এই যে ধরোই না, দিব্যি কলেজে ক্লাস করতে ছেলেটার পাশে বসে, ক্লাসের ফাঁকে-ফাঁকে খুনসুটি, হাসি, ঠাট্টা, লেগপুলিং— সবই হত জমিয়ে… তারপর হঠাৎ কী জানি কী করে দুম করে প্রেমে পড়ে গেলে তার। আবিষ্কার করে বসলে, ও শুধু যেন আর বন্ধুই নয়, তার চেয়েও বেশি… কিন্তু সেটা বের হতেই তোমার মাথায় হাত! কিংবা অঙ্ক কোচিং ক্লাসের সেই মেয়েটা— রোজই ক্লাসে যেতে মন দিয়ে অঙ্ক করবে বলেই, কিন্তু তোমার আর দোষ কী বলো, আড়চোখে তাকাতে গিয়ে সেই যে চার চক্ষুর মিলন হয়ে যেত, তারপর আর ক্লাসে মনই বসত না।
তা প্রেমে তো পড়াই যায়, তাতে কোনও সমস্যা হওয়ার কথাও নয়, কিন্তু প্রেমে পড়ার পর? ধরো, যার প্রেমে তুমি পড়েছ, তাকে সাহস করে কথাটা বলতে গেলে। এবার সে-ও যদি তোমার প্রেমে হাবুডুবু খায়, তা হলে তো ঠিক আছে, নৌকো চলবে গড়গড় করে। কিন্তু যদি সে তোমার প্রেমে না পড়ে? যদি না মেনে নেয়? তা হলে কিন্তু বস কেস জন্ডিস। কিন্তু কী করবে তুমি এর’মটা যদি হয়? তারই সাজেশন দিতে চেষ্টা করল ১৯ ২০।
পাত্তাই দিল না!
এরকমটা কিন্তু হতেই পারে। তুমি একজনকে মন দিয়ে বসে আছ, সেও যে তোমায় মন দিতে বাধ্য এমন কিন্তু কোত্থাও লেখা নেই। তাই তোমার বন্ধুটিকে মনের কথা জানাতে গেলে এটা ধরে নিয়েই যাও। কাউকে জোর করে তোমার প্রেমে পড়াতে তো আর বাধ্য করা যায় না। সেক্ষেত্রে সে যেটা বলবে, সেটা মেনে নেওয়া ছাড়া কিন্তু কার্যত তোমার কোনও উপায়ই নেই। চেষ্টা করো তার দিক থেকে যুক্তি দিয়ে ব্যাপারটাকে বোঝার। তোমার সেই বন্ধুটি, যার প্রেমে তুমি মজেছ, সে যদি তোমার খুব ভাল বন্ধু হয়, তা হলে তো ভালই, সেও নিশ্চয়ই এমন আজব পরিস্থিতি থেকে তোমাকে বেরতে সাহায্য করবে। কিন্তু… ব্যাপারটা তো প্রেম, জানোই এখানে কোনও যুক্তি-বুদ্ধি খাটে না। তাই বুকে পাথর রেখে পারার চেষ্টাটা কিন্তু তোমাকে করে যেতেই হবে। আর একান্তই যদি না হয়? তা হলে চেষ্টা করো, সেই বন্ধুর সঙ্গে যত কম কথা বলা যায়, ততই তোমার মঙ্গল। সেরকম বুঝলে তার সঙ্গে কথা বন্ধ করে দিতেও পার। প্রথম-প্রথম কষ্ট হলেও পরে অভ্যেস হয়ে যাবে। কারণ, একতরফা প্রেম আর বন্ধুত্ব— দুটো কিন্তু একসঙ্গে চালানো খুব কঠিন। ম্যানেজ করাও যায় না। কারণ, সে তোমার যত ভাল বন্ধুই হোক না কেন, একবার প্রেমে পড়েছ যার, অন্য কারও সঙ্গে তার সম্পর্ক, ঘনিষ্ঠতা কিন্তু মেনে নেওয়া চাপের।
