বর্তমানে এসিডিটির সমস্যা একটি সাধারণ সমস্যা। যাকে আমরা অনেকেই পেটে গ্যাস হিসেবে চিনে থাকি। সাধারণত দীর্ঘদিন খাবারে অনিয়মের ফলে পেটে গ্যাস হয়। এছাড়া আরও অনেক কারণ আছে। তাই কী খেলে পেটে গ্যাস হয় সেই তালিকা জানতেও আগ্রহ থাকে অনেকের।
সাধারণত অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার পেটে গ্যাস উৎপাদন করে। তৈলাক্ত খাবারে শরীরে অস্বস্তি হতে পারে, তবে সেটা যদি সাময়িক হয় তবে ততটা চিন্তার কিছু নেই। তবে কারও যদি এটা নিত্যদিনের সমস্যা হয় তবে, চিকিৎসার পাশাপাশি যেসব খাবারে এই সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে সেগুলোর খাওয়ার ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।
আবার সব খাবার যে পেটে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা তৈরি করে তা নয়। একেক জনের একেক খাবারে সমস্যা দেখা দেয়। তবে কিছু খাবার আছে যা সাধারণভাবে “গ্যাস উৎপাদনকারী” হিসেবে পরিচিত। এ খাবারগুলো হল-
পেঁয়াজ: কাঁচা পেঁয়াজ খেলে পেট ফাঁপে বা পেটে গ্যাস হয় তা যেমন ঠিক, তেমনি রান্না করা পেঁয়াজে কিন্তু সেরকম কিছু হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। তাই কাঁচা পেয়াজ খেলে যারা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভোগেন, তাদের কাঁচা পেঁয়াজ না খাওয়াই ভালো।
চিনি: চিনির কারণেও অনেকের পেটে গ্যাস হয়। চিনিতে সমস্যা হলে এটি খাওয়ার ক্ষেত্রে সাবধান হতে হবে।
ঢাকার ভালো হার্টের ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়ার পদ্ধতি
শস্যদানা: শস্যদানা জাতীয় খাবারও পেটে গ্যাস তৈরি করে। তাই অনেকের রুটি খেলেও পেট ফাঁপতে পারে। তবে সেটা তখনই হতে পারে যখন রুটিটি একদম তাজা, অর্থাৎ চুলা থেকে নামিয়েই সাথে সাথে খাওয়া হয়। তবে কিছুক্ষণ পর, অর্থাৎ দু’তিন-ঘণ্টা পরে খেলে আর গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয় না।
ক্রিম: কেকের ওপর একটু ক্রিম ছড়িয়ে দিলে কেকের স্বাদ বেড়ে যায় দ্বিগুণ। অনেকে কিন্তু এরকম লোভনীয় কেক খেতে ভীষণ পছন্দ করেন। তবে প্রোটিন আর ফ্যাট একসথে পেটে থাকতে তেমন পছন্দ করে না, ফলে অনেকের পেট ফাঁপতে পারে ক্রিম খেলে।
কিশমিশ: অধিক হারে কিশমিশ খেলেও আবার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। মিষ্টি খাবারে দেয়া রান্না করা কিশমিস খেলে তেমন অসুবিধা হয় না। তবে শুধু কিশমিস খাওয়া কারো কারো পেটে গ্যাস হওয়ার কারণ হতে পারে।
কোমল পানীয়: বাজারে পাওয়া যাওয়া বিভিন্ন ধরণের কোমল পানীয় সহজেই আপনার পেট ফুলিয়ে দিতে পারে। আসলে পানীয়তে থাকা মিষ্টিই এর জন্য দায়ী। এ সব মিষ্টি পানীয় শুধু পেটই ফাঁপায় না, সেই সাথে ওজনও বাড়ায়। তাই বিশেষজ্ঞরা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে বাঁচতেও এ সমস্ত পানীয় থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
কিছু সবজি: বাঁধাকপি, ফুলকপি, ক্যাপসিকাম, ব্রকলি, গাজরের মতো অনেক সবজি থেকেও কিন্তু পেটে গ্যাস হতে পারে। তবে এসব সিদ্ধ বা রান্না করা সবজি খেলে পেটে গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা কম।
চুইংগাম: চুইংগাম চিবোনোর সময় সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। কারণ চুইংগাম চিবানোর ফলে পেটে অনেক বেশি বাতাস ঢোকে আর তা থেকেও অনেক সময় পেট ফাঁপতে পারে বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে।
কী খেলে পেটে গ্যাস হয়
কফি: কফির ‘ক্যাফেইন’ অনেকেরই পেটে অস্বস্তির কারণ হয় এবং তা থেকেও পেটে গ্যাস হতে পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যে কফি পানের ঠিক আগে বা পরেই যেন ফলমূল না খাওয়া হয়। কারণ ফল খাওয়ার ফলে সমস্যা আরও বেশি হয়।
শিম বা ডাল: বিভিন্ন ধরনের ডালে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন, যা মাংসের বিকল্প হতে পারে। ডাল, শিম বা বিচি ভালো করে সিদ্ধ হলে এবং যথেষ্ট পানি থাকলে পেটে গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
মিনারেল ওয়াটার: মিনারেল ওয়াটারে থাকা কার্বোনিক অ্যাসিড পান করার ফলেও অনেকেরই পেট ফাঁপে।
এছাড়া, আইসক্রিম, বিভিন্ন ধরনের ফাস্টফুড, বিভিন্ন ধরনের ফল যেমন কলা, নাসপতি, আঙ্গুর, জাম ইত্যাদি। পাউরুটি ও পাস্তা খেলেও গ্যাসের সমস্যা হতে পারে।তাই এসব খাবার গ্রহণ করার আগে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়াও জরুরি।
কী খেলে পেটে গ্যাস হয় শিরোনামে লেখাটি লিখেছেন সানজিদা নূর।