Tuesday, April 23
Shadow

ক্যান্সারের লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধের উপায়

ক্যান্সার ক্যান্সারের cancer

দিন দিন ক্যান্সার যেমন বাড়ছে, পাশাপাশি বাড়ছে এই রোগটি সম্পর্কে সচেতনতা। ক্যান্সার মানেই মৃত্যু নয় এটা আজ মানুষ বুঝতে পেরেছে । সচেতনতার কারনে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সুযোগও বাড়ছে। প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পরলে এবং চিকিৎসা করলে ক্যান্সার পুরোপুরি সেরেও যেতে পারে অথবা ক্যান্সারকে নিয়ন্ত্রণে রাখা অনেক সহজ হয়। বাড়ন্ত অবস্থায় ধরা পড়লেও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে রোগীর কষ্ট কষ্ট অনেকটা কমানো যেতে পারে।

টিউমার মানেই কি ক্যান্সার?

টিউমার হল শরীরের অস্বাভাবিক টিস্যু পিণ্ড, যার কোষ অতি দ্রুত এবং অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। কোষের ধরন ও আচরণভেদে টিউমার সাধারনত দুই(২) ধরনের হয়ঃ ১. বিনাইন (Benign) : এটি বিপজ্জনক নয়; ২. ম্যালিগনেন্ট (Malignant) : এটি বিপজ্জনক টিউমার। ক্যান্সার হচ্ছে এক ধরনের ম্যালিগনেন্ট টিউমার। অতএব, শরীরে পিণ্ড বা টিউমারের আচরণ যদি ম্যালিগনেন্ট টিউমারের বৈশিষ্ট্যের মতো না হয় কিংবা রোগীর যদি ক্যান্সারের অন্যান্য লক্ষণসমূহের কোনটাই না থাকে, তাহলে এটি নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।

টিউমার মানেই কিন্তু ক্যান্সার নয়। স্বাস্থ্য নিয়ে মানুষের সচেতনতা দিন দিন বৃদ্ধির পাশাপাশি নানা রকম রোগের ভীতি যোগ হচ্ছে। আজকাল অনেকেই ছোট একটি টিউমার হলেই ক্যান্সার হল ভেবে দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েন। অনেক সময় চিকিৎসক বুঝিয়ে বলার পরও ভয় কাটতে চায় না। আমাদের টিউমার বা ক্যান্সার সম্বন্ধে প্রাথমিক কিছু ধারণা না থাকার কারনে অনেক পরীক্ষার পরও ভয় থেকে যায়, রিপোর্টে সঠিক আছে কিনা? তাই । টিউমার বা ক্যান্সার সম্বন্ধে প্রাথমিক কিছু তথ্য জেনে নিন।

ক্যান্সারের কারণ

সুনির্দিষ্টভাবে ক্যান্সারের কারণ এখনও জানা যায়নি তবে নানান কারণে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার হতে পারে। ক্যান্সার বৃদ্ধির জন্য আমাদের বদলে যাওয়া জীবনযাপন অনেকাংশে দায়ী। উচ্চ ক্যালোরি যুক্ত খাবার, যেমন ফাস্টফুড এবং খাদ্যতালিকায় ফাইবার জাতীয় খাবার কম পরিমাণে থাকার কারনে ক্যান্সারের সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে। অতিরিক্ত পরিমানে মিষ্টি জাতীয় খাবারের কারনে বয়স্ক ব্যক্তি এমনকি বাচ্চাদের মধ্যেও স্থূলতার পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটাও ক্যান্সারের একটি বড় কারণ। এ ছাড়াও ধূমপানসহ বিভিন্ন তামাকজাত দ্রব্য গ্রহন এবং পরিবেশ দূষণ ক্যান্সার বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য বিশেষভাবে দায়ী।

কোন কোন ক্যান্সার সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়?

ছেলেদের ক্ষেত্রে মুখগহ্বর ও ফুসফুসের ক্যান্সার এবং এগুলি মূলত ধূমপান ও অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্য গ্রহনের ফলে হয়। অপরদিকে মহিলাদের ক্ষেত্রে স্তন ক্যান্সার এবং জরায়ু মুখের ক্যান্সার সবচেয়ে বেশি হয়। বর্তমানে পিত্তথলির ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যাও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ক্যান্সারের কি কোন সূনির্দিষ্ট লক্ষণ আছে?

না, ক্যান্সারের কোনও সূনির্দিষ্ট লক্ষণ নির্দিষ্ট করে বলা যাবে না। অন্যান্য সাধারণ রোগের মতোই জ্বর, শারীরিক দুর্বলতা, কাশি, ওজন হ্রাস পাওয়া, ক্ষূধামন্দা ইত্যাদি হতে পারে। এগুলো অল্প দিনে না ভাল হলে তবে সাবধান হতে হবে এবং জরুরিভাবে ডাক্তার দেখাতে হবে।

ক্যান্সারের লক্ষন?

অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজন সংক্রান্ত সকল রোগের সমষ্টিই ক্যান্সার নামে পরিচিত। এই রোগে মৃত্যুর হার অন্যান্য রোগের তুলনায় অনেক বেশি। এরোগের ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। সাধারণত প্রতি চার(৪) জন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে ১ জন ব্যক্তি মারা যায়। সাধারণত সাতটি বিষয়কে ক্যানসারের বিপদ সংকেত বলা হয়। যেমন- খুসখুস কাশি, ভাঙ্গা কণ্ঠস্বর, সহজে ঘা না শুকালে, স্তনে বা শরীরের কোথাও কোনো চাকা বা পিণ্ডের সৃষ্টি হলে, মল ত্যাগের অভ্যাসের পরিবর্তন হলে, ঢোক গিলতে কোনরকম অসুবিধা বা হজমে অসুবিধা হলে, তিল কিংবা আচিলের কোনো সূক্ষ পরিবর্তন হলে। সাধারণভাবে এই সাতটি বিপদ সংকেতের কথা সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাপকভাবে প্রচার হলে প্রাথমিক অবস্থায় ক্যানসার প্রতিরোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন করা সম্ভব। প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসার মাধ্যমে ক্যান্সারকে অনেকাংশে নির্মূল করা সম্ভব হয় কিন্তু ক্যান্সার সহজে ধরা না পড়ার কারনে, এ রোগে মৃত্যুর হার অনেক বেশি। যদিও ক্যান্সার সম্পর্কে ভাল জ্ঞান থাকলে এবং একটু সচেতন হলে ক্যান্সার থেকে বেচে থাকা যায়।

  • দীর্ঘ সময় ধরে জ্বর ও কাশিঃ ঋতু পরিবর্তনের কারনে, অথবা নানান রকম ভাইরাস জ্বরে আমরা সবাই কম বেশি আক্রান্ত হই। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে জ্বরে আক্রান্ত থাকলে এবং জ্বরের সাথে কাশি থাকলে, অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। এছাড়াও ঘন ঘন জ্বর উঠাকেও কোনভাবেই অবহেলা করা উচিত নয়। কারন দীর্ঘমেয়াদে জ্বর এবং জ্বরের সাথে কাশি, ব্লাড ক্যান্সার, লিম্ফোমা অথবা লিউকোমিয়ার লক্ষণ। এক্ষেত্রে অতিদ্রুত ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন।
  • রক্তপাতঃ কফ অথবা কাশির সাথে রক্ত আসলে এটি ফুসফুসের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। প্রস্রাব অথবা পায়খানার সাথে রক্ত বের হলে এটি ব্লাডার ক্যান্সারের কারন হতে পারে। মহিলাদের ক্ষেত্রে স্তন থেকে রক্ত বের হলে এটি স্তন ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। এছাড়াও মহিলাদের মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ অথবা মাসিকের সময় ব্যতিত অন্য কোনো সময়ে রক্তক্ষরণ হলে এটিও ক্যান্সারের লক্ষণ। এইসকল লক্ষণ পরিলক্ষিত হলে অতি দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন।
  • ক্ষুধামন্দা এবং ওজন হ্রাস পাওয়াঃ অনেকসময় আমাদের খাবারের প্রতি আগ্রহ কমে যায় অর্থাৎ ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা এটাকে তেমন গুরুত্ত দেই না। আর এসময় আমাদের ওজন যদি হ্রাস পায়, সেটাকেও আমরা খুব স্বাভাবিকভাবেই নেই। ক্ষুধামন্দা এবং ওজন হ্রাস পাওয়া এই দুটোই কিন্তু ক্যান্সারের লক্ষন। তাই দীর্ঘমেয়াদে ক্ষুধামন্দা হলে এবং ওজন হ্রাস পেলে, অবশ্যই অতি দ্রুত ডাক্তার দেখাতে হবে।
  • শরীরে অতিরিক্ত ব্যথা অনুভূত হলেঃ ঠাণ্ডা লাগলে অথবা অতিরিক্ত পরিশ্রমের ফলে প্রায়ই আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। কিন্তু শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ব্যথা অনুভূত হলে এটি ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। যেমন- অতিরিক্ত মাথা ব্যথা ব্রেইন ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
  • অল্প পরিশ্রমে ক্লান্ত হয়ে পড়াঃ অনেক বেশি পরিশ্রম করলে অথবা সারাদিন কাজের শেষে ক্লান্ত হওয়া খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু অল্প পরিশ্রমে অথবা খুব তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়ে পড়লে, অথবা অল্প পরিশ্রমেই দুর্বল হয়ে পড়লে এটি ক্যান্সারের লক্ষন হতে পারে।
  • চামড়ায় কোন ধরনের পরিবর্তনঃ চামড়ায় ছোট ছোট দানার মত হলে, চামড়ার রঙের কোন পরিবর্তন হলে অথবা কারণ ছাড়াই শরীরের কোন অংশে জখমের মত ক্ষত তৈরি হলে এটি স্কিন ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। এছাড়াও, শরীরের কোনো স্থানের ঘা সহজে না সারলে অথবা শরীরের কোনো স্থানে শক্ত চাকার মত অনুভূত হলে এটিও ক্যান্সারের লক্ষন হতে পারে।

