বরগুনার হেউলিবুনিয়া গ্রামের কৃষক সুনীল চন্দ্র মণ্ডল সুগন্ধি বোম্বাই মরিচ চাষ করে বছরে ছয় লাখ টাকারও বেশি লাভ করেছেন। তাঁর মরিচ বাগান দেখলে যে কারও চোখে পড়বে সবুজ মরিচে ভরা শাখাগুলো। দারুণ সুগন্ধযুক্ত এই মরিচের চাহিদা ও দাম সাধারণ মরিচের দ্বিগুণ।
সুনীল ১৯৮৬ সালে এসএসসি পাস করার পর বাবার কৃষিকাজে যুক্ত হন। ধান চাষের মাধ্যমে পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা না আসায় তিনি বিকল্প খুঁজতে থাকেন। কলাবাগান ও নার্সারি শুরু করলেও তেমন লাভ হয়নি। কাঠের ব্যবসা করে কিছু সঞ্চয়ের পর আবার নার্সারি ব্যবসায় ফিরে আসেন এবং সেখানে সুগন্ধি মরিচের চাষ শুরু করেন।
চাষের প্রক্রিয়া
- শ্রাবণের শেষে মরিচের চারা রোপণ করা হয়।
- গাছের পরিচর্যায় সার প্রয়োগ, আগাছা পরিষ্কার, এবং কীটনাশক ব্যবহার করা হয়।
- গাছের গোড়ার মাটি ঝুরঝুরে রাখা হয়।
- আশ্বিন থেকে বৈশাখ পর্যন্ত প্রতিদিন মরিচ সংগ্রহ ও বিক্রি করা হয়।
- পাইকাররা খেত থেকেই মরিচ কিনে নিয়ে যান।
সুনীলের পাঁচ হাজার গাছে গত মৌসুমে তিন লাখের বেশি মরিচ হয়েছে। এবার তাঁর আশা, আট লাখ টাকার বেশি লাভ হবে। নার্সারিতে প্রতি চারা ৫০ টাকায় বিক্রি করে তিনি ভালো আয় করেন।
কৃষকদের জন্য সুনীলের পরামর্শ
১. সুগন্ধি মরিচ চাষ করুন: চাহিদা ও দাম বেশি হওয়ায় লাভ নিশ্চিত।
২. নিজস্ব নার্সারি তৈরি করুন: উন্নতমানের চারা পেতে ও বিক্রির জন্য।
৩. ফসলের বৈচিত্র্য আনুন: ধান বা এক ফসলের ওপর নির্ভরশীল না থেকে বিকল্প চাষ করুন।
৪. জৈব সার ব্যবহার করুন: মাটির উর্বরতা বাড়াতে।
৫. পরিকল্পিত পরিচর্যা: নিয়মিত পরিচর্যা এবং সঠিক সময়ে ফল সংগ্রহ করে লাভ বাড়ান।
বরগুনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এস এম বদরুল আলম মনে করেন, “সুনীলের উদ্ভাবনী পদ্ধতি সারা দেশের জন্য একটি অনুকরণীয় উদাহরণ হতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এমন উদ্যোগ উপকূলীয় কৃষকদের জন্য দিকনির্দেশক।”