Monday, February 17
Shadow

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় : বাংলার মাটিতে প্রকৃতিকন্যা

সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী: ঋতুর পরিবর্তনে হিমেল হাওয়ার ছোঁয়ায় সজীব হয়ে ওঠে বাংলার প্রকৃতি। আবহাওয়া হয়তো শীতল, কিন্তু বাঙালির চিরতরুণ মন সর্বদা উষ্ণ অভ্যর্থনায় বরণ করে নেয় নতুন বছরের আগমন। ভিনদেশি বর্ষপঞ্জি মেনে হলেও, বাঙালির বর্ষবরণ আজ স্বকীয় রূপে নতুন মাত্রা পেয়েছে। এ উৎসবের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ চড়ুইভাতি, ভ্রমণ কিংবা শিক্ষাসফর। কিন্তু, এর মাঝেও বাঙালির সবচেয়ে আপন বৈশিষ্ট্য হলো বন্ধুত্বের পুনর্মিলনী।

পুরনো বন্ধুত্বের সেই অকৃত্রিম স্মৃতিগুলো ধুলো ঝেড়ে নতুন করে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে পুনর্মিলনীর আয়োজনের উষ্ণতায়। বন্ধুদের সেই স্মৃতিগুলো যেন জীবন্ত হয়ে ফিরে আসে, রঙধনুর মতো ছড়িয়ে পড়ে মনে আর প্রাঙ্গণে।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, যা বাংলার মাটিতে প্রকৃতিকন্যা নামে খ্যাত, এর ব্যতিক্রম নয়। এখানে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা জীবনের সমাপ্তি শেষে কর্মজীবনের উদ্দেশ্যে ছড়িয়ে পড়ে দেশের আনাচে-কানাচে। কিন্তু সময়ের আবর্তে স্থিতি পাওয়ার পর তাদের মন ছুটে আসে পুরনো স্মৃতির টানে। আর সেই টানে আয়োজন করা হয় পুনর্মিলনীর, যেখানে আবার একসঙ্গে হওয়ার আনন্দে প্রাণ ভরে ওঠে।

জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকৃতিকন্যার বুকে লেগে যায় উৎসবের রঙ। আলোকসজ্জার বাহারে বাকৃবি হয়ে ওঠে দীপাবলির সরোবর। সপ্তাহান্তের প্রতিটি দিন কোনো না কোনো ব্যাচের পুনর্মিলনীতে মুখরিত থাকে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। প্রাঙ্গণজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে হাসি, স্মৃতিচারণ, এবং ক্যামেরার ক্লিকের আনন্দমুখর শব্দ।

পুনর্মিলনীর উষ্ণতা শুধু প্রাক্তনদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। এর প্রভাব পড়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মনেও। তারা এই উষ্ণ স্মৃতির আবেশ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেদের স্বপ্ন আর সম্ভাবনার পথে এগিয়ে যায়। প্রবীণদের অভিজ্ঞতা আর নবীনদের উদ্যম যেন মিলে মিশে যায় বাকৃবির সবুজ ছায়ার নিচে।

প্রকৃতিকন্যার এ মিলন উৎসব তাই শুধু স্মৃতি আর পুনর্মিলন নয়, এটি প্রজন্মের মধ্যে সেতুবন্ধনের এক অনন্য দৃষ্টান্ত।প্রকৃতিকন্যার হৃদয়ে এভাবেই বয়ে চলে উষ্ণীষ হিমের আনন্দধারা।

সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী 

শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!