 

ক্যান্সার নির্ণয়ে স্ক্রিনিং

একজন সুস্থ ব্যক্তি যার মধ্যে ক্যানসারের লক্ষণ প্রকাশ পায়নি কিন্তু ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি আছে বলে মনে হয়, তখন ক্যানসার আছে কি না অথবা হতে পারে কি না এই বিষয়ে যে ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয় সেটাই স্ক্রিনিং নামে পরিচিত। ক্যানসার নির্ণয়ে শরীর পরীক্ষা বা স্ক্রিনিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। স্ক্রিনিং এর মাধ্যমে আগে থেকেই ক্যানসার আছে কিনা তা নির্ণয় করা যায় এবং প্রাথমিক ভাবে ক্যানসার ধরা পড়লে তার চিকিৎসার পথও অনেকটা সহজ হয়ে যায়। প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যানসার দুই ভাবে শনাক্ত করা যায়। কোষের মধ্যে ক্যানসার বিভিন্ন পর্যায়ে থাকে এবং একটা সময় গিয়ে ক্যান্সার এর লক্ষণ ধরা পড়ে। কোষের মধ্যে পরিবর্তনটি কিন্তু অনেক আগে থেকেই শুরু হয়। লক্ষণ ধরা পড়ে অনেক পরে।

বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার মতে, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সাধারণত তিন ধরনের ক্যানসারের আশঙ্কা বেশি থাকে। প্রথমটি মুখ গহ্বভরের ক্যানসার, দ্বিতীয়টি স্তন ক্যানসার এবং তৃতীয়টি জরায়ু মুখের ক্যানসার। তাই এইসকল ক্ষেত্রে সাবধানতা বশত স্ক্রিনিং করা যেতে পারে।

  • ওরাল স্ক্রিনিংঃ একটি নিদির্ষ্ট বয়সের পরে সব নারী পুরুষেরই ওরাল স্ক্রিনিংয়ের চেকআপ করা উচিত। চিকিৎসক ছাড়াও সাধারণ স্বাস্থ্যকর্মী দিয়েও এই রোগ নির্ণয় করা যায়। তিনটি বিষয় শিখলেই মুখ গহ্বরের ক্যানসার সহজেই নির্ণয় করা যায়। মুখ গহ্বরের ভেতর যে ঝিল্লি থাকে সেই মিউকাস ম্যামব্রেনে যদি লাল লাল ছোপ দেখা দেয়, সাদা খসখসে আবরনের মতো পড়ে অথবা মিউকাস মেমব্রেনের নিচের দিকে একটি ছোট্ট ঘা হয় তাহলে ভাবতে হবে ওই ব্যক্তির মুখ গহ্বরে ক্যানসার হয়েছে। এই বিষয়গুলো স্বাস্থ্যকর্মী নির্ণয় করার পর পরবর্তীতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নিকট পাঠাবে। স্বাভাবিক চিকিৎসা নেওয়ার পরও যদি লক্ষণসমূহ দেখা যাওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে কোন উন্নতি অথবা পরিবর্তন না হয় তখন অবশ্যই অতি দ্রুত একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
  • জরায়ু মুখের ক্যানসার নির্ণয়ঃ জরায়ু মুখের ক্যানসার নির্ণয়ে পেপটেস্ট পরীক্ষা করা হয়। রোগীকে শুইয়ে স্পেকুলাম দিয়ে জরায়ুর মুখটি একটু দেখা হয়। একটি স্পেচুলা যেটা আইসক্রিমের চামচের মতো দেখতে, সেটা দিয়ে জরায়ুতে ঘুরিয়ে কস নিয়ে আসা হয়। এই কস মাইক্রোস্কোপে পরীক্ষা করে দেখা হয় ক্যানসার আছে কি না। এই পদ্ধতিটি কিছুটা ব্যয়বহুল। তাই দরিদ্র দেশের জন্য আরেকটি পদ্ধতি বেশ প্রচলিত হয়ে গেছে, যেটা ভায়া ( ভিজুয়াল ইন্সপেকশন বাই এসিডিক এসিড) নামে পরিচিত। কাঠির মাথায় তুলা লাগানো এক ধরনের পরীক্ষণ যন্ত্র বা সপস্টিক দিয়ে পরীক্ষাটি করা হয়। এসিডিক এসিডে সপস্টিক ভেজানো হয় এবং জরায়ুর মুখ খুলে সপস্টিক স্পর্শ করা হয়। রঙের পরিবর্তন হলে ভায়া পজিটিভ এবং কোন পরিবর্তন না হলে ভায়া নেগেটিভ। তবে ভায়া পজিটিভ মানেই কিন্তু ক্যারনসার নয় আবার অপরদিকে ভায়া নেগেটিভ মানেই কিন্তু ক্যানসার থেকে মুক্ত এমন নয়।
  • স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিংঃ স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিং নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। স্তন ক্যানসারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে রোগীকে নিজেকেই নিজের স্তন পরীক্ষা করতে হবে। পরীক্ষায় কোনো রকম অস্বাভাবিক কিছু টের পেলে তারপর চিকিৎসকের কাছে যাবেন। আরেকটি হলো স্বাস্থ্যকর্মী অথবা চিকিৎসককে দিয়ে পরীক্ষা করানো। যখন নারীটি নিজে সন্দেহ করবেন যে তার কোন সমস্যা হচ্ছে তখন তিনি চিকিৎসকের কাছে যাবেন। অতঃপর চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে মেমোগ্রাম করতে হতে পারে। মেমোগ্রামের বিকল্প হতে পারে আল্ট্রাসোনোগ্রাম। অনেক জায়গায় মেমোগ্রামের ব্যবস্থা নেই, সেখানে আল্ট্রাসোনোগ্রাম করা যায়। এতেও যদি ডাক্তার সন্দেহ করেন যে ক্যানসার হয়েছে, তাহলে এফএন এসি করা যেতে পারে। এফএন এসি হচ্ছে ফাইন নিডেল এসপিরেশন সাইটোলজি। এই পরীক্ষায় চিকন একটি সুই টিউমারের ভেতর ঢুকিয়ে সিরিঞ্জ দিয়ে কস নিয়ে আসা হয়। অতঃপর স্লাইড বানিয়ে মাইক্রোস্কোপে পরীক্ষা করে ক্যানসার হয়েছে কি না, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়।

 

