মেয়েদের মুখের বাড়তি লোম : সমস্যা দূর করার উপায় - Mati News
Friday, December 5

মেয়েদের মুখের বাড়তি লোম : সমস্যা দূর করার উপায়

সমস্যাটা মূলত নারীদের। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলে হারসুটিজম। ১৫-৪৫ বছর বয়সী নারীদের ১০ শতাংশ এতে আক্রান্ত হতে পারেন। হরমোনজনিত সমস্যার কারণে এতে ঠোঁটের ওপর ও থুতনিতে, বুকে, পিঠে, পেটে ও ঊরুতে এবং মেয়েদের মুখের বাড়তি লোম গজাতে পারে।

নারীদের সাধারণত যেখানে লোম থাকার কথা নয়, সেখানে এটি দেখা গেলেই বুঝতে হবে হারসুটিজম হয়েছে।

উচ্চমাত্রায় এন্ড্রোজেন হরমোনই এর কারণ।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও কিছু লক্ষণ প্রকাশ পেতে থাকে।

এর মধ্যে রয়েছে—গভীর কণ্ঠস্বর, মাথায় টাক পড়া, ব্রণ হওয়া, স্তনের আকার ছোট হওয়া, পেশির ভর বেড়ে যাওয়া প্রভৃতি।

যেসব কারণে মেয়েদের মেয়েদের মুখের বাড়তি লোম হয়

পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম : বয়ঃসন্ধিকালে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। ওই সময় দেখা দিতে পারে যৌন হরমোনের ভারসাম্যহীনতা। কয়েক বছরের মধ্যে এ পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমের কারণেই বাড়তি লোম গজানো, অনিয়মিত মাসিক, স্থূলতা, বন্ধ্যত্ব এবং কখনো ডিম্বাশয়ে একাধিক সিস্ট হতে পারে।

কাশিং সিনড্রোম : এটি ঘটে যখন শরীর হরমোন কর্টিসলের উচ্চমাত্রার সংস্পর্শে আসে। অ্যাড্রিনাল গ্রন্থিগুলো বেশি পরিমাণে কর্টিসল হরমোন তৈরি করলে বা দীর্ঘসময় ধরে প্রিডনিসোনের মতো ওষুধ সেবনের ফলেও হতে পারে।

জন্মগত অ্যাড্রিনাল হাইপারল্যাপসিয়া : এটি জন্মগত। এর ফলে অস্বাভাবিক মাত্রায় স্টেরয়েড হরমোন তৈরি হতে থাকে (কর্টিসল ও এন্ড্রোজেন)।

টিউমার : এটি বিরল কারণ। তবে অনেক সময় ডিম্বাশয় বা অ্যাড্রিনাল গ্রন্থিতে থাকা কোনো টিউমার থেকে এন্ড্রোজেন ক্ষরিত হতে থাকলেও হারসুটিজম দেখা দিতে পারে।

মিনোক্সিডিল (চুল পড়া রোধে ব্যবহৃত), ড্যানাজল, এন্ড্রোজেল, টেসস্টিম—এ জাতীয় কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াতেও অনেক সময় এ সমস্যা দেখা দেয়।

হারসুটিজমের বড় জটিলতা হলো মানসিক পীড়া। এতে অনেকেই বিষণ্নতায় আক্রান্ত হন। এ ছাড়া যদিও হারসুটিজম শারীরিক জটিলতা সৃষ্টি করে না, তবে এর কারণ হিসেবে শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা থেকে যেতে পারে।

আবার এর সঙ্গে অনিয়মিত পিরিয়ড থাকে তবে সে ক্ষেত্রে পলিসিস্টিক ডিম্বাশয় সিন্ড্রোম থাকতে পারে, যা বন্ধ্যত্ব ডেকে আনতে পারে।

মেয়েদের মুখের বাড়তি লোম এর চিকিৎসা

  • সাধারণত এটি প্রতিরোধের কোনো উপায় নেই। তবে প্রভাব কমানোর ক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন পদ্ধতির পরিবর্তন আনা যেতে পারে।
  • প্রথমেই বাড়তি ওজন কমাতে হবে।
  • উচ্চ ক্যালরিযুক্ত, উচ্চ শর্করাযুক্ত তৈলাক্ত খাবার খাওয়া যাবে না।
  • সেইসঙ্গে ফলমূল, মাছ-মাংস, দুধ, ডিম পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে হবে।
  • অনেক সময় বাড়তি লোম কমাতে মেটফরমিন ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। এটি মূলত ডায়াবেটিসের ওষুধ।
  • এ ছাড়া অ্যান্টি এন্ড্রোজেন বা জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়িও ব্যবহার করা হয়। তবে কোনোটাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া সেবন করা যাবে না।
  • মুখের অবাঞ্ছিত লোম দূর করার জন্য আজকাল কিছু ক্রিম বা লেজার পদ্ধতিও ব্যবহৃত হয়।

তথ্যসূত্র : মায়োক্লিনিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *