জেরোপথ্যালমিয়া নামের এক ধরনের রোগ যা ভিটামিন “এ” এর অভাবে হয়ে থাকে। এই রোগের মোট ৮ থেকে ৯ টি পর্যায় রয়েছে। এর মধ্যে শেষ পর্যায় চোখের কর্নিয়া একদম নষ্ট হয়ে যায়। এবং রোগী সম্পূর্ণরূপে দৃষ্টিশক্তি হারায়। তবে এই রোগের প্রথম পর্যায়টি হচ্ছে রাতকানা রোগ। লিখেছেন ডাঃমোঃ আরমান হোসেন রনি
ভিটামিন “এ” এর অভাবে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে শিশুরা রাতকানা রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। আমাদের দেশে ছয় বছর বয়সের শিশুরা রাতকানা রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে।
কারণঃ
👉শরীরে ভিটামিন এ এর অভাব।
👉বাচ্চা অল্প ওজনের জন্ম হলে অর্থাৎ অপুষ্টিতে ভোগা শিশুরা এই রোগে আক্রান্ত বেশি হয়।
👉নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া ইত্যাদি রোগ হলে।
👉বাড়ন্ত বয়সের শিশুদের অতিরিক্ত খাদ্যের চাহিদা পূরণ না হলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
লক্ষণঃ
👉 প্রাথমিক পর্যায়ে ভোরের ও সন্ধ্যার অল্প আলোতে দেখতে অসুবিধে হয়।
👉পরে চোখ শুষ্ক অনুভূত হয়।
👉চোখে ছোট ছোট ছাই রঙের দাগ দেখা দেয়।
👉চোখের কর্নিয়াতে ঘা হয়ে কর্নিয়া ঘোলাটে হয়ে যায়
👉অনেক সময় কর্নিয়ায় ফোঁড়ার মতো দেখা দেয়।
প্রতিরোধঃ
👉মায়ের দুধে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-এ থাকে। তাই জন্মের পর শিশুকে মায়ের শালদুধ খাওয়াতে হবে।
👉সন্তানকে জন্মের প্রথম পাঁচ সপ্তাহ মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। সম্ভব হলে ২বছর পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে।
👉৯ মাস বয়সে শিশুকে হামের টিকার সঙ্গে একটি নীল রঙয়ের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে।
👉১২-৫৯ মাস বয়সী শিশুকে বছরে দুবার ৬ মাস অন্তর অন্তর জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন বা জাতীয় টিকা দিবসের সময় একটি লাল রঙয়ের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে।
👉শিশুকে কোনভাবে অপুষ্টিতে ভুগতে যাওয়া যাবেনা।
👉ছোটবেলা থেকে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে।
👉বাচ্চা হাম, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হলে দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
লেখক: কনসালটেন্ট (চক্ষু), দীন মোহাম্মদ আই হসপিটাল, সোবাহানবাগ, ঢাকা।