ব্লাডক্যান্সার

ব্লাড ক্যান্সার যা মেডিক্যালের ভাষায় লিউকোমিয়া হচ্ছে রক্ত অথবা অস্থিমজ্জার ক্যান্সার। এতে শ্বেতকণিকার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিভাজন ঘটে। ব্লাড ক্যান্সারের সুনির্দিষ্ট লক্ষণ ধরা সম্ভব হয় না। একটি মানুষ পুরুপুরি সুস্থ থাকলেও হঠাৎ করে তার ব্লাড ক্যান্সার ধরা পড়তে পারে। অর্থাৎ, অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগী নিজেই বুঝতে পারেন না যে তিনি কত মারাত্মক একটি রোগে আক্রান্ত। ব্লাড ক্যান্সারের কিছু লক্ষণ হল ঘন ঘন জ্বর হওয়া (এটাই সবচেয়ে কমন), রাত্রিকালীন প্রচুর ঘামানো, প্রচন্ড দুর্বলতা ও অবসাদ, খিদে না থাকা ও ওজন হ্রাস, মাড়ি ফোলা বা খেতে থেলে রক্তক্ষরণ, ছোট কাটাছড়া থেকে অনেক রক্তক্ষরণ, স্নায়বিক লক্ষণ (মাথাব্যাথা), স্ফীত যকৃত ও স্প্লীন, অল্পে ছড়ে যাওয়া, সংক্রমণ হওয়া, অস্থিতে যন্ত্রণা, গাঁটে ব্যাথা, স্ফীত টনসিল ইত্যাদি। লিউকেমিয়ার কোনো নির্দিষ্ট কারন নেই। বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন লিউকেমিয়া হতে পারে, সম্ভাব্য কারণগুলো হল প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম আয়ন বিকিরণ, কিছু নির্দিষ্ট রাসায়নিক পদার্থ, কিছু ভাইরাস, জিনগত যা জম্মগত।

ব্লাড ক্যান্সার বা লিউকিমিয়া আছে কিনা সেটা নিশ্চিত করার জন্য কিছু পরীক্ষা করা হয়। যেমন- রক্তের কোষ পরীক্ষা বা CBC এবং বায়োপসি বা হাড়ের মজ্জা পরীক্ষা।

ব্লাড ক্যান্সার বা লিউকিমিয়ার চিকিৎসা নির্ভর করে রোগীর বয়স কত, ক্যান্সারের ধরন, ক্যান্সার ছড়িয়ে গেছে কিনা ইত্যাদি নানান বিষয়ের উপর। চিকিৎসা পদ্ধতির ভেতর আছে কেমোথেরাপি, রেডিও থেরাপি, হাড়ের মজ্জা প্রতিস্থাপন ইত্যাদি। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে ব্লাড ক্যান্সার বা লিউকিমিয়া সম্পূর্ণ সেরে যেতে পারে কিন্তু ব্যাপারটা সহজ নয়, কারন প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার ধরা পরাটা প্রায় অসম্ভব। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগী বুঝতে পারেন না যে তিনি একটি মারাত্মক রোগে আক্রান্ত।

ব্রেইন ক্যান্সার

করোটি গহ্বর অস্বাভাবিক কোষ বিভাজন থেকে ব্রেইন ক্যান্সার হয় যা ইনট্রাকার্ণিয়াল টিউমার নামেও পরিচিত। মস্তিস্কের বিভিন্ন কোষে ম্যালিগন্যান্ট টিউমার, খুলি, করোটিড নার্ভ, পিটুইটারি গ্ল্যান্ড এবং অন্যান্য মেটাস্টাসিস ব্রেইন টিউমার থেকে এই ক্যান্সার হতে পারে। করোটিড গহ্বরে হাড় থাকার কারনে মস্তিষ্কের টিউমারের কারণে ইনট্রাকার্ণিয়াল প্রেসার অত্যন্ত বৃদ্ধি পায় এবং ফলস্বরূপ মাথা ব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা, বমি ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে। বয়সভেদে টিউমারের অবস্থান ও ধরণ ভিন্ন হয়।

মোবাইল এবং কম্পিউটার হতে নির্গত তেজস্ক্রিয় তরঙ্গ, বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ ভাবে মাথায় অতিরিক্ত আঘাত পেলে অনেক ক্ষেত্রে ক্যান্সার কোষ সক্রিয় হয়ে যেতে পারে অথবা পূর্বে বিদ্যমান টিউমারের আকৃতিও বৃদ্ধি পেতে পারে, দীর্ঘসময় ধরে বিভিন্ন কেমিক্যাল অথবা হেয়ার কালার মাথায় ব্যবহার করলে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। অনেক রোগীর ক্ষেত্রে দেখা যায় পরিবারের কারো ব্রেইন ক্যান্সার ছিল এবং ভবিষ্যতে তারও হয়েছে অর্থাৎ জেনেটিক্যাল কারনেও ব্রেইন ক্যান্সার হতে পারে।

এমি জ্যাকসন মা হতে যাচ্ছেন , বিয়ে আগামী বছর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!

error: Content is protected !!