কাজ যদি একটানা মনোযোগ না দিয়ে করা হয়, তাহলে তাতে একঘেয়েমি এমনিতেই চলে আসে। হারিয়ে যেতে থাকে উদ্যম । আগ্ৰহ, ইচ্ছা,প্রত্যয় এসবের ঘাটতি থাকলে কোনো কাজ শেষ করা যাবে না। যে কোন কাজকে কঠিন করে দেখলে সেই কাজের শেষ টা হয়তো অর্ধপূর্ণ, নয়তো মেধাহীন দেখা যাবে। লিখেছেন ইসরাত জাহান স্বর্ণা।
কাজটি যাচাই করুন
কোনো কাজ শুরু করা কঠিন;আর সেই কাজের প্রতি আগ্রহ ধরে রাখা আরো কঠিন । যে কাজটি করবেন তা নিয়ে পরামর্শ করুন নিজের সাথে।যদি কাজটি দলগত হয় তা নিয়ে সবার সাথে আগে আলোচনা করুন ।সবার সুযোগ-সুবিধা, নিশ্চিতকরন করে তখন কাজ শুরু করুন।এতে কাজের ফলাফল আশানুরূপ হবে।
সময়ের সদ্ব্যবহার করুন
সময় হলো আমাদের জীবনে মূল্যবান একটি জিনিস । সময়ের সঠিক ব্যবহার না করলে জীবনে কখনো সফল হওয়া যায় না। তেমনি কাজের ক্ষেত্রে ও এক কথা। আলসেমির কারণে কাজটি ফেলে রেখে যে সময়টা আপনি খরচ করলেন তা কখনো ফিরে পাবেন না। প্রবাদ আছে,” Time and tide wait for none.” সময়ের কাজ সময়ে করলে কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়বে।
নতুন কিছু শেখার প্রতি উদ্যম
একটানা এক কাজ সারাজীবন করলে তো চলবে না। এতে জ্ঞান সীমিত হয়ে যাবে। নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জানুন। পড়াশোনা করুন। তাছাড়া এখন বর্তমানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যেকোনো নতুন কিছু শিখতে পারা বা তা সম্পর্কে জানা অর্জন করা কঠিন কিচ্ছু নয়।
আর যদি শিখতে পারাটা যদি নিজের হয় এতে আগ্ৰহ বেশি বাড়বে। আর আগ্রহটাই নতুন কিছু শেখার প্রতি অনুপ্রেরণা দেবে।
হতাশ না হওয়া
হতাশ জিনিসটা আমাদের সবার জীবনে বয়ে আনে ব্যর্থতা। আমরা অনেকেই হয়তো কোন বিষয় বা কাজে আশানুরূপ ফল না পেলে হতাশ হয়ে যাই। এতে নতুন করে শুরু করার অদম্য ইচ্ছা মাটি চাপা হয়ে যায়।
তাই হতাশ না হয়ে প্রত্যয় নিয়ে আবার শুরু করুন।যদি ও সফল না হলেও, বারংবার চেষ্টা করুন।
এপিজে আবদুল কালাম বলেন- “কাজের প্রতি আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ি না, আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ি হতাশ, দুঃশ্চিন্তা ও বিরক্তির কারনে।”
সবার সাথে বিনয়ী হোন
কখনো কারো প্রতি খারাপ আচরণ করবেন না। এতে আপনি নিচু শ্রেণীর মানুষের স্তরে টপকে পড়বেন।এতে আপনার আশেপাশের মানুষ আপনাকে ভালো চোখে দেখবে না। আপনার বিপদে সাহায্য বা কাজের ক্ষেত্রে কেউ এগিয়ে আসবে না।
