শরীরের আছে নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা
জীবাণুর কারণে নানা ধরনের অসুখ-বিসুখ হয়। আশার কথা যে এসব জীবাণু প্রতিরোধে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের রয়েছে নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা। ফলে অসুখ-বিসুখমুক্ত থাকা সম্ভব। যখনই দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোর রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বহিরাগত জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়ে পরাজিত হয়, তখনই আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি। মানব শরীরে রোগ প্রতিরোধের এমন কিছু নিজস্ব চমত্কার ব্যবস্থাপনা রয়েছে।
ত্বক
দেহের জীবাণু সংক্রমণ প্রতিরোধের প্রথম ঢাল হলো ত্বক, যা দেহের অভ্যন্তরে রোগ-জীবাণু ঢুকতে বাধা দেয়। ত্বকগ্রন্থি ও ঘর্মগ্রন্থি থেকে নিঃসরিত ফ্যাটি এসিড, ল্যাকটিক এসিড, এসিড পি-এইচ—এসব বিভিন্ন রোগ-জীবাণু মেরে ফেলে। ত্বকের ঘর্মগ্রন্থি থেকে নিঃসরিত ঘাম এসব মৃত রোগ-জীবাণু ধুয়ে নিয়ে যায়।
মিউকাস মেমব্রেন বা শ্লৈষ্মিক ঝিল্লি
মিউকাস মেমব্রেন থেকে নিঃসরিত হয় মিউকাস বা পিচ্ছিল শ্লেষ্মা। এগুলো থাকে দেহের বহিঃত্বক কোষ বা এপিসেলিয়াল সেলের ভেতর। বহিরাগত রোগ-জীবাণুগুলো মিউকাসের পিচ্ছিল রসে আটকে যায়। পরবর্তী সময়ে এগুলো বিশেষ পদ্ধতিতে বের করে দেওয়া হয়।
নাক
আমরা নাক দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নিই বা ছাড়ি। এই নিঃশ্বাসের মাধ্যমেই বাইরের পরিবেশ থেকে অগণিত রোগ-জীবাণু নাকে ঢোকে। নাকের ভেতর ছোট ছোট অনেক লোম থাকে, যেগুলোকে বলা হয় ‘সিলিয়া’। এসব লোম রোগ-জীবাণুকে ধরে ঝেঁটিয়ে বিদায় করে দেয়। আমরা মাঝে মাঝে যে হাঁচি দিই, এটি কিন্তু শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থারই একটি অংশ। হাঁচির মাধ্যমে অসংখ্য রোগ-জীবাণু নাক দিয়ে বেরিয়ে যায়। শুধু তা-ই নয়, নাক দিয়ে যে পানি বেরোয়, সেটিও রোগ প্রতিরোধক। কারণ এতে থাকে লাইমোজাইম নামে বিশেষ এক ধরনের এনজাইম, যা কিছু ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলে।
ট্রাকিয়া বা শ্বাসনালি
নাকের মতো শ্বাসনালিতে অনেক সিলিয়া থাকে, যেগুলো বাইরের রোগ-জীবাণুকে নিচের দিকে নামতে না দিয়ে ওপরের দিকে ঠেলে দেয়।
ট্রাকিয়ার মধ্যেও রয়েছে পিচ্ছিল শ্লেষ্মা বা মিউকাস। এগুলো রোগ-জীবাণুকে আটকে দেয়। কাশির মাধ্যমে এসব রোগ-জীবাণু বেরিয়ে যায়। তাই কাশিও রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার একটি অংশ।
লেখক : আবাসিক চিকিৎসক
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়
https://www.youtube.com/watch?v=wfEPaBfx6p4&t=1s