ঐতিহ্যবাহী ওষুধে আগ্রহ বাড়ছে চীনের জেন-জি’র - Mati News
Friday, December 5

ঐতিহ্যবাহী ওষুধে আগ্রহ বাড়ছে চীনের জেন-জি’র

চীনের কানসু প্রদেশের বাইয়িন শহরের ওয়েনশাং পার্কে রাতের বেলায় জমে ওঠে ভ্রাম্যমাণ ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসা কেন্দ্র। কাপিং ও পালস রিডিং বুথগুলোর আশপাশে ছড়িয়ে থাকে অ্যাস্ট্রাগুলাস ও অ্যাঞ্জেলিকাসহ আরও অনেক ভেষজের ঘ্রাণ। আর এসব ঘ্রাণের টানেই যেন হাজার বছরের প্রাচীন এ চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোর কাছে এখন ভিড় করছে চীনের ১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সী ওরফে জেন-জি’রা।

‘গরম পড়লেই আমার ক্লান্তি লাগে, ঘুম ঘুম ভাব চলে আসে।’ জানালেন ২১ বছর বয়সী ইউ হুইয়ান। তিনি তার নাড়ি পরীক্ষা করাতে বাড়িয়ে আছেন কবজি। আগের টিসিএম চিকিৎসায় ভালো ফল পাওয়ায় এবার এসেছেন রাতের ভেষজ প্রতিকারের বাজারে।

জিহ্বা ও নাড়ি পরীক্ষার পর টিসিএম ডাক্তার তার ক্লান্তির লক্ষণ দেখেন, এরপর শক্তি বৃদ্ধি ও ম্যাজম্যাজে ভাব দূর করার পাশাপাশি হজমে সহায়তার জন্য টিসিএম ভেষজের কিছু মিশ্রণ লিখে দেন।

ইউ বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় তিনি ও তার অনেক সহপাঠী টিসিএমের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন। এমনকি কলেজের পড়াশোনায়ও টিসিএম তার ঐচ্ছিক বিষয়। যে কারণে এ বিষয়ে ক্যারিয়ার গড়ার আগ্রহও আছে তার। বললেন, ‘আমি নিজের ও আশপাশের লোকেদের যত্ন নেওয়ার জন্য ঐতিহ্যবাহী প্রতিকার এবং উপযুক্ত কৌশল ব্যবহার শিখতে চাই।’

টিসিএম নাইট মার্কেটে আকুপাংচার, কাপিং, ফুট বাথ, ম্যাসাজ এবং কানের বীজের মতো ঐতিহ্যবাহী থেরাপিগুলো এখন চীনা তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় হচ্ছে বেশি।

বাইয়িন ফার্স্ট পিপলস হাসপাতালে এক দশকেরও বেশি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একজন টিসিএম চিকিৎসক হান লং। শরীরের রহস্য বোঝার চাবিকাঠি হিসেবে তিনি তুলে ধরেছেন হুয়াংতি নেইচিংসহ জ্বর ও নানা রোগের ওপর লেখা প্রাচীন গ্রন্থ এবং মেটেরিয়া মেডিকার মতো ঐতিহ্যবাহী সংকলন।

জুলাইয়ের প্রথম দিকে চালুর পর থেকে ওয়ানশেং পার্ক একটি সুস্থতার কেন্দ্রে রূপান্তরিত হয়েছে। এখানে ৩০ টিরও বেশি স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসাকর্মীরা বিনামূল্যে পরামর্শ দিচ্ছেন এবং টিসিএম সুস্থতার টিপস জানাচ্ছেন।

বাইয়িনের জেলা স্বাস্থ্য ব্যুরোর প্রধান এবং টিসিএম রাতের বাজারের সংগঠক চু তংমেই বলেন, ‘প্রতিদিন দুই হাজারেরও বেশি মানুষ এখানে আসেন। এখানকার তরুণরা নাড়ির রোগ নির্ণয় থেকে শুরু করে সুগন্ধি থলি এবং ভেষজ চা’র জন্য লাইনে দাঁড়ান।

কানসুর এ প্রাণবন্ত টিসিএম রাতের বাজার একটি উদাহরণ মাত্র। চীনজুড়েই এখন এমন বাজারে বাড়ছে ভিড়।

উত্তর-পূর্বের লিয়াওনিং প্রদেশের রাজধানী শেনইয়াংয়েও রাতের টিসিএম বাজারে দেওয়া হয় বিনামূল্যে পরামর্শ। সেইসঙ্গে এতে টিসিএম-অনুপ্রাণিত সাংস্কৃতিক পণ্য, হাতে-কলমে কৌশল এবং যুব কার্যকলাপের জন্য আলাদা জোনও রয়েছে।

চিয়াংসির নানচাং শহরে টিসিএম রাতের বাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে প্রযুক্তি। সেখানে রোবটগুলো হিট-সেনসিটিভ মক্সিবাশন, ডিজিটাল পালস ডায়াগনসিস এবং থ্রিডি ফুট স্ক্যান সেবা দিচ্ছে।

টিসিএম-এর এই রাতের বাজারগুলো একদিকে যেমন চীনের নতুন প্রজন্মকে  স্পটলাইটে আসতে সাহায্য করছে, তেমনি বৃত্তের বাইরে গিয়ে প্রসারিত করছে টিসিএমের পরিসর।

সূত্র: সিএমজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *