class="post-template-default single single-post postid-12662 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

পানিতে ভেসে থেকে অবাক করেছেন রিক্তা

পানিতে

ফারহানা আফরোজ রিক্তা ঘণ্টা ঘণ্টা পানিতে ভেসে থেকে অবাক করেছেন গাঁয়ের লোকদের। তবে রিক্তার আরো অনেক গুণ আছে—লেখালেখি করে, গান করে, খেলাধুলায় পেয়েছে অনেক পুরস্কার।

ভলিবল, হ্যান্ডবল, ব্যাডমিন্টন, লৌহ গোলক নিক্ষেপ, চাকতি নিক্ষেপ, বর্শা নিক্ষেপ ইত্যাদি খেলায় ১০০-এর বেশি পুরস্কার পেয়েছেন রিক্তা। দুই-দুটি উপন্যাস তাঁর এখন বাজারে। নিজের লেখা ও সুর করা গানের একটি সিডি শিগগিরই প্রকাশিত হচ্ছে। এতে কণ্ঠও দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া বাড়ির ধারে লাগিয়েছেন ফলের গাছ। মুরগির খামার গড়েছেন। সেলাইয়ের কাজও জানেন।

যশোরের মণিরামপুর উপজেলার জুড়ানপুরে বাড়ি। শনিবার ছিল সেদিন। সূর্য মাথায় করেই রিক্তাদের বাড়িতে ঢুকলাম। রিক্তার স্বামী কাজী আকরাম হোসেন এসে কুশল বিনিময় করলেন। আলাপে মনে হলো সুখী এই দম্পতি।

রিক্তার কথা

১৯৮৩ সালে মণিরামপুরের স্মরণপুর গ্রামে জন্ম রিক্তার। বাবা নজরুল ইসলাম কৃষক। মা মঞ্জুয়ারা বেগম গৃহিণী। সেই সঙ্গে এক নম্বর রোহিতা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সদস্য।

চার বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় রিক্তা। বলছিলেন, ‘পরিবারের বড় সন্তান হওয়ায় বাবার সব কাজে আমাকেই সহযোগিতা করতে হতো। অল্প বয়সে সাইকেল চালানো শিখে ফেলেছিলাম। বাড়ি থেকে স্কুল ছিল বেশ দূরে। সাইকেল চড়েই স্কুলে যাতায়াত করতাম। দূরন্ত ছিলাম। খেলাধুলার প্রতি খুব আগ্রহ ছিল। স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতাম। আমিই বেশির ভাগ খেলায় প্রথম হতাম। ক্লাস ফোরে তখন পড়ি। আমাদের গার্লস হাই স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক বেবী সুলতানা আমার খেলা দেখে খুশি। পরামর্শ দিলেন অনেক। আমি উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়েও পুরস্কার জিততে থাকলাম। সব মিলিয়ে ১০০-র বেশি পুরস্কার আছে আমার ঘরে। সনদও আছে অনেক।’

পানির সই

রিক্তার বাবা মাছ ধরতে পছন্দ করেন। ছোটবেলায় রিক্তাও তাঁর সঙ্গী হয়েছে অনেকবার। বিল, পুকুর দাপিয়ে সাঁতার শিখে নিয়েছিল অল্প বয়সেই। মাধ্যমিকে পড়ার সময় জেলা পর্যায়ে সাঁতার প্রতিযোগিতায় ভালো করেছিলেন। একদিন সাঁতার কাটতে কাটতে ভাবলেন হাত-পা না ছুড়ে ভেসে থাকা যায় কি না। তারপর ভেসে থাকার অনুশীলনও করতে থাকলেন। এখন হাত-পা না ছুড়েই কয়েক ঘণ্টা ভেসে থাকতে পারেন চিৎ হয়ে, উপুড় হয়েও। দুই হাতে ইট নিয়েও ভেসে থাকতে পারেন তিনি। লেখাপড়া বেশি দূর করতে পারেননি। এইচএসসি পাসের পর বিয়ে হয়ে যায়।  সেটা ১৯৯৮ সালে। তবে শ্বশুরবাড়ি এসেও তাঁর কিছু থেমে থাকেনি। যেমন কবিতা লেখা। ৩০০ কবিতা তিনি লিখেছেন।  সাময়িকী, পত্রপত্রিকায় অনেক ছাপাও হয়েছে। বিরহের নীল বেদনা ও ব্যতিক্রম ভালোবাসা নামে দুটি উপন্যাসও প্রকাশ পেয়েছে। ১০০-র বেশি গান লিখেছেন। বেতারের শিল্পীরা সেগুলো গেয়েছেন। তিনি নিজেও টিভিতে। তাঁর দুটি গান—সেই সোনারই ছেলে-সকল মায়ের কোলে, হয়ে আছে প্রদীপ শিখা এবং অন্ধকারে ভুল পথটা বেছে নিতে চাই। কারণ তুমি ফিরিয়ে দিয়েছো আমায়—শ্রোতাদের মন জয় করেছে।

রিক্তা আরো বললেন

স্বামী আমার পরম বন্ধু। তাঁর সহযোগিতা না থাকলে এ পথ চলা সম্ভব হতো না। আমি আমার মা-বাবার কাছেও ঋণী। আমরা ধনী মানুষ নই। খেটে খেতে হয়। তাই গরুর খামারেও সময় দিই। আছি আমরা মোটা কাপড় আর মোটা ভাত খেয়ে। আমাদের একটি ছেলে, প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। নাম কাজী লাবিব হোসেন। লাবিব কমলা, মাল্টা খেতে পছন্দ করে। বাড়ির ধারে অনেক রকম ফলের গাছ লাগিয়েছি। ভালোই আছি বলতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!