বাংলাদেশের ইতিহাসের দিকে একটু আভাস দিলে আমরা দেখতে পাব আঞ্চলিক আধিপত্য বিস্তারের জন্য বিভিন্ন রাজ্য ও সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকার। কিছু প্রাচীন অবকাঠামোর অস্তিত্ব আমাদের আরও স্মরণ করিয়ে দেয় এসব। নওগাঁ বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী স্থান। ইতিহাসের সাক্ষী চিত্রিত করার ক্ষেত্রে নওগাঁর বলিহার রাজবাড়ী একটি জীবন্ত উদাহরণ। প্রাচীন বলিহার রাজবাড়ী নওগাঁ জেলা শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে বলিহার ইউনিয়নে অবস্থিত।
মুঘল আমলে সম্রাট আওরঙ্গজেব বলিহারী জমিদারকে এই জমির মালিকানা দিয়েছিলেন। পরে তিনি সেখানে বলিহার রাজবাড়ি প্রতিষ্ঠা করেন। এটি প্রধানত একটি দ্বিতল ভবন যার একটি সুবিশাল খিলান প্রবেশদ্বার রয়েছে। রাজবাড়ীতে প্রবেশের পর দর্শকের চোখে পড়বে এটি। নাট মন্দির, রাজ রাজেশ্বরী মন্দির, জোড়া শিব মন্দির, এবং দুটি শিবলিঙ্গ সেখানে দেখা যায়। তাছাড়া মন্দিরের অভ্যন্তরের কাজ এর সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
1823 সালে, বলিহারের তৎকালীন জমিদার মন্দিরের ভিতরে দেবী রাজ রাজেশ্বরীর একটি লোভনীয় ভাস্কর্য স্থাপন করেন। বলিহার এস্টেট এলাকায় 330টি পুকুর এবং একটি বড় জলাধার ছিল কিন্তু বর্তমানে তার মধ্যে কয়েকটি অবশিষ্ট রয়েছে। মন্দিরের একটি ভবন স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হলেও বর্তমানে তা অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে। এছাড়াও, মন্দিরের ভিতরে এখনও নিয়মিত পূজা করা হয়।
বলিহার রাজবাড়ী কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সরাসরি বাসে করে নওগাঁ যাওয়া যায়। এসি এবং নন-এসি উভয় ধরনের বাসই এই বিষয়ে উপলব্ধ। নওগাঁ বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে নওগাঁ মহাদেব সড়ক হয়ে রাজশাহীগামী বাসে উঠতে হবে। সেই বাসটি বলিহারের গন্তব্যে নিয়ে যাবে। আরও নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে বলিহার কলেজের উত্তর দিকে বলিহার রাজবাড়ি অবস্থিত।
নওগাঁয় কোথায় থাকবেন আর কী খাবেন
আবাসিক সংকট নিয়ে দর্শকদের মোটেও চিন্তা করতে হবে না। নওগাঁয় প্রচুর আবাসিক হোটেল পাওয়া যায়। একজনের তাদের পছন্দের একটি বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা রয়েছে। খাবারের ক্ষেত্রে নওগাঁর বিখ্যাত ঐতিহ্যবাহী খাবার “সন্দেশ” এর স্বাদ নেওয়া আবশ্যক। এটি ব্যাপকভাবে “পেরা সন্দেশ” নামে পরিচিত। তাছাড়া বালুডাঙ্গা বাস স্টেশনের কাছে কিছু সাধারণ দোকান আছে। এছাড়া গোড়াহাটির কোণায় বেশ কিছু ভালো মানের খাবারের রেস্টুরেন্ট পাওয়া যায়।