক‚টে স্বাদটা মুখে লেগে রইল তুষারের।
‘আইজকাই আমাগো চইলা যাওনের কথা ছিল। আমারে ফেলাইয়া আপনে আগেই গেলেন ক্যান!’ রবু মিয়ার পাশে পড়ে থাকা বোঁচকা ধরে বিলাপ করছে রবুর স্ত্রী। পাশের আরেক জন বলল, ‘কুসুমচরের টান এত সোজা না বুঝলি শিউলি। কুসুমচর যারে ছাড়ে না সে যাইতে পারে না। এখানেই তার মরণ লেখা।’

সন্ধ্যায় মাছ আর কাঁকড়া ভাজার আয়োজন করেছে বুড়ো নিশিকান্ত। এই বয়সেও পাকা শিকারি। নেটের জাল দিয়ে কাঁকড়া ধরে।
একদিন থেকে চলে যেতে হবে দুজনকেই। রাতে আর বের হলো না। ধকল গেছে ঢের। রবু মিয়াকে মাটিচাপা দিতে গিয়েও ঝামেলায় পড়েছিল। খানিকটা খুঁড়তেই থিকথিকে কাদা বের হয়ে আসে। বোঁটকা গন্ধ। এ কারণেই সম্ভবত দ্বীপে ফসল হয় কম। যে গাছগুলো এ মাটি সহ্য করতে পারে, সেগুলোই টিকে আছে কেবল।
পরদিন একটা ভ্যান পেয়ে গেল তুষাররা। দ্বীপটা ঘুরল। একগাদা ছবিও তুলল। ঘোরার সময় মিলন কাগজে কিসের যেন নকশা এঁকেছে আপনমনে।
দ্বীপের লোকজনের সঙ্গে কথা বলছে তুষার। লোকজন কম। গুনতে গেলে শখানেক হবে কিনা সন্দেহ আছে। অনেকগুলো খালি বাড়িও চোখে পড়ল।
‘সবাই পালিয়েছে। নইলে একজন একজন করে তো মরবেই।’
চলন্ত ভ্যানেই কাগজের ওপর ঝুঁকে আঁকিবুঁকি চলছে মিলনের।
‘পূর্ণিমা-অমাবস্যা ছাড়া কি এখানে কেউ মরে নাই?’
‘জানি না। মরতেও পারে। খবরদার আমাকে বিজ্ঞান বোঝাতে আসবি না।’
‘খেপে যাস না। খেপলে তোর শিল্পকর্ম নষ্ট হবে। পিকাসো হতে পারবি না।’
‘শিল্পকর্ম করার টাইম নাই! আমি দ্বীপের মানচিত্র আঁকছি। শেষের দিকে।’
‘বলিস কি! তুই তো আসলেই কলম্বাস! মানচিত্র দিয়ে কী করবি? সবাই ভেগে গেলে দ্বীপে একা থাকবি?’
আবারো চুপচাপ দুজন। নিজের শেষ কথাটা নিজের কানেই কেমন অন্যরকম ঠেকল। কথার ভেতর তাজা অ্যাডভেঞ্চারের গন্ধ। দ্বীপটাকে কেউ জনমানবশূন্য করতে এই খুনগুলো করছে না তো? উড়িয়ে দিল চিন্তাটা। চোখকেও তো বিশ্বাস করতে হয়। অমন মধ্যরাতে কেউ অন্তত খুনির দেখা পেয়ে ওভাবে চিৎকার করবে না। একটা কিছু তো আছেই।

সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসতেই আবার নিশিকান্তের বাড়িতে হাজির দুজন। চিরুর সঙ্গে এর মধ্যে খাতির জমেছে। পুরনো অনেক গল্প শোনা হয়েছে।
নিশিকান্ত জানালেন তিনি এই দ্বীপে এসেছেন বেশিদিন হয়নি। শুরুর দিকে বেশ মানুষজন ছিল বটে। এখন বলার মতো আছে কেবল কয়েকটার টিনের বাড়ি আর কিছু পরিত্যক্ত কুড়েঘর। সেগুলোও নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। আগে নাকি অনেক হাঁটাচলার রাস্তা ছিল। আচমকা নাকি রাস্তাগুলো সব জঙ্গলে ভরে গেছে।
‘ভরা কাটালের নিশির ডাকের ঝড় তোমরা দেখো নাই। সে কি খেপা ঝড়। একবার উঠলে এক শ মরণের আগে থামন নাই।’
‘এক শ জন মারা গেলে ঝড় থেমে যেত?’ ভ্রূ কোঁচকাল তুষার।
‘লগে লগে থাইমা যাইত। কুসুমচরের কাজ কারবার বড়ই অদ্ভুত। বড়ই অদ্ভুত।’
‘আপনি পড়ে আছেন কেন? মানুষজনই বা আছে কেন?’
বুড়ো যে বাড়িয়ে বলছে সেটা আর ধরিয়ে দিতে গেল না তুষার।
‘বাপ দাদার আমল থেইকা এখানে যারা আছে তারা যাইব কই। আমি বুড়া মানুষ। তয় একটা অনুরোধ বাবাজি। তোমরা চিরুরে লইয়া যাও। ঢাহা শহরে একটা কামকাজ দিও। এইখানে থাকলে না জানি আবার কবে…।’
প্রতিবাদ করল চিরু।
‘মইরা গেলেও যামু না। আর দেখুম কোন দানো আমারে কী করে। এক্কেরে গলা টিপ্পা ধরমু।’
রাতের খাবার সেরে জিরিয়ে নিল দুজন। গত দুদিনে চোখের সামনে দুটো মৃত্যু খানিকটা বিষণœ করে তুলেছে দুজনকেই। হাঁটতে বের হলো। অবচেতন মনেই হাজির সেই পুবের কোণে। অন্ধকারে টর্চ জ্বালিয়েই ঘুরছে। চোরাবালির জায়গাটা খুঁজে বের করল। অবাক হলো। জায়গাটা শুকনো খটখটে।
‘সমুদ্রের ব্যাপার স্যাপার একটু আলাদা।’
মিলন নিজের মতো যুক্তি দাঁড় করায়। সামনে সামনে হাঁটছে। যেন বিপদ আসলে আগে সে-ই সামাল দেবে।
‘তুই কিছু ভাবছিস? মানে কোনো বুদ্ধি শুদ্ধি?’ জানতে চাইল মিলন। ভাবনায় ডুব মেরে আছে তুষার। মাঝে মাঝে উবু হয়ে মাটিসহ গাছের চারা ব্যাগে ভরছিল।
‘আমার মাথায় একটা বুদ্ধি…।’
‘আমি জানতাম!’ ঝলমল করে উঠল মিলনের গলা। বন্ধুর প্রতি পুনরায় আস্থা ফিরে এলো যেন।
‘ইয়ে মানে..।’
‘আরে তোকে কি আমি এমনি এমনি টেনে এনেছি! তুই হলি মিনি শার্লক হোমস। না, মিনি না। পুরাই গোয়েন্দা। তুই-ই পারবি এর সমাধান করতে।’
তুষার আমতা আমতা করছে। সে নিশ্চিত তার বুদ্ধিটা মিলনের পছন্দ হবে না।
‘আগামী অমাবস্যার আগে আমরা আসব।’
‘আমি জানতাম! হে হে। আমি জানতাম তুই এ কথাই বলবি।’
‘কিন্তু আরো কাহিনি আছে। আমরা আসবো দুদিন আগে। বা তিন দিন আগে।’
‘হুম। ভূতের সঙ্গে লড়াই করার একটা প্রস্তুতি তো দরকার।’
‘ব্যাপারটা তা না। আমরা দুদিন আগে থেকে কুসুমচরের সবাইকে পাশের কোনো চরে বা দ্বীপে বা নিদেনপক্ষে সমুদ্রের বেশ খানিকটা দূরে চলে যেতে বলব। তারা এতে রাজি হবেই।’
ভ্রূ কুঁচকে তাকাল মিলন। খটকা লেগেছে। বুঝতে পারল বন্ধুর বুদ্ধিতে বড় ঘাপলা আছে।
‘তারপর?’
বড় করে দম নিল তুষার। নিজের সাহস নিয়ে কিছুটা সংশয় তার আছে। ভয়টাকে আপাতত পকেটে ঢুকিয়ে বলেই ফেলল কথাটা।
‘আগামী অমাবস্যার রাতে এই দ্বীপে কেউ থাকবে না। শুধু আমরা দুজন থাকব। দেখি না কী হয়।’

 

সায়েন্স ফিকশন রক্তদ্বীপ।

#বাংলা সায়েন্স ফিকশন

#সায়েন্সফিকশন

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!