মতের অমিল হোক বা বিরূপ পরিস্থিতির শিকার— রগ বেয়ে দগদগে রাগ সটান মাথায় চড়ে বসে হরদম। কোনও ভাবেই সামলানো যাচ্ছে না নিজের মেজাজকে। তার প্রভাব পড়ছে কাছের মানুষদের সঙ্গে ব্যবহারে। ফলে কথায় কথায় অশান্তি, ভুল বোঝাবুঝির শেষ নেই। এমন যদি আপনারও দশা হয়, তবে তার সমাধান রইল আপনার হাতের মুঠোয়।
কথা বলার আগে ভাবুন: ভাবিয়া করিও কাজের মতোই নিয়ম— ভাবিয়া বলুন। ভুলে যাবেন না, শব্দ ব্রহ্ম। তিরের ফলার মতো তাকেও ছেড়ে দিলে ফেরানো যায় না। তাই দুমদাম কথা বলার অভ্যাস ছাড়ুন। এতে ভুল বার্তা যায়। তার চেয়ে কী বলবেন, আর কী ভাবে বললে বিষয়টা আয়ত্তে থাকে, তা ভেবে নিন। হ্যাঁ, রাগের মাথায় কিছু বললেও তা ভেবে বলতে হবে বইকি!
রাগ কমলে কথা বলুন: রাগ হলে অ্যাড্রিনালিন হরমোনের প্রকোপে কিছুক্ষণের জন্য মস্তিষ্কে চাপ পড়ে। তাই রাগের মাথায় ভেবে কথা বলা একান্তই না আয়ত্তে আনতে পারলে, রাগের পরিস্থিতি তৈরি হলে চুপ করে থাকা অভ্যাস করুন। রাগ কমলে গুছিয়ে বলুন নিজের খারাপ লাগা ও আপত্তি। দরকারে কড়া হয়েই বলুন। কিন্তু শালীনতা ছাড়িয়ে নয়।
শরীরচর্চা করুন: খুব সাধারণ সমাধান। যে কোনও মন বা শরীর সংক্রান্ত সমস্যাকে কব্জা করার সহজ উপায়। কাজেই পালন করুন সেই বিষয়টি। ব্যায়াম বা শারীরিক কসরত চাপ কমায়, ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ সবের প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ে মনেও। মন ভাল থাকলেই রাগ কমতে বাধ্য।
ব্রেক নিন: দিনের মধ্যে নির্দিষ্ট কোনও সময় কাজের চাপ বাড়ে কি? আর তখনই মেজাজের পারদ হু হু? তা হলে এক কাজ করুন, ঠিক যে সময়টা এমন হয়, তার আগেই কেটে পড়ুন অকুস্থল থেকে। অন্তত অল্প কিছুক্ষণের জন্য। হেঁটে আসুন, বা মোবাইলে পছন্দের সাইট সার্ফ করুন। মনকে বিরাম দিলে স্নায়ুও শান্ত হবে। ভাবনার নতুন দিক কাজকে করে তুলবে উপভোগ্য।
মজার কথা মনে করুন: জীবনে কোনও মজার ঘটনা আজও হাসায়? তা হলে রাগলে আপনার সমাধান হয়ে উঠবে মজার জোকস। কাজের ফাঁকে সে সবে চোখ রাখলে স্ট্রেশ কমবে। হোয়াটসঅ্যাপে পাওয়া জোকসও কাজে লাগাতে পারেন এ ক্ষেত্রে।
রাগ পুষে রাখবেন না: কারও মুখোমুখি হলে অতীতে তার সঙ্গে আপনার ইকুয়েশন কেমন ছিল, কোন ব্যবহারে দুঃখ পেয়েছিলেন, এ সব ভাবা বন্ধ করুন। হাসিমুখে কথা বলুন। একান্তই তা না পারলে, এড়িয়ে চলুন সে সঙ্গ, কিন্তু সৌজন্য বজায় রেখেই। অতীতের রাগকে পুষে রেখে আদতে ক্ষতি আপনার মনেরই। প্রতিশোধ প্রবণতা আসলে অসুখ। সেটা ডেকে আনবেন না প্লিজ।
শান্ত থাকার কৌশল ভাবুন: ‘থ্রি ইডিয়টস’-এ ‘আল ইজ ওয়েল’ মনে আছে? বেগতিক বুঝলে মনকে শান্ত রাখুন তেমনই কিছু ‘টনিক’ দিয়ে। রেগে যাওয়ার অভ্যাস ছেড়ে বরং কিছু ‘রিল্যাক্স স্কিল’ ভাবুন রোজ। যে ভাবনায় আনন্দ পান, চাপ কমে তেমন কিছু উবাচ ভেবে ফেলতে পারলে কাজে আসবে।
Post Views: 1,134