class="post-template-default single single-post postid-23260 single-format-standard wp-custom-logo group-blog vl-boxed aa-prefix-matin-">
Shadow

ছাদে মুরগি পালন

ছাদে সবজি ও ফল নিয়মিত চাষ হচ্ছে পাশাপাশি মাছ ও চাষ হচ্ছে কিন্তু আজকে আমরা আলোচনা করবো ছাদে মুরগি পালন করার পদ্ধতি নিয়ে। সবাই মনোযোগ দিয়ে আর্টিকেল টি পড়ুন এবং শেয়ার করে দিন ছাদ বাগান প্রেমী বন্ধুদের।

গ্রাম বা শহরে ছাদে বাগানের পাশাপাশি মুগরি পালন করা যায়। ছাদে পালনের জন্য মুরগি বা জাপানি কোয়েল পাখিই সবচেয়ে উপযোগী। তবে কবুতর বা তিতির চাষও করা যেতে পারে। ছাদে মুরগি পালন করতে হলে লেয়ার (ডিম উংপাদন জন্য) পালন করা ভাল।

ছাদে পালন উপযোগি মুরগির জাত : আমাদের দেশে লেয়ার মুরগির বিভিন্ন জাত পাওয়া যায়। হাইব্রিড জাতের মুরগি ১৮ – ২০ সপ্তাহ ( সাড়ে চার মাস ) বয়সে ডিম দেওয়া শুরু করে এবং ৭২ – ৮৪ সপ্তাহ ( ১৮ মাস বা দেড় বছর ) পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে। জাত ভেদে প্রতিটি মুরগি বছরে ২৮০ – ৩৩০ টি পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে। ছাদে পালনের উপযোগি কিছু হাইব্রিড জাত হলো লোহম্যান ব্রাউন, হাই-লাইন ব্রাউন, ব্যাবোলনা টেট্রা এস এল, নিক চিক ব্রাউন, বোভানস গোল্ড লাইন, বি. ভি. -৩০০, ইসা ব্রাউন ইত্যাদি।

মুরগি পালন পর্বকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় :

১. বাচ্চা মুরগি পালন।

২. বয়স্ক মুরগি পালন।

১. বাচ্চা মুরগি পালন-

বাচ্চা পালন পর্বকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা :- ক. ব্রুডিং পর্ব , খ. গ্রোয়িং বা বৃদ্ধি পর্ব।

ক. ব্রুডিং পর্ব : এ পর্বটি মুরগির জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সময়ের সঠিক যত্নের ওপরই এদের ভবিষ্যত জীবনের উতপাদন নির্ভর করে। এ পর্বটির স্থিতিকাল ১ – ৩৫ দিন পর্যন্ত।

খ. গ্রোয়িং বা বৃদ্ধি পর্ব : যেহেতু এটি বৃদ্ধি পর্ব তাই এ পর্বের সঠিক যত্নের ওপর এদের বৃদ্ধি ও ভবিষ্যত উতপাদন অনেকাংশে বির্ভর করে। এই পর্বের স্থিতিকাল ৩৫ – ৭২ দিন পর্যন্ত।

২. বয়স্ক মুরগি পালন –

ছাদে অল্প পরিসরে মুরগি পালন করতে হলে এই পর্ব থেকে শুরু করা ভাল। এই পর্ব শুরু হয় ৭২ দিন থেকে ১.৫ বছর পর্যন্ত। পরিচিত বা কোন নির্ভর যোগ্য খামার থেকে পুলেট ক্রয় করে পালন করলে ভাল হয়।

ছাদে মুরগি পালনের পদ্ধতি : মুরগি পালনের অনেক গুলি পদ্ধতি আছে তার মধ্যে ছাদে পালনের উপযোগি পদ্ধতি হল ব্যাটারি বা খাচা পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে প্রতিটি মুরগিই বিশেষভাবে তৈরি খাচার ভিতর পালন করা হয়। এ খাচা মুরগির সংখ্যার উপর নির্ভর করে এক তলা বা বহু তল তৈরি করা হয়। খাচা পদ্ধতিতে তুলনামূলক জায়গা কম লাগে। তাছাড়া এ পদ্ধতিতে রোগজীবাণুর আক্রমণ ও কম হয়। ডিম পাড়া মুরগির জন্য এটি একটি আর্দশ পদ্ধতি।

এই পদ্ধতিতে মুরগি পালন করলে তুলনা মুলক খাদ্য খরচ কম হয় এবং ডিম উতপাদন বেশি হয়। খাচা তৈরিতে প্রাথমিক খরচ কিছুটা বেশি হয়। তবে একই খাচা বার বার ব্যবহার করা যায়।

৩ ফুট লম্বা, ১ ফুট চওড়া, ১.২ ফুট উচ্চতার একটি খাচায় ৬ টা মুরগি পালন করা যায়। এমন তিনটি খাচা একত্র করে একটি তিন তলা বিশিষ্ট খাচা তৈরি করা যায়। যেখানে মোট ১৮ টা মুরগি পালন করা যায়।
খাচায় ১৮ টা মুরগির আয় ব্যয় হিসাব বর্ননা করা হল।

নিয়মিত পরিচর্যা এবং রোগবালাই দমনঃ

দে ঘর করে মুরগি পালন করতে হলে অবশ্যই এর নিয়মিত পরিচর্যা নিতে হবে।
১। নিয়মিত মল পরিস্কার করতে হবে
২। অতিরিক্ত খাবার না দেয়া সদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে
৩। কোন রোগ বালাই বা চাল চলনে সমস্যা আছে কিনা লক্ষ্য রাখা
৪। মুরগির মল তরল এবং চুনার মত কিনা সেদিকে লক্ষ্য রাখা
৫। কোন রোগ বালাই বা সন্দেহজনক কিছু লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ভেট ডক্টরের পরামর্শ নেয়া।

ছাদে মুরগি পালনে স্থায়ী খরচ:

১. খাচা তৈরি খরচ (খাবার পানির পাত্র ও ময়লার ট্রে সহ) – ২,৫০০ টাকা।
২. ১৮ মুরগি ক্রয় খরচ ( প্রতিটি ৫০০ টাকা হিসাবে ) – ৯,০০০ টাকা।

মোট স্থায়ী খরচ : ১১,৫০০ টাকা।

অস্থায়ী খরচ :
খাবার খরচ ( মুরগি প্রতি প্রতিদিন ৩.৫ টাকা হিসাবে দেড় বছরের / ৫৫০ দিন) – ৩৪,৬৫০ টাকা।
ঔষধ খরচ ( ভিটামিন / অন্যান্য ) – ১,৫০০ টাকা।

মোট খরচ: ৪৭,৬৫০ টাকা।

মোট আয়:
ডিম ( গড়ে ৮০% ডিম হিসাবে ৫৫০ দিনে মোট ডিম ৭৯২০ টা ৭.৫ টাকা প্রতি ডিম ) – ৫৯,৪০০ টাকা।
ডিম দেওয়া শেষে মুরগি বিক্রয় বাবদ ( প্রতি মুরগি ২০০ টাকা হিসাবে) – ৩,৬০০ টাকা।

মোট আয়: ৬৩,০০০ টাকা।

নিট লাভ = ৬৩,০০০ টাকা – ৪৭,৬৫০ টাকা = ১৫,৩৫০ টাকা। সাথে খাচা টা ফ্রি হয়ে গেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!