class="post-template-default single single-post postid-53003 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

চীনের ঐতিহ্যবাহী ওষুধে পিএইচডি ডিগ্রি নিয়ে সফল মালির ডাক্তার

ফয়সল আবদুল্লাহ: আফ্রিকার দেশ মালির একজন ডাক্তার দিয়ারা বুবাকার। টিসিএম-এ উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে তিনি এখন তার নিজের দেশের গ্রামীণ বাসিন্দাদের দেবেন বিনামূল্যে উন্নত চিকিৎসাসেবা। শুধু তার নিজ দেশ মালি নয়, বৃহত্তম আফ্রিকায় ট্র্যাডিশনাল চাইনিজ মেডিসিন বা টিসিএম-এর প্রসারেও কাজ করার আশা করছেন দিয়ারা।

১৯৬৪ সালে আফ্রিকার মালিতে জন্ম দিয়ারা বুবাকারের। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে তিনি তার বাবার হাসপাতালে কাজ করতে শুরু করেন পশ্চিমা চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে। ১৯৮৪ সালে চীনে পড়তে আসার পর দিয়ারা ঝুঁকে পড়েন ঐতিহ্যবাহী চীনা ওষুধ বা টিসিএম-এর প্রতি।

কিন্তু পশ্চিমা ওষুধ বাদ দিয়ে ট্র্যাডিশনাল চাইনিজ মেডিসিনে আগ্রহী হলেন কেন বুবাকার? মালিতে যখন ছিলেন তখন একটি চীনা মেডিকেল টিমকে দেখেছিলেন পোলিও রোগে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসায় কী করে তারা সফলভাবে আকুপাংচার ব্যবহার করেছিলেন। তা দেখেই ১৯৯৭ সালে টিসিএম-এর ওপর ছেংতু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেটি ডিগ্রি নিতে আসেন বুবাকার। ওই সময় চীনের বাইরে তিনিই ছিলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি ঐতিহ্যবাহী চীনা ওষুধের ওপর পিএইচডি ডিগ্রি পেয়েছেন।

তবে শুরুর দিকে রোগী পেতে তার কিছু বেগ পেতে হয়েছিল। ড. দিয়ারা বুবাকার জানালেন, ‘সিছুয়ানে থাকতে একটি মজার ঘটনা ঘটেছিল। তিন দিন ধরে কোনো রোগী আসছিল না। একদিন এক তরুণী এসে দরজা খুলল। ডাক্তারের চেয়ারে আমাকে দেখেই আঁতকে উঠল সে। এরপর ছুটে বেরিয়ে গেল। আমিও ছুটতে ছুটতে তার পিছু নিলাম। চেঁচিয়ে বললাম, আমিই ডাক্তার দিয়ারা। আমিই সেই ডাক্তার যাকে আপনি খুঁজছেন। আমার চিকিৎসায় সন্তুষ্ট না হলে, গ্যারান্টি দিচ্ছি টাকা ফেরত পাবেন। এ কথা শুনে সে আমার চিকিৎসা নিতে এলো। আমি তার চিকিৎসা করি। এরপর সে তার মা ও বোনকেও আমার চেম্বারে নিয়ে এলো। সেদিন থেকেই আমার কাছে রোগীদের ভিড় বাড়তে শুরু করে।’

তিন দশকে ছেংতুতে একজন বিখ্যাত টিসিএম ডাক্তার হয়ে উঠেছেন দিয়ারা বুবাকার। চীনের অনেক প্রদেশেই এখন তার সুনাম ছড়িয়েছে।

দিয়ারার এক রোগী জানালেন, ‘এই প্রথম আমি এ ডাক্তারের কাছ থেকে পরামর্শ নিলাম। তিনি যখন আমাদের গ্রামে বিনামূল্যে ক্লিনিক চালু করেছিলেন, তখন তার সাথে দেখা করেছিলাম। লোকেরা বলেছিল যে, টিসিএম-এ বিদেশি ডাক্তাররাও বেশ ভালো ও যত্নশীল। এখানে তার সাথে যোগাযোগ করা বেশ সহজ।’

ছেংতুতে কাজ করার পাশাপাশি, বুবাকার সিচুয়ানের লুসিয়ান কাউন্টিসহ দক্ষিণ-পশ্চিম চীনজুড়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন।

ড. দিয়ারা বুবাকার জানালেন, ‘যে কারণে আমি এখানে বার বার আসি তা হলো এখানকার লোকেরা খুব ভালো। সবাই সুন্দর মনের মানুষ। তারা আপনাকে একজন ডাক্তার হিসেবে বেশ কদর করবে। এখানকার ডাক্তাররাও খুব ভালো, আমরা একসঙ্গে আলাপ আলোচনা করে কাজ করতে পারি, ধারণা আদান-প্রদান করতে পারি।’

তবে বুবাকার যে শুধু নিজে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তা নয়, গত এক দশকে তিনি চীনের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অন্তত তিন হাজার ডাক্তারকে টিসিএম প্রশিক্ষণ দিয়েছেন পুরোপুরি বিনামূল্যে। তিনি মনে করেন, সারা বিশ্বকে এখন টিসিএম সম্পর্কে জানা উচিত। বিশেষ করে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে চীনা ঐতিহ্যবাহী ওষুধ নিয়ে রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপনের স্বপ্ন দেখছেন দিয়ারা বুবাকার।

সূত্র: সিএমজি বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!