টিভি চ্যানেলগুলো নাচের শিল্পীদের মূল্যায়ন করে না : নাদিয়া
টিভি নাটকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নাদিয়া আহমেদ। প্রথমবারের মতো একটি রিয়েলিটি শো উপস্থাপনা করছেন। এটির নাম ‘রুপচাদা সুপার শেফ’। আসছে ঈদের পর থেকে চ্যানেল আইতে এই রিয়েলিটি শোটি প্রচার হবে বলে জানান তিনি। অনুষ্ঠানটি প্রসঙ্গে নাদিয়া বলেন, প্রথমবার রিয়েলিটি শো উপস্থাপনা করছি। কারণ এটির পরিকল্পনা অন্যগুলোর চেয়ে ব্যতিক্রম। আমার ক্যারিয়ারে এর আগে গেল রমজানে মাছরাঙা টিভিতে একটি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেছিলাম। এবার দ্বিতীয়বারের মতো এটিতে থাকছি।
উপস্থাপনা আমাকে খুব বেশি একটা টানে না। কিন্তু ভালো কিছু হলে সবারই ইচ্ছে থাকে তাতে অংশ নেয়ার। সেই ভালো লাগা থেকে আগের অনুষ্ঠানটি এবং এখন এই রিয়েলিটি শোটি উপস্থাপনা করেছি।
এই সময়ে আমার ঈদের নাটকে ব্যস্ত থাকার কথা। কিন্তু এই অনুষ্ঠানটির ভিন্নতার কারণে ঈদের নাটকের শুটিং বাদ দিয়ে এটি করছি। গতকাল ছিল ‘রুপচাদা সুপার শেফ’ অনুষ্ঠানের ফাইনাল পর্বের শুটিং। এতে বিচারক হিসেবে আছেন অভিনেতা তারিক আনাম খান, শেফ ট্রেইনার নাফিজা ইসলাম লিপি ও রঙ্গনন নামে একজন ভারতীয় নাগরিক। এদিকে এই অভিনেত্রী এরইমধ্যে আসছে ঈদের ‘ইত্যাদি’তেও অংশ নিয়েছেন বলে জানান। ঈদের ম্যাাগাজিন অনুষ্ঠান ‘স্মাইল শোতে’-ও দেখা যাবে তাকে। আগামীকাল নাদিয়া মন্নু সিরামিকের একটি বিজ্ঞাপনের শুটিং করবেন। এটি নির্মাণে থাকবেন আলী ইমরান।
তারপরেই টানা ঈদের নাটকের শুটিং শুরু করবেন এই অভিনেত্রী। নাদিয়া বলেন, টানা ১৭ দিন ঈদের নাটকের শুটিং করবো। বেশ কয়েকটি নাটকের স্ক্রিপ্ট জমা আছে। ঈদে আমার নাটকের সংখ্যা কম থাকবে। তবে ভালো কিছু নাটকে দর্শক আমাকে পাবে। বরাবরই আমি চেষ্টা করি ভালো কাজের সঙ্গে থাকতে। দীর্ঘ সফর শেষে গেল ১২ই এপ্রিল এই অভিনেত্রী আমেরিকা থেকে দেশে ফেরেন। আর ফিরেই কাজ শুরু করে দেন। বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচার হচ্ছে তার অভিনীত একাধিক ধারাবাহিক নাটক। তার হাতে আছে মিজানুর রহমান আরিয়ানের ‘গল্পগুলো আমাদের’, ডিকে আকাশের ‘ক্যাট হাউজ’, জাবির রাসেলের ‘বিড়ম্বনা’, তুষার খানের ‘বহে সমান্তরাল’, হিমু আকরামের চম্পাকলি’, ফজলুর রহমানের ‘উল্টো পথে উল্টো রথে’, শামিম জামানের ‘সব জান্তা শমসের’, অঞ্জন আইচের ‘অর্ধেক সত্য’ ও জুয়েল শরীফের ‘বড় বাড়ি’ শিরোনামের ধারাবাহিকগুলো। অভিনয়ের বাইরে নাদিয়া নাচেও দারুণ সমাদৃত।
তবে দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর নাচের অনুষ্ঠান নিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তার মতে, অনেক চ্যানেলেই বিশেষ দিবসেও নাচের শিল্পীদের দিয়ে অনুষ্ঠান করে না। এক্ষেত্রে ট্রেন্ড চালু হয়েছে নাচের মূল শিল্পীদের না নিয়ে অন্য মাধ্যমের পরিচিত কিছু মুখকে দিয়ে নাচের অনুষ্ঠান করানো। একটি অনুষ্ঠানে হয়তো বিশেষ কাউকে রাখা যায়। তাই বলে পুরো অনুষ্ঠান তাকে দিয়ে শেষ করতে হবে এটি কেমন বিষয়! নাদিয়া বলেন, প্রায় চ্যানেলের প্রযোজকদের কাছে শুনতে হয় নাচের অনুষ্ঠানের জন্য বাজেট নেই। অথচ টেলিভিশনের বিনোদনমূলক বেশিরভাগ অনুষ্ঠানই শুরু হয় নাচ দিয়ে। কোনো অনুষ্ঠানের মধ্যভাগে নাচ থাকে।
আবার শেষও হয় নাচের মধ্য দিয়ে। সত্যি বলতে, টেলিভিশন চ্যানেলগুলো নাচের শিল্পীদের মূল্যায়ন করে না। ১৯৮৬ সালে বিটিভির ‘শিশুমেলা’ নামের একটি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে টিভি পর্দায় আসেন নাদিয়া। পরবর্তিতে ১৯৯০ সালে ‘নতুন কুঁড়ি’ প্রতিযোগিতায় অভিনয়ে তৃতীয় স্থান অধিকার করেন তিনি। সেই সময় ‘বারো রকম মানুষ’ শিরোনামের একটি ধারাবাহিক নাটকের মাধ্যমে অভিনয় জগতে পা রাখেন। দীর্ঘ সময় অভিনয়ে টিকে থাকার রহস্য কি? নাদিয়া বলেন, একজন শিল্পীকে তার ভালো কাজের মধ্য দিয়ে দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা ধরে রাখতে হয়।