class="post-template-default single single-post postid-15920 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

হতে চাইলে ওয়েডিং প্ল্যানার

ওয়েডিং প্ল্যানার
বিয়ে মানে হাজার ঝক্কি। ভেনু থেকে মেনু, লাইটিং থেকে ক্যাটারিং একেবারে দশভুজা হয়ে সামাল দিতে হয় চারদিক। তবে আজকের এই ইঁদুরদৌড়ের যুগে এত সময় কোথায়? কিন্তু বিয়ে যেহেতু জীবনে লোকে একবারই করে, তাই সকলেরই স্বপ্ন থাকে একটা ‘গ্র্যান্ড ওয়েডিং’-এর, যা সকলে মনে রাখবে।

এসে গেল বৈশাখ মাস। মানে শুরু হয়ে যাচ্ছে বিয়ের মরশুম। আর বিয়েবাড়ি মানেই হই হুল্লোড় আর খাওয়া-দাওয়া! তবে একই সঙ্গে যদি অন্যের বিয়ে দিয়ে নিজের পকেটটাও ভরে নেওয়া যায়, তা হলে কেমন হয়? অবশ্যই ফ্যানটাস্টিক! ওয়েডিং প্ল্যানার হলে সম্ভব ঠিক এমনটাই… খোঁজ দিচ্ছে ১৯ ২০

বিয়ে মানে হাজার ঝক্কি। ভেনু থেকে মেনু, লাইটিং থেকে ক্যাটারিং একেবারে দশভুজা হয়ে সামাল দিতে হয় চারদিক। তবে আজকের এই ইঁদুরদৌড়ের যুগে এত সময় কোথায়? কিন্তু বিয়ে যেহেতু জীবনে লোকে একবারই করে, তাই সকলেরই স্বপ্ন থাকে একটা ‘গ্র্যান্ড ওয়েডিং’-এর, যা সকলে মনে রাখবে। তাঁদের এই স্বপ্নকে মূলধন করেই তুমি তৈরি করে ফেলতে পার নিজের কেরিয়ার। ঠিক যেমন শুরু করেছিল বিট্টু আর শ্রুতি। ‘ব্যান্ড বাজা বারাত’-এর বিট্টু-শ্রুতি আর তাঁদের ‘শাদি মুবারক’-এর কথা মনে পড়ছে তো? জাস্ট একটু ক্রিয়েটিভিটি আর হার্ডওয়র্ক— এই দুইয়ের কম্বো রাতারাতি হিট করিয়ে দিয়েছিল তাঁদের ওয়েডিং প্ল্যানিংয়ের কেরিয়ার। এ তো গেল রিল লাইফের কথা। তবে রিয়েল লাইফেও এমনটাই সম্ভব। কারণ ওয়েডিং প্ল্যানারদের দর এবং চাহিদা দুইই দিন-দিন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে।

 

একটা বিয়েবাড়ির এ টু জ়েড আয়োজন এবং দেখাশোনার দায়িত্বে থাকে ওয়েডিং প্ল্যানাররা। বিয়েবাড়ির খুঁটিনাটি আচার অনুষ্ঠানের আয়োজন থেকে শুরু করে বর-কনের সাজসজ্জা, বিয়েবাড়ির যাবতীয় কেনাকাটার পাশাপাশি অতিথি আপ্যায়ন, সবকিছুই সামলাতে হয় তাঁদের। অনেকসময় বিয়ের তারিখ পর্যন্ত ঠিক করতে হতে পারে ওয়েডিং প্ল্যানারদের। সেক্ষেত্রে ক্লায়েন্ট যে মতেই বিয়ে করতে চান না কেন সেই অনুযায়ী পুরোহিত, ফাদার বা কাজিসাহেবের সঙ্গে যোগাযোগ করাও তাঁদেরই দায়িত্ব। ক্লায়েন্টের ক্ষমতা অনুযায়ী বিয়ের বাজেট তৈরি করাও একটা গুরুদায়িত্ব। নিমন্ত্রিতদের লিস্ট তৈরি করা, নেমন্তন্নের কার্ড ছাপানো, একে-একে নেমন্তন্নপর্ব সেরে ফেলার জন্য সঠিক যানবাহনের ব্যবস্থা করা, সবই থাকে ওয়েডিং প্ল্যানারদের জিম্মায়। বিয়েবাড়ির ভেনু ঠিক করে সময় মতো বুকিং সেরে ফেলাটা খুব ইম্পর্ট্যান্ট। ক্যাটারারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ক্লায়েন্টের পছন্দ অনুসারে মেনু ঠিক করা, ফোটোগ্রাফার, ভিডিওগ্রাফার, ডেকরেটর, মিউজ়িক ব্যান্ড ইত্যাদির ব্যবস্থাও সব পাকা করে রাখতে হয় ওয়েডিং প্ল্যানারদের। পাশাপাশি বিয়েবাড়ির অতিথিদের জন্য যাতায়াতের সুব্যবস্থা করা, বিয়ের দিন যাতে কোনও অসুবিধায় না পড়তে হয় তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে বসার জায়গা আর জলের ব্যবস্থা রাখার মত ছোটখাটো তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির উপরেও নজর রাখতে হয় তাঁদের। বিয়ের দিন বর-কনে তো বটেই, তাঁদের পরিবারের লোকজনেরাও চায় নিজেদের সেরা রূপে সকলের সামনে আসতে। সেইমতো তাঁদের জন্য ড্রেস এবং অ্যাকসেসরিজ় শপিং করা এবং বিউটিশিয়ানকে অ্যাপয়েন্ট করার কাজও করে থাকেন প্ল্যানাররা। তবে বিয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে যেটা জরুরি তা হল রেজিস্ট্রেশন। বিয়ের তারিখ ঠিক হয়ে যাওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে ম্যারেজ রেজিস্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করা এবং কোর্টে নোটিস দেওয়া, সবই সামলাতে হয় ওয়েডিং প্ল্যানারদের।

প্রয়োজনীয় দক্ষতা
ওয়েডিং প্ল্যানিংয়ের পেশা খুব ইন্টারেস্টিং। তবে এ পেশার ক্ষেত্রে কোনও গতে বাঁধা ছক নেই। বেশিরভাগ কাজটাই নিজের সৃজনশীলতার উপর নির্ভর করে করতে হয়। তাই বলা যায় এক্ষেত্রে ক্রিয়েটিভিটি ইজ় দ্য কি ওয়ার্ড! ক্লায়েন্টের পরিবারের পছন্দ-অপছন্দ চট করে ধরে ফেলার ক্ষমতা থাকাটা বেশ জরুরি। তাঁদের পরিবারের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গিয়ে কাজ করলে কাজটা আরও ভাল করে করা যায়। ভারতের যে কোনও প্রদেশেই বিয়ে মানে একটা বিরাট উৎসব। এই উত্সবে সকলকে সামিল করে অনুষ্ঠানটিকে মাতিয়ে রাখার দায়িত্ব থাকে ওয়েডিং প্ল্যানারদের হাতেই। অনেকসময় অনেক কম বাজেটের মধ্যেও কাজ করতে হয় তাঁদের। তার মধ্যেও নিজেদের আইডিয়াকে কাজে লাগিয়ে বিয়েবাড়িটা হিট করে দেওয়ার মধ্যেই ফুটে ওঠে তাদের দক্ষতা। অর্গানাইজ়েশনাল স্কিল এই পেশার ক্ষেত্রে খুব দরকার। কোন মাকের্টে কোন জিনিস সহজে পাওয়া যায়, এই বিষয়ে একটা জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। নিজেকে সঠিকভাবে মাকের্ট করা এ পেশার মূলমন্ত্র। আর প্রফেশনালিজ়ম এ পেশার ক্ষেত্রে খুবই জরুরি।

