Friday, March 29
Shadow

হস্তশিল্পের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হতে চান সানজিদা

এসএসসি পরীক্ষার পর বিয়ে হয়ে যায় সানজিদা ইয়াসমিন ইতির। পরে সংসার সামলানোর পাশাপাশি শিখেছেন হস্তশিল্পের কাজ। তবে তার ইচ্ছে ছিল চাকরি করার। এখন হস্তশিল্পের কাজ করেই স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন সানজিদা। ২০০৪ সালের ঘটনা। ঢাকায় চলে যান সানজিদা। সেখানে একটি দোকানে একটি চামড়ার ব্যাগ কিনতে যান তিনি। তখন তার মনে হয় তিনিও এ ধরনের ব্যাগ তৈরি করতে পারেন। তবে হাতে টাকা ছিল না। একপর্যায়ে নিজের সব স্বর্ণের গয়না বিক্রি করে নগদ ২৫ হাজর টাকা দিয়ে শুরু করেন ব্যাগসহ বিভিন্ন পণ্য তৈরি। শুরু হলো তার পথচলা।

সানজিদা জানান, দরিদ্র মধ্যবিত্ত পরিবারের নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার লক্ষ্য তার। এর পাশাপাশি নিজের ডিজাইনে তৈরি করা হস্ত শিল্পগুলো বাজারজাত করে তিনি নিজেও আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠতে চান। এর মাধ্যমে তিনি ইতোমধ্যে এক অনুকরণীয় হয়ে উঠেছেন।

জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও কলেজ পাড়ার বাসায় বসসাস করেন গৃহবধূ সানজিদা ইয়াসমিন ইতি। স্বামী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও একটি ইটভাটায় চাকরি করেন। স্বামী-স্ত্রী এবং এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তাদের সংসার। তারা লেখাপড়া শিখছে। বড় মেয়ে নিয়মিত লেখাপড়ার পাশাপাশি গ্রাফিক্সেও লেখাপড়া করছেন। অপর ছেলে তাকে হস্তশিল্পে নকশা আঁকতে সহযোগিতা করেন।

মধ্যবিত্ত পরিবারের অত্যন্ত পরিশ্রমী মেয়ে সানজিদা ইয়াসমিন। তিনি জানান, বর্তমানে তার উৎপাদিত সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে শাড়ি, মেয়েদের জামা, ব্লাউজ, পাঞ্জাবি এবং বাচ্চাদের জামা কাপড়ের নকশা ও ব্লকের কাজ করা সামগ্রী। এছাড়াও সুদৃশ্য কারুকাজময় নকশা করা বিছানার চাদর, বালিশের কভার, ওয়ালম্যাট, জায়নামাজ, মশারির কভারও তৈরি করতে পারেন। তবে অর্থাভাবে এখনও কোনো শোরুম করা সম্ভব হয়নি। অবশ্য সানজিদার বাড়ি থেকেই ক্রেতারা এসব সামগ্রী সংগ্রহ করে নিয়ে যান।

এছাড়া ক্রেতার চাহিদা মাফিক বিভিন্ন স্থানে পণ্য সরবরাহও করেন। এমনকি জেলা শহর ঠাকুরগাঁওয়ের অনেক ক্রেতা তার নিকট থেকে নিয়মিত এসব পণ্য কিনছেন। এরমধ্যে অনেকেই কলেজছাত্রী। তাদের অনেকে আবার পড়াশোনার ফাঁকে সানজিদার নিকট থেকে অর্ডার নিয়ে বাড়িতে কাজ করে প্রাপ্য মজুরি নিয়ে লেখাপড়ার ব্যয় নির্বাহ করছেন।

সানজিদা ইয়াসমিন জানান, তার লক্ষ্য এমন মেয়েদের প্রশিক্ষিত করে আত্মনির্ভর করে গড়ে তোলা। এজন্য একটি শোরুম ও হস্ত শিল্পের প্রসার ঘটাতে অবকাঠামো প্রয়োজন তার। তবে অর্থের অভাবে থমকে আছে এসব কাজ। এই শিল্পের উন্নয়নে সহজ শর্তে প্রয়োজনীয় ঋণ এবং সরকারি সহায়তা পাবেন বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!

error: Content is protected !!