ইনফ্লুয়েঞ্জা হলো ভাইরাল সংক্রমণ রোগ, যা আমাদের শ্বসনতন্ত্রের বিভিন্ন অঙ্গ যেমন—নাক, গলা এবং ফুসফুসে আক্রমণ করে। সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জাকে ‘ফ্লু’ বলা হয়ে থাকে। বেশিরভাগ মানুষ ফ্লুতে আক্রান্ত হলে এমনিই ভালো হয়ে যায়। কিন্তু মাঝেমধ্যে জটিলতা মারাত্মক হতে পারে।
লক্ষণ
ফ্লু হঠাৎ আক্রমণ করে এবং সর্দির সঙ্গে ফ্লু মিলে আরও খারাপ অবস্থার সৃষ্টি করে। কিছু সাধারণ লক্ষণ ও উপসর্গ হলো :
- জ্বর ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের ওপরে থাকতে পারে হ মাথাব্যথা হ শুষ্ক কাশি
- গলাব্যথা
- মাংসপেশিতে ব্যথা
- অবসাদ ও দুর্বল লাগা
- নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া।

ফ্লু ভাইরাস বাতাসের কণার মাধ্যমে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ভ্রমণ করে। কেউ যদি ফ্লুতে আক্রান্ত থাকে তাহলে তার হাঁচি, কাশি অথবা কথা থেকে ফ্লু বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে আর সেই ফ্লু যদি নিঃশ্বাসের সঙ্গে কারও দেহে প্রবেশ করে তাহলে সেও ফ্লুতে আক্রান্ত হতে পারে। আর শীতকালে আমাদের দেশে এসব ফ্লু বেশি ছড়ায় কারণ আমাদের বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ বেশি থাকে, সঙ্গে আমাদের পরিবেশও দূষণ হচ্ছে বেশি মাত্রায়।
ঝুঁকি
বয়স : সিজনাল (ঋতুকালীন) ইনফ্লুয়েঞ্জা সাধারণত ১২ মাসের কম বয়সী এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সী মানুষকে আক্রমণ করার প্রবণতা বেশি দেখায়।
বাসস্থান ও কাজের পরিবেশ : যেসব জায়গায় একসঙ্গে অনেক লোকের বসবাস অথবা একই জিনিসপত্র বিভিন্নজন ব্যবহার করে, সেসব জায়গায় ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি। নার্সিং হোম বা অনেক দিন হাসপাতালে থাকলেও ইনফ্লুয়েঞ্জা দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে।
দুর্বল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা : অনেকের বিভিন্ন ধরনের ওষুধ যেমন ক্যান্সার ট্রিটমেন্ট, স্টেরয়েড সেবনের ফলে তার শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে তারা সহজেই ইনফ্লুয়েঞ্জা দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে।
গর্ভাবস্থায় : গর্ভবতীদের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ট্রাইমিস্টারে ইনফ্লুয়েঞ্জা দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
জটিলতা
সাধারণত সিজনাল ফ্লু তেমন একটা গুরুতর হয় না। তারপরও কেউ যদি আক্রান্ত হয় সাধারণত এক বা দুই সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে যাবে। কিন্তু শিশু বা বয়স্করা আক্রান্ত হলে অনেক সময় তাদের কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে। যেমন—নিউমোনিয়া, ব্রংকাইটিস, অ্যাজমা ও কানের ইনফেকশন।
কখন ডাক্তার দেখাবেন?
বেশিরভাগ ফ্লু পাঁচ-সাত দিন পর্যন্ত থাকে। তাই এর জন্য ডাক্তারের কাছে না গিয়ে সাধারণ চিকিৎসাতে সেরে ওঠে। কিন্তু যদি ফ্লুর লক্ষণ এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জটিলতা দেখা দেয়, তখনই দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।




















