আমাদের সবার পরিচিত একটি সবজি গাজর। দেখতে লালচে ধরণের এই সবজীটি আমাদের পাশের যেকোনো ফলের/সবজির দোকানে পাওয়া যায়।
গাজর শীতকালীন সবজি হলেও প্রায় সারাবছরই পাওয়া যায়। এটি খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিগুণে ভরা। যা বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
গাজর এ রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ। এছাড়াও আছে নানাবিধ উপকার, যা আপনাকে সুন্দর ত্বক উপহার দেবে ও ক্যান্সার থেকে সুরক্ষাও দেবে।
গাজর কেন খাবেন, আসুন জেনে নিই:
গাজরে উপস্থিত ভিটামিন ‘এ’ লিভারে গিয়ে শরীর থেকে নানা ধরনের টক্সিন-জাতীয় খারাপ উপাদান পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও গাজরের এ উপাদান লিভার থেকে অতিরিক্ত চর্বি সরিয়ে ফেলতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে গাজরের ফাইবার কোলন পরিষ্কার রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে রক্ষা করে।
পুরুষের সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে গাজর। এছাড়াও তাদের বীর্যকে পুনরুজ্জ্বীবিত করতেও ভূমিকা রাখে গাজর। সম্প্রতি গবেষণায় এমন তথ্যই বেরিয়ে এসেছে।
গাজর খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কম থাকে। গাজরে আছে ফ্যালকেরিনল ও ফ্যালকেরিনডায়ল, যা আমাদের শরীরে অ্যান্টিক্যান্সার উপাদানগুলোকে পূর্ণ করে। তাই গাজর খেলে ব্রেস্ট, কোলন, ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
এ ছাড়া গাজর বাইরে থেকেও ত্বকের অনেক উপকার করে। ফেসিয়ালের উপাদান হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
গাজর দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। এতে আছে বিটা ক্যারোটি, যা আমাদের লিভারে গিয়ে ভিটামিন ‘এ’-তে বদলে যায়। পরে তা চোখের রেটিনায় গিয়ে দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে, সেই সঙ্গে রাতের বেলা অন্ধকারেও চোখে ভালো দেখার জন্য দরকারি এমন এক ধরনের বেগুনি পিগমেন্টের সংখ্যা বাড়িয়ে দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে।
সুন্দর ও সুস্থ-সবল দাঁতের জন্য গাজরের জুড়ি মেলা ভার। গাজর আপনার দাঁত ও মুখের ভেতর পরিষ্কার রাখে। গাজরের মিনারেলগুলো দাঁত মজবুত রাখতে সাহায্য করে।
হৃৎপিন্ডের নানা অসুখে এটি খুব ভালো কাজ করে। এর ক্যারোটিনয়েডগুলো হৃৎপিণ্ডের নানা অসুখের ওষুধ হিসেবে কাজ করে। স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে হলে এখনই নিজের খাবারের তালিকায় যুক্ত করুন গাজর। সালাদ হিসেবেও খেতে পারেন বা তরকারিতেও দিতে পারেন।
গাজর শুধু শরীরের জন্য ভালো তাই নয়, এটি আমাদের জন্য অ্যান্টি এজিং উপাদান হিসেবেও কাজ করে। এতে যে বিটা ক্যারোটিন আছে তা আমাদের শরীরের ভেতরে গিয়ে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে আমাদের শরীরের ক্ষয়প্রাপ্ত কোষগুলোকে ঠিকঠাক করে।
গাজর ভালো অ্যান্টিসেপটিক হিসেবেও কাজ করে। এটি শরীরে কোনো ক্ষত হলে তা ইনফেকশন হওয়া থেকে রক্ষা করে। কোথাও কেটে বা পুড়ে গেলে সেখানে লাগিয়ে নিন কুচি করা গাজর বা সিদ্ধ করা গাজরের পেস্ট। আপনার ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না।
গাজর আপনার ত্বককে ভেতর থেকে সুন্দর করে তুলতে সাহায্য করবে। এর ভিটামিন ‘এ’ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আপনার ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর করবে। সেই সঙ্গে ভিটামিন ‘এ’ ত্বকের অযাচিত ভাঁজ পড়া, কালো দাগ, ব্রণ, ত্বকের রঙের অসামঞ্জস্যতা ইত্যাদি দূর করে আপনাকে সুন্দর হয়ে উঠতে সাহায্য করবে।
গাজর খুবই কমদামী কিন্তু উপকারি একটি সবজি। তাই সুস্থ থাকতে প্রতিদিন গাজর খান।