চীনে দীর্ঘস্থায়ী সাইনোসাইটিসের প্রকোপ প্রায় ৮ শতাংশ। এটি আনুমানিক ১০ কোটি ৭০ লাখ মানুষকে প্রভাবিত করে। এর মধ্যে নাকের পলিপসহ দীর্ঘস্থায়ী সাইনোসাইটিস দেখা যায় ২০ থেকে ৩৩ শতাংশ ক্ষেত্রে।

চীনা চিকিৎসকরা সতর্ক করেছেন, অস্ত্রোপচারের পরও এই সমস্যা ফিরে আসার হার অত্যন্ত বেশি। সার্জারির পর ১৮ মাস থেকে ৪ বছরের মধ্যে এটি পুনরায় দেখা দেওয়ার আশঙ্কা ২০ থেকে ৬০ ভাগ।
সম্প্রতি নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত ও মার্চের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত অ্যালার্জি, হাঁপানি ও ইমিউনোলজি বিষয়ক বিশ্ব কংগ্রেসে উপস্থাপিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অ্যামজেনের নতুন একটি ওষুধ নাকের পলিপের তীব্রতা, সার্জারির প্রয়োজনীয়তা ও প্রদাহবিরোধী স্টেরয়েড ব্যবহারের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে সাহায্য করেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, টেজসপায়র নামের ওষুধটি ব্যবহারের ফলে নাকের পলিপের তীব্রতা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে এবং চিকিৎসার অন্যান্য গুরত্বপূর্ণ মাপকাঠিতেও ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, ওষুধটি নাকের পলিপ সার্জারির প্রয়োজনীয়তা ৯৮ শতাংশ এবং প্রদাহবিরোধী স্টেরয়েড ব্যবহারের মাত্রা ৮৮ শতাংশ কমিয়েছে।
একটি পৃথক গবেষণায় দেখা গেছে, এশিয়ার গুরুতর, অনিয়ন্ত্রিত হাঁপানি রোগীদের মধ্যে ওই ওষুধটি ব্যবহারে এক বছরের মধ্যে হাঁপানি বাড়ার হার ৭৪ শতাংশ কমেছে। সেই সঙ্গে এটি ফুসফুসের কার্যক্ষমতা, হাঁপানির নিয়ন্ত্রণ ও স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত জীবনমান উন্নত করেছে।
চীনের ফুতান ইউনিভার্সিটির আই অ্যান্ড ইএনটি হাসপাতালের অধ্যাপক ওয়াং তেহুই বলেন, এই গবেষণার ফলাফল ক্লিনিক্যালি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি রোগীদের জন্য সার্জারি ও স্টেরয়েড ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে রোগের বোঝা উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ‘অনেক রোগীকে বারবার অস্ত্রোপচার করতে হয় এবং দীর্ঘমেয়াদি গ্লুকোকর্টিকয়েড ব্যবহারের ফলে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকিতে পড়তে হয়। এই নতুন ওষুধ সেই সমস্যার কার্যকর সমাধান দিতে পারে।’
উল্লেখ্য, অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অ্যামজেন; দুটো প্রতিষ্ঠানেরই চীনের বড় বিনিয়োগ রয়েছে।