প্রয়োজনীয় যোগ্যতা
এই পেশায় আসতে গেলে শিক্ষাগত যোগ্যতার চেয়ে বেশি দরকার পেশাগত দক্ষতার। যে কোনও বয়স বা ব্যাকগ্রাউন্ড থেকেই এই পেশায় আসা যায়। বিয়ের বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান সে বিষয়ে একটা স্বাভাবিক জ্ঞান থাকা দরকার। তবে এই পেশায় বিভিন্ন ধরনের ক্লায়েন্টদের সঙ্গে ডিল করতে হয় আর তার মধ্যে বেশিরভাগই হাই প্রোফাইল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি তাই ন্যূনতম উচ্চ মাধ্যমিক বা সমতুল পাশ করা থাকলেই হবে। বিভিন্ন ধর্মের নিয়ম-কানুন আর বাকি সূক্ষ্ম বিষয়গুলির ব্যাপারে একটা সুস্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার। প্রথমে কোনও ট্রেনিং নিয়ে নিলে বা অন্ততপক্ষে কোনও নামী প্ল্যানারের অধীনে অ্যাসিস্ট করলে কাজের দক্ষতা আর অভিজ্ঞতা দুই-ই বাড়ে।

কাজের সুযোগ
কিছুদিন আগে অবধিও বাড়িতে বিয়ের উত্সব লাগলে কাকা, জ্যাঠারাই হাতে হাত মিলিয়ে সব আয়োজন করত। তবে এখন হাতে সময় কম আর ব্যস্ততাও বেশি। তবে গ্র্যান্ড ওয়েডিংয়ের স্বপ্ন অনেকেই দেখে। আর তাঁদের এই স্বপ্ন সত্যি করতে মাঠে নেমেছেন ওয়েডিং প্ল্যানাররা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ওয়েডিং প্ল্যানিং এখন এক হিট কেরিয়ার। ভারতে তথা পশ্চিমবঙ্গেও ইদানীং এই পেশার জনপ্রিয়তা লক্ষণীয় হারে বেড়েছে। বেশ কিছু ওয়েডিং প্ল্যানার সংস্থাও গড়ে উঠেছে সাম্প্রতিক কালে। সেখানে কাজের সুযোগ তো অবশ্যই আছে পাশাপাশি চাইলে নিজে স্বনির্ভরভাবেও কাজ যায়। ভাল কাজ পাওয়ার জন্য ভাল পোর্টফোলিয়ো থাকা প্রয়োজন। নিজের আগের কাজের কিছু ছবি দিয়ে তৈরি করতে হয় এই পোর্টফোলিয়ো। এটা ক্যাটালগ হিসেবে কাজ করে। ক্লায়েন্টরা বেশিরভাগ সময়ে এই পোর্টফোলিয়ো দেখেই ওয়েডিং প্ল্যানার নিবার্চন করেন। এছাড়া ওয়েডিং প্ল্যানিং ছাড়াও ব্রাইডাল কনসালট্যান্ট হিসেবেও কাজ করতে পারেন তারা।

বেতন
ওয়েডিং প্ল্যানিং কেরিয়ারের ক্ষেত্রে কোনও বাঁধাধরা আয়ের অঙ্ক ধরে রাখা যায় না। বেশ কয়েকটা ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করে তোমার পকেট কতটা ভরবে… এই পেশার ক্ষেত্রে একবার প্রতিষ্ঠা এবং নাম করতে পারলে রেট কার্ডেও পরিবর্তন আসে। তারপর নিজের টিমে কত জনকে নিয়োগ করছ তার উপরও নির্ভর করছে তোমার কতটা আয় হচ্ছে। তবে মোটামুটি বছরে দশ-বারোটা বিয়ে সুসম্পন্ন করতে পারলে কয়েকলাখ টাকা অবধি লাভ করা যায়। কোনও ওয়েডিং প্ল্যানিং সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকলে শুরুতে মাসিক ৫০০০-১০,০০০ টাকা অবধি আয় করা যায়। পরবর্তীকালে সেটা ২৫,০০০ থেকে প্রায় ৪৫,০০০ টাকা পর্যন্ত যেতে পারে। সংস্থার রেপুটেশনের উপরও অনেকটা নির্ভর করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!