দর্দ-এ-দিল
হুঁ-হুঁ, বলা তো সহজ, কিন্তু জানি করাটা বেশ কঠিনই। প্রত্যাখ্যান নিতে সবাই পারে না, এটা তো মানছি। কিন্তু প্রত্যাখ্যানই যদি শেষমেশ তোমাকে মেনে নিতে হয়, তা হলে? মন ভাঙবে, সেটা অনিবার্য। কিন্তু মন ভাঙার পর মুড অফ করে বসে থাকার কিন্তু কোনও মানে হয় না! নিজের যেটা ভাল লাগে সেটাই করো, হতে পারে সেটা কোনও পাগলামি, কিন্তু কে কী ভাববে, সেটা না ভেবে করো। যে-সব বন্ধুদের সঙ্গে থাকলে প্রাণ খুলে আড্ডা দিতে পারো, তাদের সঙ্গে হ্যাংআউটে বেরোও, সিনেমা দেখার প্ল্যান করতে পারো। নাহ, জোর করে ভাবনা মাথা থেকে তাড়াতে বলার মতো বাজে আমরা নই, কিন্তু অন্য কাজ করতে-করতে দেখবে প্রেম-প্রেম ভাব আর তার দুঃখটা খানিক হলেও কম চাগাড় দেবে।
প্রশ্ন-উত্তর
প্রেম মানে কিন্তু আদতে কিছু প্রশ্নের উত্তর পাওয়া। আর প্রেম জিনিসটা কিন্তু মোটেও সোজাসাপটা জিনিস নয়। এমনও হতে পারে, তুমি যাকে প্রেম বলে ভাবছ, সেটা আদতে প্রেমই না! নিছকই অবসেশন বা অন্য কিছু! তাই কারও প্রতি সেরকম কিছু মনে হলে আগে নিজেকেই নিজের মনে প্রশ্ন করো। মানছি প্রেম যুক্তি মানে না, কিন্তু তাও তোমাকে কিছু যুক্তি তো মানতেই হবে। ব্যাপারটা তুমি তাকে জানানোর পর কী-কী হতে পারে, সেটাও ভেবে নাও আগে থেকে। নিজের মনেই প্রশ্নের উত্তর সাজাতে-সাজাতে হয়তো দেখলে যেটাকে প্রেম বলে ভাবছ, সেটা আদৌ প্রেম নয়! তা হলে ব্যাপারটা ওখানেই মিটে যাবে।
চাপবে, নাকি…
সবচেয়ে ভাল হয়, প্রেমে পড়ার পর যদি দেখো, যার প্রেমে পড়েছ, তাকে তোমার মনে কথাটা বললে বিষয়টা আরও জটিল হয়ে যাবে, তা হলে সেটা স্রেফ নিজের মধ্যে চেপে যাওয়াই শ্রেয়। কষ্ট হবে খুবই, কিন্তু জানিয়ে ব্যাপারটা খিচুড়ি পাকিয়ে ছড়ানোর থেকে একা-একা ছড়ানো কিন্তু বেশি ভাল। তার সঙ্গে কথাবার্তাও চালিয়ে যাও, টুকটাক হিন্টস দিতে থাকো (যতক্ষণ না জিনিসটা বিপদের শেষ সীমা পার করে না যাচ্ছে)। কে বলতে পারে, সেও আস্তে-আস্তে তোমার প্রেমে মজে গেল!
আর যদি তা না হয়? তা হলে তো জানোই কিং খানের বিখ্যাত সেই সংলাপ, ‘‘এক তরফা পেয়ার কী তাকত হি কুছ অউর হোতি হ্যায়, অওর রিশতোঁ কি তরহা দো লোগো মে নেহি বটতি। সির্ফ মেরা হক হ্যায় ইসপে…’’
টিনএজার টিপস : ইন্সট্যান্ট গ্লো পেতে কাজে লাগাও পেঁপের ফেসপ্যাক