Monday, December 23
Shadow

কক্সবাজারে ঘুরতে যাওয়ার জায়গা | কক্সবাজারে আরও যা দেখার আছে

কক্সবাজার শহর ১২০ ‌কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। এর সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমুদ্রসৈকত। তবে কক্সবাজারে ঘুরতে যাওয়ার জায়গা কিন্তু আরও আছে। এখানে আছে বাংলাদেশের বৃহত্তম মৎস্য বন্দর ও সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন।

কক্স‌বাজারের প্রাচীন নাম ছিল‌ পানোয়া। এর অর্থ হলো হলুদ ফুল। এখানে বিভিন্ন নৃগোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করে।

প্রতিবছর মূলত সৈকতে সমুদ্রস্নান করতেই লাখ লাখ পর্যটক ছোটে কক্সবাজারে। তবে সৈকত ছাড়াও এখানে উপভোগ করার মতো আরও অনেক কিছু।

 

কক্সবাজারে ঘুরতে যাওয়ার জায়গা

হিমছড়ি

হিমছড়ি কক্সবাজারের ১৮ কিলোমিটার দক্ষিণে। হিমছড়িতে একটি বড় উদ্যানও ও আছে। এর প্রধান আকর্ষণ হলো ঝরনা। পাহাড়ি সৌন্দর্যও কম নয়।হিমছড়ি জাতীয় উদ্যান পাখিপ্রেমীদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ। এখানে দেখা যাবে দেশি নানা প্রজাতির পাখি- ময়না, ফিঙ্গে ও তালবাতাসি। আছে বানর ও মায়া হরিণও।

 

পেঁচার দ্বীপ

হিমছড়ি যাওয়ার রাস্তায় ৭-৮ কিলোমিটারের মধ্যেই পড়বে রেজুখাল ব্রিজ। ওটার বামে মংলাপাড়া ধরে কিছুটা এগোলেই মিলবে পাহাড়ি একটি নিভৃত এলাকা। পাহাড়ের ওপর উঠে দেখা যাবে একপাশে সবুজ বন অন্য পাশে সাগর। দিনে দিনে ঘুরে মন ভালো করে আসার মতো একটি জায়গা এই পেঁচার দ্বীপ।

 

সুগন্ধার খাবার দোকান

সি-বিচ তো আছেই। তবে সুগন্ধার সারবেঁধে থাকা খাবারের দোকানগুলো কক্সবাজারে ঘুরতে যাওয়ার জায়গা গুলোর মধ্যে অন্যতম। পর্যটকদের কাছে আরেক আকর্ষণ। শুঁটকির বড় বড় দোকানও পাবেন এখানে। তবে কিনতে হবে দেখেশুনে।

মাছের মধ্যে পাবেন লাল কোরাল, অক্টোপাস, কাঁকড়া, চিংড়ি, লবস্টার, রূপচাঁদা ও টুনা। ফ্রাই কিংবা কাবাব দুভাবেই খেতে পারবেন।

 

ইনানী সি বিচ

কক্সবাজার থেকে ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে যেতে হবে। এখানকার পরিষ্কার পানি লাল রঙের কাঁকড়াই পর্যটকদের আকর্ষণ করে বেশি।

 

লাবনী সি বীচ

বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরাতন সি বিচ হলো লাবনী সি বীচ। লাবনী বিচকে প্রধান সমুদ্র সৈকত বলে বিবেচিত করা হয়। কাছাকাছি বলে হেঁটে অথবা রিকশা দিয়ে যাওয়া যায়। পর্যটকদের আকর্ষণ করে গড়ে উঠেছে ছোট বড় দোকান । বেশিরভাগ সমুদ্রের ঝিনুকের  গহনাগুলো খুব সুন্দর করে তৈরি করে বিক্রি হয়। কক্সবাজারে ঘুরতে যাওয়ার জায়গা গুলোর মধ্যে এটিই সবচেয়ে জনপ্রিয় সৈকত।

 

কলাতলী সি বীচ

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের মূল একটি পয়েন্ট হলো কলাতলী সি বীচ। কক্সবাজারে ঘুরতে যাওয়ার জায়গা এর তালিকা করতে গেলে এর নাম আসবে সবার আগে। কারণ বাসগুলো সব থামেই এর পাশে। আর খাওয়ার জন্য ভালোমানের হোটেল রেস্তরাঁগুলোও সব এখানে। কলাতলী সি বীচ ডলফিনের মোড়ে অবস্থিত। এর আশপাশে অনেক হোটেল রেস্তোরাঁ আছে ‌‌।

কলাতলী সি বীচ পর্যটকদের জন্য আরোও একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। এখানে নানা‌ ধরনের খাবারের দোকান আছে।সব বয়সের মানুষের জন্য একটি উত্তম জায়গা কলাতলী সি বীচ।

 

