class="post-template-default single single-post postid-13757 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

ফ্ল্যাট কেনার আগে

ফ্ল্যাটশহরে নিজের একটি ফ্ল্যাট হবে। অনেক স্বপ্নে বোনা ইচ্ছে পূরণে পছন্দ অনুযায়ী একটি ফ্ল্যাট প্রায় ঠিকঠাক করেও নিলেন। হয়তো ভাবছেন দু-এক দিনের মধ্যেই সব চূড়ান্ত করে ফেলবেন। কিন্তু চূড়ান্তভাবে ফ্ল্যাট কেনার আগে কিছু বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে আপনাকে।

দলিল-দস্তাবেজ ঠিক আছে কি না

ফ্ল্যাটের মালিক বা নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের কেনাবেচা-সংক্রান্ত যাবতীয় দলিল-দস্তাবেজ সঠিক আছে কি না, তা শুরুতেই যাচাই–বাছাই করে নিতে হবে। জমির দলিলের ধারাবাহিকতা ঠিক আছে কি না, জমির নামজারি করা আছে কি না, রাজউকের আওতাধীন হলে বিক্রি করার অনুমতি আছে কি না এবং অনুমোদিত নকশা মেনে ফ্ল্যাটটি নির্মাণ করা হয়েছে বা হচ্ছে কি না, তা সুচারুভাবে দেখতে হয়। প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞ আইনজীবীর মতামতও নেওয়া যেতে পারে। যে প্রতিষ্ঠানের বা ব্যক্তির ফ্ল্যাটটি কিনতে যাচ্ছেন, তার মালিকানা সঠিক আছে কি না, যাচাই করতে হবে। মালিকানা যাচাইয়ের জন্য ফ্ল্যাটের জমির তফসিল বা বিবরণ জেনে ভূমি অফিস, সাবরেজিস্ট্রি অফিসসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রয়োজনে খোঁজ নেওয়া যেতে পারে। জমিটি যদি আবাসন প্রতিষ্ঠান কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে নিয়ে থাকে, তাহলে এ সম্পর্কে চুক্তিপত্র দেখতে হবে। প্রস্তাবিত ফ্ল্যাটটি সরেজমিনে নকশার সঙ্গে বাস্তবে মিলিয়ে দেখতে হবে। অনেক সময় আমমোক্তারের মাধ্যমে জমির মালিক ডেভেলপারের সঙ্গে চুক্তি করতে পারেন। আমমোক্তার সঠিক যাচাই করে দেখতে হবে। প্রয়োজনে প্রকৃত মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেখতে হবে প্রকৃত মালিক সঠিক কি না এবং আমমোক্তারটি যথাযথ হয়েছে কি না।

স্পষ্ট আলোচনা এবং চুক্তিনামা

ফ্ল্যাট কেনার সময় বিক্রেতা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সব শর্ত ও প্রতিশ্রুতি স্পষ্ট করে জেনে নিতে হবে। এ জন্য খোলাখুলি আলোচনা করতে হবে। প্রয়োজনে শুরুতেই চুক্তি সম্পাদন করুন। চুক্তিতে সব শর্ত স্পষ্ট করে লিখে নিতে হবে। বিশেষ করে লিফট, স্যানিটারিসামগ্রী, জেনারেটর, পানি সরবরাহের মতো বিষয়গুলো চুক্তিতে নির্দিষ্ট করতে হবে। চুক্তি সম্পাদন করে একটি মূল কপি নিজের কাছে রাখতে হবে। ফ্ল্যাটে বিদ্যুৎ–সংযোগ আছে কি না এবং তা থাকলে বিদ্যুৎ বিল কি বাণিজ্যিক না আবাসিক তা যাচাই করে নিতে হবে।

গ্যাস–সংযোগ নেওয়ার কথা থাকলে তা আইনগতভাবে নেওয়া হয়েছে কি না, দেখে নিন। যদি কিস্তির মাধ্যমে টাকা পরিশোধের কথা থাকে তাহলে কত কিস্তি এবং ফ্ল্যাট হস্তান্তর কবে হবে, এ বিষয়টি যেন সুস্পষ্ট করে চুক্তিনামায় লেখা থাকে। সব ধরনের ফি, রেজিস্ট্রেশন ফি এবং ফ্ল্যাট হস্তান্তরের সময় কার কী দায়িত্ব স্পষ্ট করে জেনে নিতে হবে।

মামলা–মোকদ্দমা নেই তো?

যে ফ্ল্যাটটি কিনছেন, সেটি বা সেটির জমি নিয়ে কোনো মামলা–মোকদ্দমা আছে কি না তা বিক্রেতার কাছ থেকে জেনে নিতে হবে। ভূমি কর না দেওয়ার কারণে কোনো সার্টিফিকেট মামলা আছে কি না, সেটারও খোঁজ নিতে হবে। প্রস্তাবিত ফ্ল্যাটটি সরকারের খাসজমিতে পড়েছে কি না, যাচাই করে নিন। কোনো ব্যাংকের কাছে বন্ধক আছে কি না, তা খেয়াল রাখতে হবে। কোনো অর্থঋণ–সংক্রান্ত মামলায় ফ্ল্যাটটি ‘দায়বদ্ধ’ কি না কিংবা নিলামে উঠছে কি না, তা–ও জানা জরুরি।

অনলাইনে ফ্ল্যাট কিনছেন?

বর্তমানে অনলাইনে ফ্ল্যাট কেনার সুযোগ রয়েছে। অনলাইনে ফ্ল্যাটের খোঁজখবর নিয়ে সরেজমিনে দেখেশুনে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েই ফ্ল্যাট কেনা উচিত। যে প্রতিষ্ঠান থেকে ফ্ল্যাট কিনছেন সেটি আইন অনুযায়ী নিবন্ধিত কি না এবং রিহ্যাবের সদস্য কি না, দেখতে হবে।

লেখক: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!