আপনি আপনার সন্তানকে হয়তো স্বাস্থ্যকর খাওয়াই দিচ্ছেন, কিন্তু তা আপনার সন্তানের জন্য যথেষ্ট নয়?
বাচ্চাকে নিজের মতন করে গড়ে নেওয়া প্রত্যেক মায়ের স্বপ্ন। প্রত্যেক মা-ই চান তার সন্তানকে সেরার সেরা তৈরি করতে। তবে খাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার বাচ্চা যে কতটা খুঁতখুঁতে, তা আপনার থেকে ভাল আর কেউ জানেন না। একজন মা হিসেবে আপনি অবশ্যই চান আপনার সন্তানকে পুষ্টিকর খাওয়ার খাওয়াতে। বিশেষত সবুজ শাক-সবজি, যা ভিটামিন-এ এবং অন্যান্য পুষ্টিগুণে ভরপুর। কিন্তু বেশিরভাগ বাচ্চাই এই সবজির নাগালের বাইরে থাকতে চায়। আর সন্তানকে পুষ্টিকর খাওয়ার দেওয়ার ক্ষেত্রে সব মায়েরাই নানান কৌশল অবলম্বন করেন। কিন্তু তারপর? যদিও সব পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়ার শেষেও, আপনার সন্তানের শরীর সেই পুষ্টির সমস্তটা শোষণ করে না।
কি অবাক হচ্ছেন? এটাই সত্যি। কোনও খাদ্য থেকে নির্গত পুষ্টি শরীর কতটা শোষণ করবে তা নির্ভর করে শরীরের জৈব শোষণ ক্ষমতার উপর। পুষ্টি বিজ্ঞানের ভাষায় যা ‘বায়োঅ্যাভেলেঅ্যাবিলিটি’। চলুন দেখে নেওয়া যাক।
শরীরের জৈব শোষণ ক্ষমতার বৈজ্ঞানিক ধারণা
আমরা যা খাই, তার থেকে নির্গত পুষ্টির সমস্তটা আমাদের শরীর শোষণ করতে পারে না। এটা নির্ভর করে শরীরের জৈব শোষণ ক্ষমতার উপর। এর মাধ্যমে খাদ্য থেকে সবথেকে বেশি পরিমান পুষ্টিগুণ শোষণ করে তা আমাদের রক্তের সঙ্গে মিশিয়ে দেয়। সেই পুষ্টিগুণ আমাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে। অর্থাৎ, খাদ্য থেকে অল্প পরিমান পুষ্টিই নির্গত হয়। পুষ্টিগুণ পাওয়ার সবথেকে কার্যকারী উপায় হল যে কোনও খাদ্যকে চিবিয়ে খাওয়া। যা শিশুরা একদমই করে না। প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাটের মতো ম্যাক্রো-নিউট্রিয়েন্টগুলির ক্ষেত্রে প্রায় ৯০ শতাংশই শোষণ করে নেয় শরীর। যেখানে বিভিন্ন মাইক্রো-নিউট্রিয়েন্টসগুলির শোষণ ক্ষমতা বিভিন্ন।
জৈব শোষণ ক্ষমতার প্রয়োজনীয়তা
বিভিন্ন পুষ্টির বিভিন্ন ধরণের জৈব শোষণ ক্ষমতা রয়েছে। এমনকী আপনার বাচ্চা কোনও পুষ্টির জন্য যে খাওয়ার খাচ্ছে, তার শোষণ প্রক্রিয়াও ভিন্ন। যেহেতু ভিন্ন ধরনের পুষ্টির হজম শক্তিও ভিন্ন, তাই সঠিক পুষ্টি বেছে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আগেই বলেছি, কোনও খাদ্য থেকে শরীর সমস্ত পুষ্টি শোষণ করতে পারে না, এর অন্যতম মূল কারণ হল ‘ফাইটেটস’ অর্থাৎ অ্যান্টি নিউট্রিয়েন্টস। উদ্ভিদ, বীজ, কিংবা বাদাম ফাইটিক অ্যাসিড রূপে ফসফরাস মজুত করে রাখে। যখন তা কোনও মিনারেলের উৎসের সমস্পর্শে আসে তা, ফাইটেট-এ পরিবর্তিত হয়। এটি প্রাণীদেহে আয়রণ, আয়োডিন, জিঙ্ক, ভিটামিন এ- এর মতো মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টসগুলির শোষণ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। যারা গাছ-পাতা খান, তারা খাদ্যের সঙ্গে ফাইটিক অ্যাসিডও গ্রহণ করেন। যা ভেগানদের জন্য আরও বড় সমস্যা। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ভেগান-রা, সম্পূর্ণ নিরামিশাষী বা আমিষাশীদের তুলনায় বেশি পরিমাণে আয়রণ গ্রহণ করে। যদিও তাদের শরীরে আয়রণের পরিমান কম, এই অ্যান্টি-নিউট্রিয়েন্টসের কারণে। বলা বাহুল্য, ফাইটেট, শরীরের আয়রণর শোষণ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
সঠিক পুষ্টিগুণ পাওয়ার সহজ রাস্তা
শরীরের পর্যাপ্ত পরিমান পুষ্টিগুণ গ্রহণ করতে হলে কিছু সহজ কৌশল জেনে রাখা প্রয়োজন।
প্রথমত, যে কোনও খাদ্যই চিবিয়ে খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে বেশিরভাগ খাওয়ারই মুখের মধ্যেই ভেঙ্গে যায়। যা খাওয়ার থেকে শরীরে সঠিক পুষ্টি শোষণ করতে সাহায্য হয়।
দ্বিতীয়ত, সবজি রেখে পরে খাওয়ার পরিবর্তে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা খেয়ে নেওয়া উচিৎ। কেন না সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়।
তৃতীয়ত, সবজিকে জলে ভিজিয়ে রাখা, কেটে বা মিক্স করে খাওয়া অনেক বেশি উপকারী। যেমন, সবজিকে বা কোনও বিনসকে জলে ভিজিয়ে রাখলে ফাইটিক অ্যাসিড কমে যায় এবং আপনার বাচ্চার শরীরে ওই খাদ্যের পুষ্টি তাড়াতাড়ি শোষণ হয়।
চতুর্থত, খাদ্যকে কৌশলগতভাবে খাওয়াও আমাদের শরীর-স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল। যেমন ভিটামিন সি-এর সঙ্গে আয়রণ জাতীয় খাওয়ার খেলে তার শরীরে অনেক বেশি পুষ্টি সংরক্ষিত হয়। এমনকী ভিটামিন সি শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।
কী ভাবে আপনার বাচ্চাকে আরও পুষ্টি পেতে সাহায্য করবেন?
বাচ্চার সামগ্রিক বিকাশের জন্য সঠিক ও পর্যাপ্ত পুষ্টি অত্যন্ত প্রয়োজন। আপনার সন্তানের শরীরের জৈব শোষণ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কেবল পুষ্টিকর খাদ্যের দিকে লক্ষ্য রাখলেই হবে না, ভাবতে হবে খাদ্যের পরিপুরকের কথাও। কারণ এটিই আপনার বাচ্চাকে গড়ে তোলার সঠিক সময়। আর তাই সঠিক পুষ্টিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
উচ্চ জৈব শোষণ সম্পন্ন হেল্থ ড্রিংকগুলি খুব সহজেই শরীরে সঠিক পুষ্টির যোগান দেয়। আপনার বাচ্চার প্রতিদিনের ডায়েটে এই ড্রিংকগুলি যুক্ত করলে, আপনার বাচ্চা পর্যাপ্ত পুষ্টি পাচ্ছে কি না সেই চিন্তা অনেকটাই কমে যাবে। এ ছাড়া বাজার চলতি এই ড্রিংকগুলি স্বাদে ও গন্ধেও অতুলনীয়। যা আপনার শুধু আপনার বাচ্চার মন যোগাবে না, এর ড্রিংকগুলির মধ্যে বাচ্চার শরীরের জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণও বর্তমান।