বারো মাসে চার ঋতুর দেশ অস্ট্রেলিয়া। তবে সারা বছরের সব ঋতুর একটা স্বল্পদৈর্ঘ্য চিত্র দেখা মিলল দেশটির গত এক সপ্তাহে। একদিকে দেশটির ভিক্টোরিয়া রাজ্যের ফলস ক্রেকে তুষারপাতে গোটা শহর সাদা হয়ে হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় জবুথবু। অন্যদিকে মারাত্মক ধূলিঝড়ে নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের সিডনিসহ অনেক শহরের আকাশ-বাতাস বাদামি রং ধারণ করল। দুই–তিন দিন পর আবার সিডনিতেই যেখানে ছয় ঘণ্টার তুমুল ঝড়বৃষ্টিতে সৃষ্টি হলো বন্যার, সেখানে কুইন্সল্যান্ডের বেশির ভাগ পাহাড়ি এলাকা বিনাশ হলো ভয়াবহ দাবানলে। অস্ট্রেলিয়ার এই বহুমাত্রিক ঋতুবৈচিত্র্যকে জলবায়ু পরিবর্তনের অশনিসংকেত হিসেবে দেখছেন দেশটির আবহাওয়াবিদেরা।
স্বভাবত অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া অনেকটা স্বাভাবিক থাকে। সারা বছর হাড় কাঁপানো শীতও নয় আবার দম বন্ধ করা গরমও নয়। দেশটির গ্রীষ্মকাল ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত, যথারীতি মার্চ থেকে মে শরৎকাল, জুন থেকে আগস্ট শীতকাল এবং সেপ্টেম্বর ও নভেম্বর বসন্তকাল।
এর মধ্যে গ্রীষ্মকালে অস্ট্রেলিয়ায় তাপদাহের কারণে জঙ্গলে আগুন লাগতে (দাবানল) দেখা যায়। যাকে স্থানীয়রা বলে, বুশফায়ার। প্রতিবছর বুশফায়ারের ঘটনা ঘটে থাকে। ফলে অস্ট্রেলিয়ায় এটি স্বাভাবিক দুর্যোগের ঘটনা। বুশফায়ারপ্রবণ এলাকায় জনমানুষের বসতি কম থাকে। ফলে সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলক কম হয়। তবে প্রচুর গাছ ও জীবজন্তুর প্রাণ যায়।
অন্যদিকে শীতকালে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস, ভিক্টোরিয়া ও তাসমেনিয়া রাজ্যের বেশ কিছু উপশহরে তুষারপাত হয়। এ ছাড়া নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে মার্চ মাস পর্যন্ত যেকোনো সময়ে বৃষ্টিপাত হয় অস্ট্রেলিয়ায়। কিন্তু গত সপ্তাহে পাশাপাশি ধূলিঝড়, বন্যা, তুষারপাত আর বুশফায়ারের মতো বিষয়গুলো কোনোভাবেই স্বাভাবিক ঘটনা বলে মনে করছেন না অস্ট্রেলিয়ানরা।