ভূমিকম্প, নিরাপত্তা ও ওড়না—গোলমালটা কোথায়? - Mati News
Friday, December 5

ভূমিকম্প, নিরাপত্তা ও ওড়না—গোলমালটা কোথায়?

ভূমিকম্প হলো হঠাৎ পরীক্ষা। তখন প্রথম কাজ—নিজেকে বাঁচানো।
কিন্তু আশেপাশে কিছু মানুষ থাকে, যারা পরিস্থিতি না বুঝেই ডায়লগ ছোঁড়ে—

  • “দৌড়াও না কেন?”
  • “ওড়না নিতে কতক্ষণ লাগে?”
  • “ধর্ম জানো না?”

এই সব কথা শুনে মনে হয়—এরা না বিজ্ঞান জানে, না ফিকহ জানে।

ভূমিকম্পে দৌড়ানোই কেন সবচেয়ে বিপজ্জনক?

বিশ্বের বড় বড় গবেষণা প্রতিষ্ঠান এক কথাই বলে—
“Drop – Cover – Hold”
অর্থাৎ—
বসে পড়ো → কিছু দিয়ে মাথা ঢাকো → থামা পর্যন্ত ধরে থাকো।

কেন? কারণ—

  • ভূমিকম্পে মাত্র ২–৫ সেকেন্ডেই ভারসাম্য উধাও। দৌড়াতে গেলে ধপ করে পড়ে যাবেন।
  • বেশিরভাগ ইনজুরি হয় দৌড়ানোর সময়—কাচ, দেয়াল, সিলিং ফ্যান, শেলফ—সব মাথায় পড়ে।
  • ঝাঁকুনি চলার সময় সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় থাকে ১–২ সেকেন্ড।
  • আর আমাদের দেশের ভবনে সিঁড়ি, করিডোর—সবচেয়ে বিপজ্জনক জায়গা।

তাই দৌড়ানো বন্ধ রাখো—এটা কাওয়ার মতবাদ না, একদম পরীক্ষিত বিজ্ঞান।

ওড়না-শাড়ি-টুপি—এসব আসল ইস্যু না

  • জরুরি অবস্থায় কে কী পরে আছো—এটা পরীক্ষার প্রশ্ন না।
  • সিদ্ধান্ত নিতে হয় সেকেন্ডে।
  • হাতে থাকলে নাও, না থাকলে জীবন বাঁচাও—এটাই নিয়ম।
  • ওড়না নিতে গিয়ে আহত হওয়ার মানে নেই।

ফিকহ কি বলে? — আসল ধর্মীয় নিয়ম

অনেকে ধর্মের নামে মানুষকে লজ্জা দেয়।
কিন্তু ফিকহ বলে—

  • “চরম প্রয়োজন হলে নিষেধও বৈধ।”
  • জীবন রক্ষা ফরজ।
  • প্রয়োজন হলে কিবলা না জেনেও সালাত হয়।
  • পানি না থাকলে তায়াম্মুম।
  • প্রাণ বাঁচাতে হারাম খাবারও বৈধ।
  • বিপদের সময় পোশাকের নিয়মেও ছাড় আছে।

অর্থাৎ, ভূমিকম্পে পোশাক নয়—জীবনটাই প্রথম।
ইসলাম বরাবরই পরিস্থিতি অনুযায়ী নমনীয়।

ভুলটা হয় কোথায়?

যারা আসল বাস্তবতা বোঝে না, তারা দুই ধরনের ভুল করে—

  • বিজ্ঞানবিরোধী কথা বলে
  • ধর্মকে অযথা কঠোর করে তোলে
  • ফলে হৈচৈ, দোষারোপ আর ভুল তথ্য—সব মিলে বাড়ে বিভ্রান্তি।
    এটা না বিজ্ঞানের কথা, না ইসলামের কথা।

সমাধান কী?

  • ব্যক্তিকে নয়—ভুল বক্তব্যকে সংশোধন করুন
  • বিজ্ঞান + ধর্ম দুইটাই নিরাপত্তার পক্ষে
  • জরুরি মুহূর্তে সময় নষ্ট নয়—সরাসরি জীবনরক্ষার সিদ্ধান্ত
  • মতভেদ হলে ডায়লগ নয়—তথ্য ব্যবহার করুন

শেষ কথা

  • ভূমিকম্প কারো ধর্ম দেখে আসে না।
  • সকলেরই এক শত্রু—হঠাৎ মৃত্যু-ঝুঁকি।
  • তাই দোষারোপ নয়—জ্ঞান + সচেতনতা = সবার নিরাপত্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *