ক্ষমতাসীনদের কাছ থেকে রাজধানী ত্রিপলীর নিয়ন্ত্রণ নিতে খুব কাছে চলে এসেছে লিবিয়ার পশ্চিমাঞ্চল নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মি- এলএনএ। লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মির সদস্যরা যত রাজধানী ত্রিপলীর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তত ঘনীভূত হচ্ছে আরো একটি রক্তক্ষয়ী সংঘাতের। এ অবস্থায় বিশ্ব সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপে প্রাণহানি এড়িয়ে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের দিকে তাকিয়ে উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার সাধারণ মানুষ।
এ অবস্থায় সশস্ত্র গোষ্ঠীটির প্রধান খলিফা হাফতারের সঙ্গে বৈঠক করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
তবে হাফতারের সঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিবের বৈঠকের নিন্দা জানিয়ে রাশিয়া বলেছে, রাজধানী ত্রিপলী অভিমুখে এলএনএর অভিযাত্রাকে কখনোই সমর্থন দেবে না মস্কো। আর রক্তপাতবিহীন শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি দেশ।
পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রাজধানী ত্রিপলীর দিকে অগ্রসর হচ্ছে লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মি- এল এন এর সদস্যরা। কৌশল আঁটছে জাতিসংঘ সমর্থিত ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীকে হটিয়ে ত্রিপলীর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার। একইসঙ্গে যাত্রাপথে বিভিন্ন এলাকা দখলেরও দাবি করেছে এলএনএ।
লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মির মুখপাত্র আহমেদ মিসমারি বলেন, আজিজিয়া এখন আমাদের নিয়ন্ত্রণে। এর আশেপাশেরও বেশ কয়েকটি শহরের দখল দিয়েছে আমাদের যোদ্ধারা। তাই বলা যায়, আমরা ত্রিপলীর ভেতরেই আছি। অচিরেই আমরা রাজধানীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবো বলে আশা করছি।
ন্যাশনাল আর্মির সদস্যরা যখন রাজধানী ত্রিপলীর নিয়ন্ত্রণ নিতে প্রস্তুত, তখন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ তাদের ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। অন্যদিকে শুক্রবার (৫ এপ্রিল) লিবিয়ার পূর্বাঞ্চল সফর করে এলএনএ প্রধান জেনারেল খলিফা হাফতারের সঙ্গে বৈঠক করেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তবে বৈঠক শেষে তিনি হতাশা প্রকাশ করে গভীর উদ্বেগের কথা জানান।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, গভীর উদ্বেগের সঙ্গে আমরা লিবিয়া পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। পরিস্থিতি যেদিকে গড়াচ্ছে, তাতে বড় ধরণের রক্তপাতের আশঙ্কা রয়েছে। তবে আমি এখনো আশাবাদী প্রাণহানি এড়িয়ে লিবিয়ায় একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান আসবে। জাতিসংঘ সব সময় সাধারণ লিবিয়ানদের সমর্থন দিয়ে যাবে।
চলমান উত্তেজনার মধ্যে রাশিয়া জানিয়েছে, রাজধানী ত্রিপলীর দিকে অগ্রগামী লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মিকে সমর্থন দেবে না মস্কো। একইসঙ্গে এলএনএ প্রধানের সঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিবের বৈঠকেরও সমালোচনা করা হয়। শুক্রবার ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে উভয় পক্ষকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে চলমান উত্তেজনা প্রশমনে পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। আর সামরিকভাবে কোনো সমস্যার সমাধান হবে না উল্লেখ করে, সব পক্ষকে অবিলম্বে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।