আফরিন নাহার, সিএমজি বাংলা: বসন্তকাল শুরুর পর থেকে ধীরে ধীরে রঙিন হয়ে উঠছে চীনের প্রকৃতি। এরই মধ্যে নানা রঙের ফুলে ছেয়ে গেছে চারপাশ। সরিষাজাতীয় হলদে ফুলে ভরে গেছে সিচুয়ান প্রদেশ। দিগন্তজুড়া মাঠে শুধু রেপসিড ও কোলি ফুল।
আর ফুলের এমন সৌন্দর্য্য দেখতে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন প্রকৃতিপ্রেমিরা। কারণ ফ্লাওয়ার টুরিজম বা ফুল পর্যটন এবং গ্রাম পর্যটন সংস্কৃতি এখন চীনে দারুণ জনপ্রিয়।
ম্যাগনোলিয়া, চেরি ও অন্যান্য ফুলও ফুটেছে মাঠ ও বনজুড়ে। বসন্তে আবহাওয়া উষ্ণ হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ফুটছে এসব বাসন্তী ফুল। এইসব বাসন্তী ফুলের শোভা কাছে টানছে পর্যটকদের।

ঘুরতে আসা পর্যটক বলেন, প্রতি বছর বসন্তে ফুলের শোভা দেখতে আমরা এখানে আসি। আমি কাছেই থাকি। এই পার্কে ছেলেমেয়ে ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেড়াতে আসি।
সিচুয়ান প্রদেশের পাইছুয়ান ছিয়াং স্বায়ত্বশাসিত জেলার ম্যাগনোলিয়া ফুলের শোভা খুব বিখ্যাত। চীনা ভাষায় এই ফুলকে বলা হয় সিন ই ।
বসন্তকালের এই সময়টাকে বলা হয় ছুন ফান দিয়ান। এটি হলো চীনা ক্যালেন্ডারের চতুর্থ সৌরপর্ব। চীনের ঐতিহ্যবাহী ক্যালেন্ডারে বছরকে ২৪টি সৌরপর্বে ভাগ করা হয়। ছুন ফান পর্ব হলো বসন্তের আবহাওয়া পরিবর্তনের পর্ব । ২০ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে এই পর্ব। চীনে এখন পুরোদমে চলছে বসন্তকালীন কৃষিকাজ। ছুন ফান ঐতিহ্যবাহী কৃষিকাজ শুরুরও ইঙ্গিত দেয়।
কানসু প্রদেশের চোওছু কাউন্টিতে র্যাপসিড ফুলের সোনালি শোভা দেখতে আসছেন পর্যটকরা। এই অঞ্চলের ৫শ’ ৬৩ হেক্টর এলাকা জুড়ে র্যাপসিড ফুল উৎপাদন করা হয়েছে। ২০২১ সালে চীনে ২.২ মিলিয়ন পর্যটক গ্রাম পর্যটন করেছেন এবং এ থেকে আয় হয়েছে ১ বিলিয়ন ইউয়ানের বেশি।

এদিকে, কুইচৌ প্রদেশে ৮০০ হেক্টর জায়গায় স্থানীয় সরকারের সহযোগিতায় জনগণ ফলের গাছ লাগিয়েছে। এই গাছগুলো ইটকাঠের শহরকে করে তুলেছে সবুজ। কুইচোও ছাড়াও হ্যনান প্রদেশে বাসন্তী প্লাম, নাসপতি, চেরী ফুল ফোঁটায় প্রকৃতির শোভা আরো বেড়েছে।
চিয়াংসু প্রদেশে ইয়াংজি নদীর নানথং শহরের অংশে ডলফিন বা শুশুকদের দেখা মিলছে। ইয়াংজি নদীর এই শুশুক বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী হিসেবে রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা পায়। পরিবেশের উন্নয়নের ফলে আবার ফিরে আসছে এই শুশুক। নানথং বর্তমানে পরিবেশবান্ধব শহর হিসেবে কাজ করছে। এখানকার পার্কগুলোতে বাসন্তী ফুলের দৃশ্য পর্যটকদের মুগ্ধ করছে।