Monday, December 23
Shadow

ফুটবল খেলতে থাকতে হবে ফিটনেস, করাতে হবে চেকাপ

ভক্তদের অপেক্ষার প্রহর ফুরাল। কাতারের মাঠে শুরু হতে যাচ্ছে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’। এই একটি খেলাই অনুপ্রেরণা জোগায় লাখ লাখ ফুটবলপ্রেমীর মনে। তারাও হতে চান মেসি-নেইমার। কিন্তু ফুটবলার হওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। এর জন্য থাকা চাই দারুণ ফিটনেস। যাতে সামান্য ঘাটতি থাকলেও দেখা দিতে পারে মারাত্মক বিপদ।

footballer fitness

সাম্প্রতিক সময়ে মাঠেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন ছয় ফুটবলার। গত বছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে চার ফুটবলারের হার্ট অ্যাটাকের খবর পাওয়া গেছে। চলতি বছরে মাঠেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন আরও দুজন। শুধু এই মরণঘাতী রোগের জন্য আগুয়েরো-এরিকসেনের মতো ফুটবলারদের ক্যারিয়ার হয়ে গেছে সংক্ষিপ্ত। তাই প্রশ্ন উঠেছে, ফুটবল মাঠে কেন বাড়ছে হৃদরোগ?

গত বছর হার্ট অ্যাটাকে মারা যান ২৩ বছর বয়সী ক্রোয়েশিয়ান ফুটবলার মারিন চাচিচ। মিশরের তৃতীয় বিভাগ দলের গোলকিপার আহমেদ আমিন অনুশীলনে অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নিয়েও বাঁচানো যায়নি তাকে। দুই দিন পর আসে ৩০ বছর বয়সী আলজেরিয়ান ফুটবলার সোফিয়ান লুকারের মৃত্যুসংবাদ।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে সেই তালিকায় যোগ হয় আলফি নানের নাম। সর্বশেষ গ্রিসের তৃতীয় বিভাগের দল লিউপুলির মিডফিল্ডার আলেকসান্দ্রোস লাম্পিস পাড়িও জমান না ফেরার দেশে। এরমিওনিদার বিপক্ষে ম্যাচের ৫ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান লাম্পিস।

এর আগে ইউরোতে খেলা চলাকালীন হার্ট অ্যাটাকের শিকার হন ডেনিশ ফুটবলার এরিকসেন। যথা সময়ে চিকিৎসার কারণে সে যাত্রা বেঁচে ফেরেন এই ফুটবলার। একই সমস্যার কারণে বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার সার্জিও আগুয়েরো অবসর নেন ফুটবল থেকে।

ঘটনাগুলোকে নেহায়েত কাকতালীয় বলেছে ইনস্টিটিউট অব স্পোর্টসের এক্সারসাইজ অ্যান্ড হেলথের কার্ডিওলজি বিভাগের গবেষক গুইদো পিয়েলেস। ফুটবলারদের হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার যৌক্তিক কারণ পাননি তিনি।

স্পোর্টস মেইলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রফেসর পিয়েলেস বলেছেন, এ মুহূর্তে এটাকে কাকতালীয়ই বলব। অ্যাথলেটদের মধ্যে ফুটবলাররাই কেবল কঠোর অনুশীলন করে না, সাইক্লিস্ট ও দৌড়বিদরাও করে। ফুটবলের গতি বেড়েছে যেমন সত্য, তেমনি ফিটনেস ধরে রাখার সচেতনতাও বেড়েছে।

তবে ফুটবলারদের নিয়মিত হৃদযন্ত্রের পরীক্ষায় জোর দিয়েছেন পিয়েলেস। বলেছেন, ১৬ বছর বয়সী ফুটবলারদের হৃদযন্ত্রের পরীক্ষা করানো উচিত বেশি। কারণ, এই বয়সী ফুটবলারদেরই এমন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।

হৃৎস্পন্দন পরীক্ষায় ফুটবলারদের বছরে একবার ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রামের কথাও বলেন তিনি।

 

খাদ্যাভ্যাস জরুরি

ফুটবলারদের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘ফুটবলাররা যখন অনুশীলন করেন, খেলেন তখন তারা অল্পতেই হাঁপিয়ে যান। তাদের রিকভারি হচ্ছে কিনা সেটা নিশ্চিত করতে হয়। খেলা চালিয়ে যেতে পারবে কিনা সে পরীক্ষাও করাতে হয় দ্রুত।’

অনুশীলনে তারা যে চাপের মধ্যে থাকে এবং শরীর থেকে যে পরিমাণ ঘাম ঝরে সেটাও মেরামত করতে হয়। তখন তাদের দেওয়া হয় পুষ্টির পানীয়।

আমাদের দেশে ভাতসহ দেশীয় খাবারগুলো কি সেই প্রোটিন বা পুষ্টি দিতে পারছে? এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা গেল, বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো খেলোয়াড়দের দরকারি পুষ্টি ও প্রোটিন দিতে পারে না।

ম্যাচ শেষে খেলোয়াড়দের পেশি ইনজুরির রিকভারিও দেশের প্রচলিত খাবারে হয় না। এর জন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শক্রমেই খাবারের মেন্যু পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা আছে।

ফিটনেস লেভেল কী পর্যায়ে আছে তা জানার জন্য জাতীয় ফুটবলারদের এখন জিপিএস প্রযুক্তির আওতায় আনা হয়েছে। এ জন্য শরীরে লাগাতে হয় ট্রেকার। এর মাধ্যমে তাদের গতি, স্ট্যামিনাসহ ফিটনেসের যাবতীয় পরিসংখ্যান পাওয়া সম্ভব।

 

জাতীয় ফুটবলারদের পাতে ভাত নেই

সম্প্রতি গণমাধ্যমের খবরে জানা গেল, আমাদের জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের পাতে এখন ভাত নিষিদ্ধ। ফিটনেস কোচ আইভান রাজলোক বলেন, ‘ইউরোপের যে কোনো ফুটবলারের ক্ষেত্রে এটা মানা হয়। সবার খাদ্যের মেনু সেট করা আছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!