গ্রুপ পর্ব আর সুপার ফোর মিলিয়ে পাঁচ ম্যাচে দুই জয়। সাফল্যের নিরিখেও এবারের এশিয়া কাপটা ভালো যায়নি বাংলাদেশের।
গ্রুপ পর্বে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বড় জয় কিংবা সুপার ফোরে আনুষ্ঠানিকতার ম্যাচে ভারতকে হারানো—যতটা না সাফল্য, তার চেয়ে বেশি ‘প্রশ্ন’।
বিশ্বকাপের আগে ব্যাটারদের ছন্দহীনতা ও দলীয় পারফরম্যান্সে ঘাটতি স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে; যার ছাপ পড়েছে শরীরী কিংবা মানসিক ভাষায়ও। পুরো টুর্নামেন্টে দলগত ব্যর্থতা ঢাকতে চোটকে আপাতত অজুহাত হিসেবে নিচ্ছে বাংলাদেশ।
তবে আসন্ন বিশ্বকাপে ফিট হয়েই যেতে চাওয়ার আশা শুনিয়েছেন দলের অন্যতম অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। গতকাল শ্রীলঙ্কা থেকে দেশে ফেরার পর সাংবাদিকদের এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।
এশিয়া কাপের ব্যর্থ মিশন শেষে গতকাল সকালে ঢাকায় পৌঁছান সাকিব আল হাসানরা। খেলোয়াড়রা ফিরলেও ফেরেননি দলের সঙ্গে থাকা বিদেশি কোচিং স্টাফের সদস্যরা।
পুরো টুর্নামেন্টে সাফল্য ভারতের বিপক্ষে জেতা—বিশ্বকাপের আগে যা হতে পারে বাড়তি আত্মবিশ্বাস। দেশে ফেরা মিরাজদের হাস্যোজ্জ্বলতায়ও ফুটে উঠেছে তা। ভারতের বিপক্ষে জেতায় সতীর্থদের অভিনন্দন জানিয়েছেন সাকিব।
মিরাজই বলেছেন সে কথা, ‘ম্যাচ জেতায় অধিনায়ক অবশ্যই খুব ভালো অনুভব করেছেন; যেহেতু ভারতের সঙ্গে জিতেছি। অধিনায়ক সবাইকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। বিশেষ করে যারা তরুণ খেলোয়াড়, ওরা তো খুব ভালো খেলেছে।’
এশিয়া কাপে টিম কম্বিনেশন নিয়ে ভালোই ভুগতে দেখা গেছে সাকিবদের। উদ্বোধনী জুটিতে টুর্নামেন্টের শুরুতে তামিম ইকবাল ও লিটন দাসকে না পাওয়ায় অনভিজ্ঞদের দিয়ে ‘মেকশিপ’ জুটি। টপঅর্ডারের ব্যর্থতায় ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তনসহ একাধিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে দেখা গেছে।
পুরো ব্যাপারটা এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন মিরাজ, ‘কম্বিনেশন তো সবসময় আমাদের দলের ভেতর ভালো থাকে। কিন্তু ইনজুরিটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চেষ্টা করব যারা ইনজুরিতে পড়েছে, তারা যেন খুব দ্রুত সেরে ওঠে। তামিম ভাই দলের সঙ্গে ছিলেন না, শান্তর খেলার মধ্যে ইনজুরি হয়ে গেছে।
ও কিন্তু খুব ভালো শুরু করেছিল; দুটি ম্যাচেই অনেক বড় রান করেছে। লিটনদার ইনজুরি (জ্বর) ছিল। মুশফিক ভাইয়ের খেলার মধ্যে পরিবারের জন্য সমস্যা হয়ে গিয়েছিল।’
সবাই ফিট থাকলে পরিস্থিতি অন্যরকম হতে পারত বলে মনে করেন এই স্পিন অলরাউন্ডার, ‘আমরা যদি সবাই ফিট থাকতাম, খুব ভালো একটা টুর্নামেন্ট হতো; আমি ব্যক্তিগতভাবে আশা করেছিলাম। যেহেতু কয়েকজনের ইনজুরি হয়ে গেছে, বিশ্বকাপের আগে খুব দ্রুত রিকভারির চেষ্টা করব।’
চোট কাটিয়ে ফেরার অপেক্ষায় আছেন অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম। দ্রুত মাঠে ফিরতে রিহ্যাব করে যাচ্ছেন এশিয়া কাপের মাঝপথে হ্যামস্ট্রিং চোটে পড়া নাজমুল হোসেন শান্ত।
বাংলাদেশের বিশ্বকাপ এর আগে সবাইকে ফিট দেখতে চান মিরাজ। দলীয় শক্তিতে চোখ রাখার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সবকিছু মিলিয়ে আমি মনে করি, আমরা সবাই বিশ্বকাপে যেতে চাই ফিট হয়ে। সবাই মানসিকভাবে শক্তিশালী হয়ে যেতে চাই।’ এশিয়া কাপ ভালো না গেলেও ভারতের বিপক্ষে জেতায় বাড়তি আত্মবিশ্বাস পাচ্ছেন মিরাজরা। বিশ্বকাপে সে আত্মবিশ্বাসকে পুঁজি করে ভালো করার প্রত্যাশা ঝরেছে এ অলরাউন্ডারের কণ্ঠে।