কথায় আছে,একতাই বল। ভালো আচরণ আপনাকে অনুপ্রিয় করবে সবার কাছে। ভালো আচরণ ও আপনার জীবনের সাফল্য অর্জন এ ভূমিকা রাখে।
বিরতি দিন
কোনো এক কাজ একটানা করলে এমনিতেই ক্লান্তি ফিরে আসে, এতে কাজের প্রতি বিরক্তি চলে আসে । তাই নিজেকে কিছু কিছু সময় নিজেকে বিরতি দিন।
নোট করা
কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে নোটিং কিন্তু খুব উপকারী। এতে কাজের প্রতি আগ্ৰহ বাড়াতে সাহায্য করে। আজকে কি কাজ করবেন,কাজ বিভাগ তালিকা, আবার কালকের কাজের তালিকা ইত্যাদি নোট করে রাখুন। তাতে কিছু ভূলে যাওয়ার প্রবণতা কম থাকবে।
ইতিবাচক প্রত্যয়
হতাশ চিন্তা-ভাবনা থেকে দূরে থাকুন। পারব না বললে তো হবে না।
প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠেই বলুন,
১.আমি সেরা।
২.আমি করতে পারি।
৩. সৃষ্টিকর্তা আমার সঙ্গেই আছেন।
৪.আমি জয়ী।
৫.আজ দিনটা আমার।
কথায় আছে, যার কথার চেয়ে কাজের করার প্রবণতা বেশি সাফল্য তার কাছেই আসে।কারন,মে নদী যত গভীর তার বয়ে যাওয়ার শব্দ কম।
তাই কথায় না বড় হয়ে কাজের প্রতি দৃঢ় প্রত্যয় নিলে কাজের প্রতি আগ্ৰহ বাড়বে।
কাজের প্রতি সততা বজায় রাখুন। কারন যে কাজে খুঁত থাকে,সে কাজ কখনোই কারো পছন্দ হবে না। সাফল্য তো দূরের কথা।যার যেমন প্রাপ্য তাকে সেটাই প্রদান করুন।
নতুন নতুন কাজ করার চেষ্টা করুন। নতুনের প্রতি উদ্যম বাড়ান। নিজের কাজ অন্যকে দিয়ে করানোর মধ্যে কোনো আনন্দ নেই।এতে কোনো জ্ঞান বা প্রতিভা বাড়বে না।তাই নিজের কাজ নিজে করুন।
আরও পড়ুন: ইতিবাচক যে ভাবনাগুলো বদলে দিতে পারে আপনার জীবন
যদি আপনার কাছে কেউ কোনো কাজের প্রতি সাহায্য নিতে আসে তাহলে তাকে ফিরিয়ে দিবেন না । যথাসম্ভব তাকে সাহায্য করুন।অন্যকে কাজ বুঝিয়ে দিলে নিজের কাজের প্রতি আগ্ৰহ বাড়বে ।
যেকোনো কাজ উদ্যম ও আত্মবিশ্বাসের সাথে করুন। কঠিন সময় পার করে সাফল্য অর্জনের কথা মনে করলে কাজে উদ্যম ফিরে আসবে ।
আর কাজের কোনো সমস্যাকে ছোট করে দেখবেন না। সেই সমস্যার মুখোমুখি হয়ে তা সমাধানের জন্যে চেষ্টা করবেন।তাতে অবশ্যই সফল হবেন।
যেকোনো কাজে ঝুঁকি নিন,নাহলে সুযোগ হারাতে হবে। কারন আপনার একটি ছোট পদক্ষেপ হাজার বছরের সফলতা বয়ে আনবে।
কখনো হার জিতের হিসেবে কাজের ক্ষেত্রে করবেন না।এতে আপনার ওই ক্ষতি।এসব হিসেব করতে গিয়ে দেখবেন কোনো কাজ কাজটাই শুরু করতে পারছেন না।এতে কোনো কাজেই উদ্যোমী হতে পারবেন না।মনে রাখবেন,কাজ সুক্ষ্ম ও সুন্দর মনোভাব নিয়ে শুরু করাটাই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।