class="post-template-default single single-post postid-1932 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

টিনএজার স্বাস্থ্য : ফাঙ্গাল ইনফেকশনে আক্রান্ত? হাতের কাছেই রয়েছে মোকাবিলা করার ব্রহ্মাস্ত্র!

টিনএজারআমাদের ত্বকের মতো নমনীয় এবং ভঙ্গুর বস্তু খুব কমই রয়েছে। প্রতিনিয়ত নিয়ম করে যত্ন না নিলে অচিরেই নানারকম রোগ, ব্যাধি এবং সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে পড়ে আমাদের ত্বক। আর স্কিন সম্পর্কিত রোগ বরাবরই গোলমেলে কেন না এই সমস্যা শুধু যে তোমাকে দীর্ঘদিন ধরে ভোগাবে তাই নয়, অনেক ক্ষেত্রেই তোমার ত্বকে দাগ রেখে যাবে। আর দাগভর্তি ত্বক হয়ে গেলে কিন্তু অকালেই তোমার গ্ল্যামারের বারোটা বেজে যাবে! চামড়াজনিত রোগের অন্যতম কারণ হল ফাঙ্গাস।

ঘরে বসে আয় করতে এই লিংকে ক্লিক করে ইন্সস্টল করে নিতে পারেন ব্রাউজারটি।

কী এই ফাঙ্গাল ইনফেকশন?

এটি হচ্ছে একটি সংক্রামক রোগ। আমাদের আবহাওয়ায় অনেক জীবাণু বসবাস করে যা আমাদের নিঃশ্বাসপ্রশ্বাসের মধ্য দিয়ে আমাদের ত্বকে প্রবেশ করে। সাধারণত শরীরের একটি  নির্দিষ্ট অঙ্গ আক্রান্ত হয় প্রথমে। এর তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা না করা হলে ক্রমশ শরীরের অন্যান্য অংশে ছ়ড়িয়ে পড়ে। যাদের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল তারা ঘন-ঘন ফাঙ্গাল ইনফেকশনে আক্রান্ত হয়। নানা ধরনের ফাঙ্গাল ইনফেকশনে আমরা আক্রান্ত হতে পারি, যেমন টিনিয়া পেডিস (অ্যাথলেটস ফুট), টিনিয়া কর্পোরিস (রিঙ্গওয়ার্ম), ওনিচোমাইকোসিস (পায়ের নখে যখন ইনফেকশন হয়) টিনিয়া ভার্সিকালার (সরাসরি ত্বক যখন ইনফেক্টেড হয়) ইত্যাদি।

 

কী কারণে স্কিন ফাঙ্গাস হতে পারে?

ফাঙ্গাস এমনই একটি জীবাণু যেটি স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে বৃদ্ধি পায়। সুতরাং তোমার যদি বেশি ঘামার প্রবণতা থাকে, তা হলে ঘামে ভেজা জামাকাপড় বা জুতো থেকে ফাঙ্গাল ইনফেকশন ছড়াবার সম্ভাবনা প্রবল।

 

সংক্রমণ : আগেই বলা হয়েছে যে ফাঙ্গাল ইনফেকশন সাংঘাতিক ছোঁয়াচে রোগ। কোনও বন্ধুবান্ধবের যদি এই রোগটি হয়ে থাকে তা হলে তার ত্রিসীমানাও যদি ঘেঁষো…..

 

ওবেসিটি : অত্যাধিক মেদও কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে ফাঙ্গাল ইনফেকশনের। যারা ওভাওয়েট হয় তাদের মাত্রাধিক মাংসপেশি থাকে, যার খাঁজে খুব সহজেই ঘাম জমে আর সেই থেকেই….

ফাঙ্গাল ইনফেকশনের উপসর্গ বা সিম্পটম্স :

১. পায়ের পাতা অত্যধিক কর্কশ হয়ে যাওয়া। কোনও-কোনও অবস্থায় পায়ের ছাল ওঠাও অস্বাভাবিক নয়।

২. ত্বকে ক্রমশ অস্বাভাবিক লাল আভা দেখা দেওয়া।

৩. কারণে-অকারণে ত্বকে চুলকুনি, জ্বলুনি বা কোনও অস্বস্তি দেখা দেওয়া।

৪. ত্বক হঠাৎ অস্বাভাবিক নরম হয়ে যাওয়া।

৫. নখ বিবর্ণ হয়ে যাওয়া বা ঘন-ঘন ভেঙে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দেওয়া।

 

ওষুধই শেষ কথা নয় :

যদি সময়ের মধ্যে রোগ নির্ণয় হয় তা হলে ওষুধের দ্বারস্থ হতে হবে না। নির্ঝঞ্ঝাটে কোনও রকম মেডিকেশন ছাড়াই খুব সহজেই ফাঙ্গাল ইনফেকশন থেকে পরিত্রাণ পেতে পারবে। কিছু অত্যন্ত সহজ, নিরাপদ, ঘরোয়া পদ্ধতি মেনে অচিরেই ফাঙ্গাল ইনফেকশনকে গুডবাই জানাতে পারবে।

 

১. চটিজুতো সর্বদা পরিষ্কার রাখবে। কথায় বলে, ‘প্রিভেনশন ইজ় বেটার দ্যান কিওর’। একটু নিয়ম করে নিজের জামাকাপড় ‌ও জুতো পরিষ্কার রাখলে, ফাঙ্গাল ইনফেকশন তোমার কাছেও ঘেঁষতে পারবে না।

