ভূমিকম্প হলো হঠাৎ পরীক্ষা। তখন প্রথম কাজ—নিজেকে বাঁচানো।
কিন্তু আশেপাশে কিছু মানুষ থাকে, যারা পরিস্থিতি না বুঝেই ডায়লগ ছোঁড়ে—
- “দৌড়াও না কেন?”
- “ওড়না নিতে কতক্ষণ লাগে?”
- “ধর্ম জানো না?”
এই সব কথা শুনে মনে হয়—এরা না বিজ্ঞান জানে, না ফিকহ জানে।

ভূমিকম্পে দৌড়ানোই কেন সবচেয়ে বিপজ্জনক?
বিশ্বের বড় বড় গবেষণা প্রতিষ্ঠান এক কথাই বলে—
“Drop – Cover – Hold”
অর্থাৎ—
বসে পড়ো → কিছু দিয়ে মাথা ঢাকো → থামা পর্যন্ত ধরে থাকো।
কেন? কারণ—
- ভূমিকম্পে মাত্র ২–৫ সেকেন্ডেই ভারসাম্য উধাও। দৌড়াতে গেলে ধপ করে পড়ে যাবেন।
- বেশিরভাগ ইনজুরি হয় দৌড়ানোর সময়—কাচ, দেয়াল, সিলিং ফ্যান, শেলফ—সব মাথায় পড়ে।
- ঝাঁকুনি চলার সময় সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় থাকে ১–২ সেকেন্ড।
- আর আমাদের দেশের ভবনে সিঁড়ি, করিডোর—সবচেয়ে বিপজ্জনক জায়গা।
তাই দৌড়ানো বন্ধ রাখো—এটা কাওয়ার মতবাদ না, একদম পরীক্ষিত বিজ্ঞান।
ওড়না-শাড়ি-টুপি—এসব আসল ইস্যু না
- জরুরি অবস্থায় কে কী পরে আছো—এটা পরীক্ষার প্রশ্ন না।
- সিদ্ধান্ত নিতে হয় সেকেন্ডে।
- হাতে থাকলে নাও, না থাকলে জীবন বাঁচাও—এটাই নিয়ম।
- ওড়না নিতে গিয়ে আহত হওয়ার মানে নেই।
ফিকহ কি বলে? — আসল ধর্মীয় নিয়ম
অনেকে ধর্মের নামে মানুষকে লজ্জা দেয়।
কিন্তু ফিকহ বলে—
- “চরম প্রয়োজন হলে নিষেধও বৈধ।”
- জীবন রক্ষা ফরজ।
- প্রয়োজন হলে কিবলা না জেনেও সালাত হয়।
- পানি না থাকলে তায়াম্মুম।
- প্রাণ বাঁচাতে হারাম খাবারও বৈধ।
- বিপদের সময় পোশাকের নিয়মেও ছাড় আছে।
অর্থাৎ, ভূমিকম্পে পোশাক নয়—জীবনটাই প্রথম।
ইসলাম বরাবরই পরিস্থিতি অনুযায়ী নমনীয়।
ভুলটা হয় কোথায়?
যারা আসল বাস্তবতা বোঝে না, তারা দুই ধরনের ভুল করে—
- বিজ্ঞানবিরোধী কথা বলে
- ধর্মকে অযথা কঠোর করে তোলে
- ফলে হৈচৈ, দোষারোপ আর ভুল তথ্য—সব মিলে বাড়ে বিভ্রান্তি।
এটা না বিজ্ঞানের কথা, না ইসলামের কথা।
সমাধান কী?
- ব্যক্তিকে নয়—ভুল বক্তব্যকে সংশোধন করুন
- বিজ্ঞান + ধর্ম দুইটাই নিরাপত্তার পক্ষে
- জরুরি মুহূর্তে সময় নষ্ট নয়—সরাসরি জীবনরক্ষার সিদ্ধান্ত
- মতভেদ হলে ডায়লগ নয়—তথ্য ব্যবহার করুন
শেষ কথা
- ভূমিকম্প কারো ধর্ম দেখে আসে না।
- সকলেরই এক শত্রু—হঠাৎ মৃত্যু-ঝুঁকি।
- তাই দোষারোপ নয়—জ্ঞান + সচেতনতা = সবার নিরাপত্তা।


