টেকনাফ সমুদ্র সৈকত

কক্সবাজারে টেকনাফ উপজেলায় টেকনাফ সমুদ্র সৈকত অবস্থিত। কক্সবাজারের থেকে এর কয়েকটি ভিন্নতা আছে।

গাছপালার সবুজের সমারোহ এই সি বিচের প্রধান ভূমিকা। তা সবাইকে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে।

 

 

মেরিন রোড

কক্সবাজার কলাতলী বিচ থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত সড়কটির নাম হচ্ছে মেরিন ড্রাইভ রোড।এর মোট বিস্তৃতি ৮০ কিলোমিটারের মতো।

কোলাহল মুক্ত, খোলা আকাশের ও সমুদ্রের ঢেউ প্রভৃতি সৌন্দর্য যে কারো মনে দোলা দিতে পারে।

এর রোডের পাশে সবুজ পাহাড়ের সমারোহ,নীল জলরাশির ঢেউ যেখানে প্রাণ খুলে নিঃশ্বাস নেওয়া যায়।

নারিকেল গাছ, সুপারি গাছ ও ঝাউবিথী গাছ যেনো মাথা উঁচু করে সড়ক পাহারা দিচ্ছে যেন মনে হয়। তাছাড়া নানা ফলের গাছ ও রয়েছে

 

 

সেন্টমার্টিন দ্বীপ

সেন্টমার্টিন দ্বীপ একটি প্রবাল দ্বীপ। বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের বঙ্গোপসাগরের উত্তর পূর্বাংশে অবস্থিত সেন্টমার্টিন দ্বীপ।নাফ নদীর মোহনায় অবস্থিত। দক্ষিণের স্বর্গ নামেও খ্যাত এই দ্বীপ।

সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্রচুর পরিমাণে নারিকেল পাওয়া যায় বলে, স্থানীয়ভাবে একে নারিকেল জিঞ্জিরা বলে।

তাছাড়া অন্যান্য ফলের গাছের দ্বারাও এই সমৃদ্ধ।খেয়া গাছ সেন্টমার্টিন দ্বীপের ঐতিহ্যবাহী গাছ।কেওড়া গাছে ভরপুর এই দ্বীপ। তাছাড়া আছে শিমুল,আম, সুপারি,বাবলা,কড়ই ইত্যাদি।

প্রাণীদের মধ্যে কাঁকড়া, পরী মাছ, প্রজাপতি মাছ, রাঙ্গা কই, উডুক্কু মাছ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

কয়েকটি ক্ষুদ্র দ্বীপ আছে যাদের ছেঁড়া দ্বীপ বলে। মানচিত্রে দক্ষিণের সবশেষ বিন্দু। দক্ষিণের দিকে পরে বাংলাদেশের আর কোন ভূখণ্ড নেই।

পর্যটকদের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান হচ্ছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ। প্রতিবছর মৌসুমে লাখ লাখ মানুষ এখানে ঘুরতে আসে। স্নিগ্ধ বাতাস ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনাকে বারংবার টেনে নিয়ে যাবে।

 

রামু বৌদ্ধ বিহার মন্দির

কক্সবাজারে ঘুরতে যাওয়ার জায়গা গুলোর মধ্যে রামু অন্যতম। বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার একটি উপজেলা হচ্ছে রামু। এই ঐতিহ্যবাহী বৌদ্ধ রামুতে রয়েছে অসংখ্য প্রাচীন ঐতিহাসিক নিদর্শন। রামুতে প্রায় ৩৫টি বৌদ্ধ মন্দির বা ক্যাং দাদি রয়েছে।

উত্তর মিঠাছড়ির পাহাড়ের চূড়ায় ১০০ ফুট লম্বা গৌতম বুদ্ধের সিংহশয্যা মূর্ত দেখে যে কারো নজর কাড়ে।

দক্ষিণের কিছুটা দূরে লালচিং ও সাদাচিং বৌদ্ধ বিহার যা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়।

প্রাচীনকাল থেকেই ঐতিহ্যবাহী ও গৌরবময় স্বাক্ষর বহন করে আসছে। প্রত্নতাত্ত্বিক এই বিহার নিদর্শনের জন্যে প্রতিবছর পর্যটকদের ভিড় উল্লেখযোগ্য। রামকোট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহার, চৌমুহনী স্টেশন তিন কিলোমিটার দক্ষিণে রাজার কুল এলাকায় পাহাড় চূড়ায় অবস্থিত।

এ ছাড়া কুতুবদিয়া দ্বীপ, মহেশখালী দ্বীপ, সোনাদিয়া দ্বীপ, লাইট হাউস, বদরমোকাম, প্রাকৃতিক বীক্ষণ কেন্দ্র, ডুলাহাজরা সাফারি পার্ক আরো অনেক দর্শনীয় স্থান আছে কক্সবাজার জেলায়।

 

কক্সবাজারে ঘুরতে যাওয়ার জায়গা নিয়ে লিখেছেন ইসরাত জাহান স্বর্ণা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Please disable your adblocker or whitelist this site!