 

২. দই-ই সই। আজ্ঞে হ্যাঁ। ফাঙ্গাল ইনফেকশন এড়াতে দই হয়ে উঠতে পারে তোমার বেস্ট ফ্রেন্ড। দইয়ে থাকে ল্যাকটোবাসিলাস, যেটির ডাক্তারি কেতাবে অ্যান্টিফাঙ্গাল হিসেবে বেশ নামডাক রয়েছে। নিয়মিত দই খেলে বা আক্রান্ত জায়গায় দইয়ের প্রলেপ লাগালে সহজেই ফাঙ্গাল ইনফেকশন থেকে পরিত্রাণ পাবে। তবে খেয়াল রাখবে, যে দই কিনছ সেটি যেন কোনও রকম প্রিজ়ার্ভেটিভ বিহীন হয়। তা হলেই সেটা বেশি কার্যকরী হবে।

 

৩. অ্যাপ্‌ল সিডার ভিনিগার : কথায় বলে, ‘অ্যান আপেল আ ডে কিপ্‌স দ্য ডক্টর অ্যাওয়ে’। এই ক্ষেত্রেও অ্যাপেল সিডার ভিনিগার হয়ে উঠতে পারে ফাঙ্গাল ইনফেকশনের বিরুদ্ধে রক্ষক। নানা ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া, প্রোটোজ়োয়া, ফাঙ্গাসকে নিমেষেই পরাস্ত করতে অ্যাপ্‌ল সি়ডারের জুরি নেই। এতে আছে অ্যাসেটিক অ্যাসিড (acetic acid), যা ক্ষতিকারক ফাঙ্গাসকে তোমার শরীর থেকে তাড়াবে। অ্যাপ্‌ল সিডার ভিনিগারে রয়েছে পেকটিন আ্যসিড, যা আমাদের শরীরে কিছু উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার উৎপাদন করে যেটি ক্ষতিকারক ফাঙ্গাসকে বাড়তে দেয় না। ১ টেবিল চামচ অ্যাপ্‌ল সিডার ভিনিগারকে তিন চামচ জলে গুলিয়ে আক্রান্ত জায়গায় লাগাতে পার, শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জলে ভাল করে ধুতে হবে বা স্নানের সময় বাথটবে ৫০০ মিলিলিটার (২ কাপ) এসিভি (অ্যাপ্‌ল সিডার ভিনিগার) গুলিয়ে স্নান সারতে পার। যতদিন না ইনফেকশন কমে আসছে, এসিভি-কে তোমার স্নানের এক প্রধান উপাদান বানিয়ে নাও।

৪. রসুন। জানো কি, যে ঘরোয়া রসুন হয়ে উঠতে পারে ফাঙ্গাল ইনফেকশনের বিরুদ্ধে এক প্রধান হাতিয়ার? গবেষণায় জানা গিয়েছে যে রসুন অনেক প্যাথোজেন জনিত ইনফেকশন থেকে আমাদের ত্বককে রক্ষা করতে পারে। দু’ কোয়া রসুনকে থেতো করে তাতে কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল দিয়ে আক্রান্ত জায়গায় লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে ঠান্ডা জলে ধুতে পার।

 

৫. টি ট্রি অয়েল। টি ট্রি অয়েলে রয়েছে অনেক অ্যান্টিফাঙ্গাল কম্পাউন্ড, যা আমাদের শরীরকে ফাঙ্গাল ইনফেকশন থেকে রক্ষা করতে পারে। ১:১ রেশিও মেনে টি ট্রি অয়েলের সঙ্গে অলিভ বা সুইট আমন্ড অয়েল মিশিয়ে আক্রান্ত জায়গায় লাগাতে পার। অথবা ৩:১ রেশিও মেনে টি ট্রি অয়েল এবং অ্যালোভেরা জেলের মিশ্রণ লাগাতে পার আক্রান্ত জায়গায়। প্রত্যেকদিন এই রুটিন মেনে চললে ভাল ফল পাবেই।

 

৬. নারকেল তেল। কথায় বলে, ‘ওল্ড ইজ় গোল্ড’। সেই ঠাকুমা দিদিমাদের আমল থেকে নারকেল তেল, সুপার অয়েলের মর্যাদা পেয়ে এসেছে। চুল থেকে ত্বকের সমস্যায়— নারকেল তেলই ছিল শেষ কথা। এই যুগেও ফাঙ্গাল ইনফেকশনের মোকাবিলা করতে খাঁটি নারকেল তেলের জুড়ি নেই। এতে রয়েছে তিন রকমের ফ্যাটি অ্যাসিড, ক্যাপ্রিক, ক্যাপ্রিলিক এবং লরিক আ্যসিড, যারা ফাঙ্গাল ইনফেকশন থেকে ত্বককে বাঁচায়। প্রতিদিন আক্রান্ত জায়গায় খাঁটি নারকেল তেলের প্রলেপ লাগালে ফাঙ্গাল ইনফেকশন পালাবে। এ ছাড়াও ১:১ রেশিও-তে নারকেল তেল এবং সিনামন তেলের মিশ্রণ লাগাতে পার।

 

ব্যস, আর কী। ফাঙ্গাল ইনফেকশনকে আটকানোর উপায় তো জানা রইলই। এবার বেরিয়ে পড়ো বর্ষাকালকে জয় করতে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!