মাছ হচ্ছে ঘুমের মহা ঔষুধ!
নানা চিন্তায় অথবা কাজের চাপে আমাদের অনেকের রাতে ভালো ঘুম হয় না। মাঝে মাঝে ঘুমাতে চেষ্টা করলেও ঘুম আসে না। তাই রাতে ঠিক মতো ঘুম না আসলে ডায়েটে মাছকে যুক্ত করুন। কারণ সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, সপ্তাহে মাত্র একদিন মাছ খেলেই অনিদ্রার মতো সমস্যা দূর হতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে বুদ্ধির ধারও বাড়তে শুরু করে। পেনসিলভিনিয়া ইউনির্ভাসিটির গবেষকদের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত মাছ খাওয়ার অভ্যাস করলে, শরীরে ওমেগা ত্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্রেন পাওয়া এতটা বেড়ে যায় যে “আই কিউ” লেভেলও বাড়তে শুরু করে। তাই যদি বুদ্ধিমান হয়ে উঠতে চান, তাহলে মাছ দেখে নাক সিঁটকোলে চলবে না কিন্তু! জেনে নিন
মাছ আপনার আর কী কী উপকার করে..
১. ভিটামিন ডি এর ঘাটতি দূর করে:
হাড়ের গঠনে এই ভিটামিনটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো শরীরে যাতে কোনোভাবেই ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখাটা একান্ত প্রয়োজন। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে সামদ্রিক মাছেরা। কারণ এদের শরীরে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে মজুত থাকে ভিটামিন ডি, যা হাড়কে শক্তপোক্ত করার পাশাপাশি নানাবিধ হাড়ের রোগকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
২. ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায়:
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, সপ্তাহে মাত্র ১-২ দিন মাছ খেলেই আমাদের মস্তিষ্কের ভেতর থাকা নিউরনদের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে একদিকে যেমন বুদ্ধির বিকাশ ঘটে, তেমনি স্মৃতিশক্তিরও উন্নতি ঘটে। গত সপ্তাহে অনুষ্টিত রেডিওলজিকাল সোসাইটি অব নর্থ আমেরিকার বার্ষিক সভায় এই বিষয একটি রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে। তাতে উল্লেখ রয়েছে যারা নিয়মিত মাছ খেতে থাকেন তাদের ব্রেণের একটি বিশেষ অংশের ক্ষমতা এতটাই বেড়ে যায় যে, বুদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তির দিক থেকে তারা অনেকটাই পিছনে ফেলে দেয় মাছ না খাওয়া মানুষদের।
৩. হার্টকে চাঙ্গা রাখে:
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রকাশিত একটি রিপোর্টে এমনটা দাবি করা হয়েছে যে, যারা নিয়মিত মাছ খেয়ে থাকেন, তাদের হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৫০ শতাংশ কমে যায়। কেন এমনটা হয় জানেন? আসলে মাছের শরীরে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তে উপস্থিত ফ্যাটের মাত্রাকে কমাতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।
৪. ত্বক এবং চুলের সৌন্দর্য বাড়ে:
মাছের শরীরে উপস্থিত ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড আমাদের দেহের ভেতরে যাওয়া মাত্র ত্বক এবং চুলের গোড়ায় পুষ্টির যোগান এতটাই বাড়িয়ে দেয় যে তার প্রভাবে স্কিন টোনের যেমন উন্নতি ঘটতে শুরু করে, সেই সঙ্গে চুলের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পায়। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের রোগের চিকিৎসাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই যারা এমন রোগ ভুগছেন, তারা রোজের ডায়েট থেকে মাছকে বাদ দেওয়ার কতা কখনও ভাববেন না যেন!
৫. স্পার্ম কাউন্ট অনেক বাড়িয়ে দেয়:
সম্প্রতি ১৮৮ জন পুরুষের উপর একটি গবেষণা চালানো হয়েছিল। তাতে দেখা গেছে যারা নিয়মিত মাছে খান, তাদের স্পার্ম কাউন্ট এতটাই ভাল হয়ে যায় যে বাচ্চা নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যাই হয় না। বর্তমানে আমাদের উত্তাল জীবনযাত্রার কারণে অনেকেরই স্পার্ম কাউন্ট কমতে শুরু করে, যে কারণে বাবা হাওয়ার ক্ষেত্রে নানা সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়। তাই আপনি যদি চান এমনটা আপনার সঙ্গে না হোক, তাহলে নিয়মিত মাছ খেতে ভুলবেন না যেন!