class="post-template-default single single-post postid-23342 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

দু’জনে ভালো থাকুন

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে পারস্পরিক ভালোবাসার মধ্য দিয়ে। একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধা, সম্মান, সহনশীলতার মাধ্যমেই ভালোবাসার এই চর্চা করা সম্ভব। সংসারে স্বামী ছাড়াও থাকতে পারে শ্বশুর-শাশুড়ি, দেবর-ননদ। কিন্তু এ যুগে একান্নবর্তী পরিবারগুলো ভেঙে প্রতিনিয়ত পরিণত হচ্ছে ছোট পরিবারে।

ইমরান ও জয়িতার ছোট্ট সংসার। বিয়ে করেছেন কিছুদিন হলো। দু’জনেই চাকরিজীবী। ব্যাংক কর্মকর্তা ইমরান আর স্কুলশিক্ষিকা জয়িতা। ছোট্ট এই সংসারে যেন ব্যস্ততার অন্ত নেই। বাসার কাজ সামলিয়ে স্কুল পানে ছুটতে থাকা জয়িতার জীবন যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচতে চায়।

নাগরিক ব্যস্ততার মতো তাদের সাংসারিক ব্যস্ততাও কোনো অংশেই কম নয়। সকালের শুরুটা হয় দু’জনের ব্যস্ততা দিয়ে। সকালের খাবার টেবিল থেকে যে ব্যস্ততার শুরু, ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তা থেকে নিস্তার নেই।

নিজের তৈরি হওয়া নিয়ে তাড়াহুড়া শুরু করে জয়িতা। অন্যদিকে ইমরানের খেয়াল রাখা। এরপর সারাদিনের ক্লান্তিমাখা শরীর নিয়ে বাসায় ফিরে আবারও কাজ। ঘর-গৃহস্থালির অনেক কাজেই বাকি দিনটা কাটে তার। সন্ধ্যাবেলায় অফিসফেরত স্বামীর জন্য সময় দেওয়া। সবশেষ রাতের খাবারের আয়োজন। সকাল থেকে রাত অবধি এক দম্পতির ব্যস্ততার গল্প এটি। সত্যিই নাগরিক দাম্পত্য জীবন এমন ব্যস্ততায় ভরা।

জয়িতার ব্যস্ততা দেখে ইমরান হাত গুটিয়ে থাকে না, বরং যতটা পারে তাকে সাংসারিক কাজে সাহায্য করে যায়। দিন-রাত নববধূ জয়িতার ব্যস্ত সময়ের সঙ্গী হয় ইমরান। রান্না থেকে শুরু করে ঘর গোছানোর কাজে হাত পড়ে দু’জনেরই। অনেক কাজের চাপে একটু সময় নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়ে করতে পারে অনেক টুকিটাকি কাজ। এই-ই তো ভালোবাসার অনুভূতি!

এ তো গেল ইমরান-জয়িতার সাংসারিক জীবনের গল্প। তবে এর উল্টো গল্পও কিন্তু কম নেই। দাম্পত্যে সুখ মিলছে না, এ রকম পরিবার মিলছে অহরহ। দাম্পত্য জীবনের বোঝাপড়ায় মেনে চলতে পারেন অনেক নিয়ম।

স্বামী-স্ত্রী এখন আরও অনেক বেশি সহনশীল একজন আরেকজনের প্রতি। প্রতিযোগী নয়, বরং একান্ত সহযোগীর স্থানে আসীন হবেন বাড়ির গৃহকর্তা- এমনটা সব মেয়ের কাম্য। বিয়েটা প্রেমের হোক কিংবা পারিবারিক, সঙ্গীকে কতটুকুই জানা হয় বলুন? অনেক জানাশোনার পরও এমন কিছু বিষয় থেকে যায়, যেগুলো জানা হয়ে ওঠে না। আপাতদৃষ্টিতে যেগুলোকে ছোটখাটো মনে হয়, বিয়ের পর সে রকম অনেক কিছুই সৃষ্টি করে নানান রকমের সমস্যা। তখন মনে হয়, বিষয়গুলো সম্পর্কে বিয়ের আগেই ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত ছিল। নবদম্পতি হিসেবে স্বামী-স্ত্রী একে অন্যের প্রতি হয়ে উঠতে পারেন সহযোগী ও সব কাজের প্রেরণাদায়ক।

একই ধরনের শখ

আপনার সঙ্গীর শখগুলোর প্রতি আগ্রহ দেখান। এতে আপনার সঙ্গীও আপনার শখগুলোর প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবেন। আপনার সঙ্গীর কোনো শখ যদি আপনার বিরক্তির কারণ হয়ে থাকে, তাহলে সেটা তাকে বুঝতে দেবেন না। এতে সম্পর্কটা আরও সুন্দর হবে। সেইসঙ্গে কেটে যাবে সম্পর্কের একঘেয়েমি।

হাত ধরে হাঁটা

প্রেমের শুরুতে কিংবা বিয়ের পরপর হাত ধরেই হাঁটতেন দু’জনে। কিন্তু কিছুদিন যাওয়ার পরই হাঁটতে শুরু করেছেন নিজেদের মতো করে। সেই পরস্পরকে ছুঁয়ে থাকার স্বভাবটা কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। আবারও ধরে ফেলুন সঙ্গীর হাতটি। কারণ বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব দম্পতি হাত ধরে হাঁটেন, তাদের নিজেদের মধ্যে ভালোবাসা ও নিরাপত্তাবোধ সৃষ্টি হয়; যা সম্পর্ককে সুখের করে তোলে।

প্রতিদিন ‘ভালোবাসি’ বলা

সম্পর্কটা যতদিনের পুরোনোই হোক না কেন, প্রতিদিনই সঙ্গীকে একবার ভালোবাসার কথা জানিয়ে দিন। ভালোবাসার কথা প্রতিদিন জানিয়ে দিলে সম্পর্ক কখনোই পুরোনো হয় না।

সঙ্গীর দোষের বদলে গুণ খুঁজুন

বেশিরভাগ দম্পতিই সঙ্গীর দোষ খুঁজে বেড়াতে পছন্দ করেন। ফলে সম্পর্ক ভালো হওয়ার বদলে উল্টো খারাপ হতে থাকে। তাই অহেতুক সঙ্গীর দোষ না খুঁজে চেষ্টা করুন গুণগুলো খুঁজে বের করার। পুরুষশাসিত সমাজে কৃতিত্বমূলক কাজগুলো যে শুধু পুরুষরা করবে- সেটা যেমন একতরফা সত্যি নয়, তেমনি ঘরের কাজে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকবে শুধু নারীরা- সেটাও ঠিক নয়। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ আর সহানুভূতির মানসিকতা নিয়ে স্বামী-স্ত্রী নিতে পারেন সাংসারিক যে কোনো সিদ্ধান্তই। একগুঁয়েমি পরিহার করে একজন আরেকজনকে বুঝতে শিখুন। সবকিছুই শেয়ার বা ভাগাভাগি করে করতে শিখুন। আর পারস্পরিক ভালোবাসায় ভরে তুলুন আপনার ভালোবাসার ছোট্ট ভুবন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!