অন্যান্য দেশের সাথে সাথে বাংলাদেশেও অনেকে গেইমসের মাধ্যমে ক্যারিয়ার গড়ার দিকে ঝুঁকে পড়েছে। কারণ গেইমস খেলেও আয় করা যায় টাকা। ই-স্পোর্টস এর সম্মিলিত ভাবে লক্ষ লক্ষ সদস্য আছে বাংলাদেশে। গেইমসের ভিডিও স্ট্রিমিং করে আয়ও করছেন অনেকে।
লিখেছেন সানজিদা নূর
এক হিসাবে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশের উপরের সারির ই-স্পোর্টস প্লেয়াররা মাসে প্রায় ৫০০০০-৭০০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করে। পাবজির অফিশিয়াল টুর্নামেন্টে ২০২১ সালে অংশগ্রহণও করছিল বাংলাদেশ পাবজি গেমার দল। পাবজি খেলেও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গিয়ে আয় করা যাচ্ছে প্রচুর টাকা।
মূলত ই-স্পোর্টস ইন্ডাস্ট্রি সারাবিশ্বসহ বাংলাদেশেও ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হচ্ছে। এমনকি বিশ্বের অন্যান্য দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে ই-স্পোর্টস।এক্ষেত্রে উদাহরণ হতে পারে, ২০১৯ সালে আমেরিকার গেমিং ইন্ডার্সষ্ট্রি প্রায় ১৯.৩ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেন এবং এর কারণে প্রায় ৪,২৯০০০ চাকরির ব্যবস্থা হয়েছে। এমনকি, সৌদি আরবে প্রায় প্রচুর পরিমাণ মানুষ গেমিং ইন্ডাস্ট্রিতে ঢুকছে। এবং এর ফলে এটা সৌদি আরবের জিডিপি তে ২১ বিলিয়ন ডলার যোগ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এতেই বোঝা যায় গেইমস খেলে টাকা আয় করার কৌশল এখন সারা বিশ্বই জানে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশে গেমিং সাধারণভাবে আয়ের একটা অংশ হয়ে দাড়িয়েছে। গোল্ডমান সাকস এর রিপোর্ট অনুযায়ী, এইচবিও, নেটফ্লিক্স, ইএসপিএন – এর সম্মিলিত দর্শকের তুলনায় ই-স্পোর্টস এর দর্শক সংখ্যা কয়েকগুন বেশী। আজকের এই ১০ বিলিয়ন ডলারের গেইমস ইন্ডাস্ট্রি ২০২৪ সালের মধ্যে ২৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াবে। তবে যেকোন গেমকে ই-স্পোর্টস বলা যায় না। ই-স্পোর্টস হতে হলে এর মূলত দুইটা বৈশিষ্ট্য থাকতে হবেই। প্রথমত, এটা একটি প্রতিযোগীতামূলক গেম হতে হবে। দ্বিতীয়ত, ও-ই গেমটার অফিশিয়াল একটা টুর্নামেন্ট থাকতে হবে। যেমন – ভালোরেন্ট, পাবজি, কাউন্টার স্ট্রাইক,লিগ অফ লেজেন্ড’স।
গেমসগুলোর নির্দিষ্ট একটা সময় পরপর তাদের অফিশিয়াল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এছাড়া অনেক অনলাইন গেম আছে যেগুলি খুবই জনপ্রিয় তবে তাদেরকে ই-স্পোর্টস হিসেবে ধরা যায় না।
আরেকটি ই-স্পোর্টস ডোটা.টু দিয়ে লাখ লাখ ডলার আয়ও করছেন প্লেয়াররা। তবে, এখন অবধি ডোটা গেইমস খেলে টাকা আয় করা লোকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আয় করা প্লেয়ার জোহান স্যান্ডস্টেইন। এখান থেকে জোহান- এর আয় ৬.৬ মিলিয়ন ডলারেরও বেশী। এবং তাকে এযাবত কালের সবচেয়ে বেশী টাকা আয় করা গেমার বলা হয়।
বাইরের দেশে যারা প্রো- গেমার আছে তারা প্রত্যেকে মাসে গেইম খেলে ৪০০০-৫০০০ ডলার পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকে। টুর্নামেন্ট এর প্রাইজ মানি হিসেবে ৫০০০০ ডলার পর্যন্ত থাকে এবং গেম স্ট্রিমিং করে ১০০০-২০০০ ডলার আয় করতে পারেন।
গেম খেলে কে কি করে ফেলেছে? এই প্রশ্নের জবাবে বলা যেতে পারে যে, গেম খেলে লাখ লাখ ডলার আয় করেছেন অনেকে। গেমিং দিয়ে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি টাকা আয়ের তালিকায় আছেন অনেকেই। যেমন, ডোটা.টু দিয়ে ৬.৬ মিলিয়ন ডলার আয় করেন জোহান স্যান্ডস্টেইন, তারপরের তালিকায় আছেন-
– কাইলি বুঘা গিয়ার্সডর্ফ ফর্টনাইট খেলে আয় করেছেন ৩.২ মিলিয়ন ডলার।
– পিটার ডুপরিন রাসমুসেন সিএস.গো খেলে পেয়েছেন ১.৯ মিলিয়ন ডলার।
– ইয়ান পোর্টার কল অফ ডিউটি খেলে জেতেন ১.৩ মিলিয়ন ডলার।
– লি ফেকার সাঙ্গ হিয়াক ১.৩ মিলিয়ন ডলার আয় করেন লিগ অফ লিজেন্ডস খেলে।
২০২১ সালে যে সাতটা গেমিং য়ের প্রতিযোগীতা হয়েছে, সেসব প্রতিযোগীতার ‘প্রাইজ মানি’ অর্থাৎ পুরস্কার হিসেবে দেয়া টাকার অংশ টার দিকে তাকালেই বোঝা যাবে গেমিং থেকে আয়ের পরিমাণ কিরকম হতে পারে।যেমন-
গেইমস খেলে কেমন টাকা আয় করা যায়?
ডোটা.টু – ৪৭.২ মিলিয়ন ডলার
সিএস.গো – ২১ মিলিয়ন ডলার
পাবজি ব্যাটলগ্রাউন্ডস -১৬ মিলিয়ন ডলার
পাবজি মোবাইল- ১৪.৫ মিলিয়ন ডলার
এরেনা অফ ভেলর- ১২.৩ মিলিয়ন ডলার
ফর্টনাইট – ৯.৫ মিলিয়ন ডলার
লিগ অফ লিজেন্ডস – ৭.৩ মিলিয়ন ডলার